১০০০ এতিমকে খাওয়াবে স্টার কাবাব, তবেই মিলবে ক্ষমা
রাজধানীর বনানীতে জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট স্টার কাবাবে কাচ্চি বিরিয়ানির সঙ্গে পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত টিক্কা পরিবেশনের প্রতিবাদ করে সম্প্রতি মারধরের শিকার হন সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক নামে এক সাংবাদিক। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন স্টার কাবাব অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের সিইও এস এম মনিরুজ্জামান। কিন্তু ক্ষমার জন্য শর্ত আরোপ করেন ওই সাংবাদিক। শর্ত দেন, ক্ষমাস্বরূপ ১ হাজার এতিমকে একবেলা খাবার খাওয়াতে হবে।
সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলকের এ শর্ত মেনে নিয়ে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) একটি প্রতিশ্রুতিনামা প্রকাশ করেছে স্টার কাবাব কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, গ্রাহক সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলককে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যয় ও ক্ষতিপূরণ দিতে চাইলে তিনি ক্ষমার শর্তস্বরূপ ১ হাজার এতিমকে একবেলা বিনামূল্যে খাবার খাওয়াতে বলেন স্টার কাবাব অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষকে। সে অনুযায়ী আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ১ হাজার এতিমকে একবেলা উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।
এর আগে, স্টার কাবাবের ফেসবুক পেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে তারা। একইসঙ্গে পুনরায় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটানোর প্রতিশ্রুতিও দেয় রেস্টুরেন্টটি।
বিবৃতিতে তারা জানায়, রোববার (৬ অক্টোবর) বিকেলে আমাদের বনানী স্টার কাবাবে একজন সম্মানিত কাস্টমারের (গ্রাহক) সঙ্গে একজন কর্মচারীর ভুল বোঝাবোঝি হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত অনভিপ্রেত ঘটনার জন্য আমরা অত্যন্ত দুঃখিত ও লজ্জিত। সেইসঙ্গে আমরা আমাদের এই সম্মানিত কাস্টমারের কাছে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তির আওতায় নিয়ে এসে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত রোববার দুপুরে বনানীর স্টার কাবাবে কাচ্চি বিরিয়ানির সঙ্গে পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত টিক্কা দেওয়ায় প্রতিবাদ করায় সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলককে মারধর করে হোটেলটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে তার ডান হাত ও ডান পা ভেঙে যায়, কপাল ও মাথা ফেটে রক্তাক্ত হন তিনি। আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
সাংবাদিক অলকের রক্তাক্ত একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয় ওই দিনই। এতে তাকে বলতে শোনা যায়, দুপুরে তিনি ও তার এক বন্ধু খাবার গন্ধ হওয়ার অভিযোগ করলে স্টার কাবাবের ম্যানেজার বলেন, জীবনে টিক্কা খাননি আপনি। এটা এমনই হয়। এ কথা শুনে তিনি প্রতিবাদ করলে আরও তিনজন গ্রাহকও একই অভিযোগ করেন। এতে ম্যানেজার কলিংবেল চেপে সব স্টাফকে জড়ো করেন এবং স্টাফরা অলককে ধাক্কা দিতে দিতে দোতলা থেকে নিচ তলায় নামান এবং নিচ তলায় সিঁড়ির নিচে ফেলে মারধর করেন। স্টার কাবাবের ১৪ থেকে ১৫ জন এ হামলায় অংশ নেন।
এ ঘটনায় ওইদিনই মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক সালেহ মোহাম্মদ রশিদ অলক। পরে ঘটনায় জড়িত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সারোয়ার তখন জানান, স্টার কাবাবে সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক নামে এক ব্যক্তির ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। ইতোমধ্যে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫ জনের নামে মামলা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে আরও কেউ জড়িত থাকলে, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
আরটিভি/এসএইচএম-টি
মন্তব্য করুন