একমাত্র চলাচলের বাঁশের সাঁকোটিও ভেসে গেল পাহাড়ি ঢলে
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে নির্মাণের দুই বছরেই ধসে গেছে একটি সেতু। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে এমন হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে এলাকাবাসীর। সেতুটি ধসে যাওয়ায় এর উপর নির্মিত চলাচলের জন্য একমাত্র বাঁশের সাঁকোটিও ভেসে গেছে পাহাড়ি ঢলে। এতে করে ১৫ গ্রামের মানুষ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১১-১২ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের কালীবাড়ি থেকে বানিয়াপাড়া হয়ে কুড়ালিয়াকান্দা রাস্তায় আলকাছের বাড়ির কাছে খালের ওপর ২১ লাখ ২০ হাজার ৮১৮ টাকা ব্যয়ে ৩৩ ফুট দীর্ঘ একটি আরসিসি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি নির্মাণ করে ঝিনাইগাতী উপজেলার রামেরকুড়া গ্রামের মেসার্স আলবেরুনী কনস্ট্রাকশন। এর মালিক মো. জয়নাল আবেদীন। নির্মাণের দুই বছর না যেতেই সেতুটির মাঝখানে দেবে গিয়ে ধসে পড়ে সম্পূর্ণরূপে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এরপর থেকে এলাকাবাসী চাঁদা তুলে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে প্রতিবছর বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করে আসছে।
প্রতিদিনই কয়েক গ্রামের প্রায় চার হাজার জনগণ এ সাঁকোর ওপর দিয়ে চলতে গিয়ে দুর্ঘটনাসহ চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। গত ১২ জুলাই রোববার আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে চলাচলের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটিও ভেসে গেলে কার্যত মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের সাথে শেরপুর সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে করে গ্রামবাসীর যাতায়াতে এবং উৎপাদিত কৃষিপণ্য, গবাদি পশু, পোল্ট্রি খামারের ডিম ও মুরগী বাজারজাতকরণে চরম বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।
ঘোনাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আলকাছ আলী ও শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, এ রাস্তায় প্রায় প্রতিদিন কয়েক হাজার লোকের চলাচল রয়েছে। কিন্তু প্রতিবছর পাহাড়ি ঢল এলেই বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যায়। তখন জেলা শহরসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে যাতায়াতের আর কোনও উপায় থাকে না। মূলত আমরা এলাকাবাসী তখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। এতে গ্রামবাসীর সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বানিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ, মো.মাসুদ মিয়া, রফিকুল ইসলাম, মো. মজনু মিয়া, ইদ্রিস আলী বলেন, ২০১১-১২ অর্থবছরে নির্মিত ব্রিজটিতে খুবই নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করায় ব্রিজটি এক বছর পরেই ধসে পড়ে। এতে এলাকাবাসী ব্রিজের সুফল ভোগ করতে পারেনি। বরং দুর্ভোগ বেড়েছে সীমাহীন। তাই এখানে কমপক্ষে ৭০ থেকে ৮০ ফুট দৈর্ঘ্যের ব্রিজ নির্মাণ করে দেয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা। শুধু তাই নয়, তারা রাস্তা প্রসস্থ ও উঁচু করার দাবীও জানিয়েছেন।
ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইম আরটিভি নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত রয়েছি। খুব দ্রুতই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা জরুরি ভিত্তিতে চালু করতে এবং ওইখানে একটি স্থায়ীভাবে সেতু নির্মাণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসএস
মন্তব্য করুন