নিম্নমানের খাবার দেয়ায় প্রতিদিনই মরছে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের হাঁস-মুরগি (ভিডিও)
ব্যাপক অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে ভোলাসহ উপকূলীয় সাত জেলার ১৬ উপজেলায় প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পে বিতরণ করা হাঁস, মুরগি, ভেড়াগুলো মারা যাচ্ছে। অবস্থা এমন, স্বাবলম্বী হওয়ার চেয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন চরের দরিদ্র নারীরা। এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভেস্তে যেতে পারে পুরো কার্যক্রম।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে উপকূলীয় চরাঞ্চলের সমন্বিত প্রাণী সম্পদ উন্নয়নে উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়। ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২১ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছরের জন্য বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের সাত জেলার ১৬ উপজেলার ৬৮টি ইউনিয়নে এই কার্যক্রম নেয়া হয়। ২০১৯ সালের শেষ দিকে মাঠ পর্যায়ের কাজ আরম্ভ করলেও শুরুতেই প্রশ্নবিদ্ধ হয় প্রকল্পটি।
চরাঞ্চলের নারী বা সুফল ভোগীদের তালিকা তৈরি করতে প্রতি গ্রামের জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও নিয়োগপ্রাপ্ত স্টাফদের দিয়ে মাত্র ২ হাজার টাকায় কোনো রকমে কাজটি করিয়ে নেয়া হয় হলে জানান স্টাফদের এক জন।
পরে কোনো টেন্ডার আহ্বান না করেই কর্মকর্তারা হঠাৎ করে করোনাকালীন সময়ে পশুদের জন্য নিম্নমানের খাবার বিতরণ এবং অসুস্থ হাঁস, মুরগি, ভেড়া বিতরণ শুরু করেন, যা বাড়ি নেয়ার পরই মরতে থাকে। জনপ্রতি দেয়া হয় ২০টি করে হাঁস, ২০টি করে মুরগি ও ৩টি করে ভেড়া। ৩ মাস পর গিয়ে দেখা যায়, এক এক পরিবারে ৩/৪টির বেশি বেঁচে নেই। তার উপর ৮ হাজার টাকার হাঁস মুরগির জন্য ঘর দেয়ার কথা থাকলেও সবকিছুর করুন চিত্র দেখা যায়।
এসব পশু পালনকারী নারীরা বলেন, তারা (কর্মকর্তা) কোনো ওষুধ দেন নাই। ভালো চিকিৎসা হচ্ছে না। খাবার ভালো ছিল না। প্রতিদিনই কারও না করও হাঁস মুরগি মারা যাচ্ছে।
এছাড়া তিন মাসের মধ্যে মৃতগুলোর বদলে আবারও হাঁস মুরগি দেয়ার কথা থাকলেও এখনো কোনো খবর নেই।
স্থানীয় একজন বলেন, যারা এই নিম্নমানের হাঁস, মুরগির ও ভেড়াগুলো দিয়েছেন সেই সকল কর্মকর্তাদের আমি শাস্তি দাবি করছি।
অভিযোগ উঠে নারীদের স্বাবলম্বী করার নামে ৯২ কোটি টাকার প্রকল্পের বেশির ভাগ টাকাই আত্মসাৎ করা হয়েছে।
দৌলতখানের অনিয়ম তদন্ত কর্মকর্তা ও ইউএনও জিতেন্দ্র নাথ বলেন, আমরা জেনেছি তারা নিম্ন মানের খাবার, পশু এবং ঘর তৈরি করেছেন। বিষয়টি আমরা আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
দৌলতখানের উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা প্রার্থ সারথী দে বলেন, তাদের নাম ঠিকানা আমি ঢাকা পিডি বরাবর চিঠির মাধ্যমে পাঠিয়েছি।
ঘটনার রেশ গড়ায় প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় পর্যন্ত। গঠন করা হয় দুটি তদন্ত কমিটি। বেরিয়ে আসে অর্থ আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
এসএ/এম/এমকে
মন্তব্য করুন