ফেনীতে সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা দ্বন্দ্বে বাবার মৃত্যুর পর মরদেহ দাফনে বাধা দেন সন্তানরা। খবর পেয়ে প্রশাসন ও স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় ১৪ ঘণ্টা পর গতকাল বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বৃদ্ধের মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার উদরাজপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আবু আহমেদ (৯০)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবু আহমেদ দুই বিয়ে করেন। প্রথম সংসারে ৯ সন্তান ও দ্বিতীয় সংসারে তিন সন্তান রেখে তিনি মারা যান। আবু আহাম্মদ মৃত্যুর আগে যাবতীয় সম্পত্তি দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানদের রেজিস্ট্রি করে দেন। এ নিয়ে প্রথম স্ত্রী ও দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে।
মঙ্গলবার রাতে মৃত্যুর পর বুধবার সকালে দাফনের আয়োজন করেন দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানরা। একপর্যায়ে সম্পত্তির হিস্যা নিয়ে কথা তুলে সমাধানের আগ পর্যন্ত দাফনে বাধা দেন প্রথম স্ত্রীর সন্তানরা। বিষয়টি নিয়ে উভয় সংসারের সন্তানদের মাঝে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। একপর্যায়ে প্রথম সংসারের স্ত্রী ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন।
খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। সম্পত্তির হিস্যার বিষয়ে দ্রুত সময়ে মীমাংসা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আবু আহাম্মদের দাফনের ব্যবস্থা করেন।
এ বিষয়ে প্রথম স্ত্রীর ছেলে মো. সোহেল বলেন, বাবাকে জিম্মি করে সৎভাইরা কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট এলাকার ৬২ শতক এবং দাগনভূঞার আমান উল্যাহপুর ও উদরাজপুর গ্রামের ৭২ শতাংশ সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে নেন। আমরা সম্পত্তির ভাগ চাই।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে ইমাম উদ্দিন বলেন, ‘শেষ বয়সে আমরা বাবাকে সেবা-যত্ন করেছি। ওষুধ কিনেছি। বাবা খুশি হয়ে আমাদের নামে জমি লিখে দিয়েছেন।’
থানার অফিসার ইনচার্জ হাসান ইমাম জানান, লাশ দাফনে বাধা দেয়ার বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করি। সম্পত্তির বিষয় নিয়ে পরে সকলকে নিয়ে বৈঠকের মাধ্যমে সামাধান করা হবে।