এবার কুড়িগ্রামে মিলল পাতিহাঁসের কালো ডিম। জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের যুবক ইব্রাহিম আলীর একটি দেশি জাতের পাতিহাঁস পরপর দুদিন দুটি কালো রঙের ডিম দিয়েছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সেই ডিম দেখতে প্রতিদিন তার বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন শত শত দর্শনার্থী।
ইব্রাহিম নারায়ণপুর ইউনিয়নের পরামানিক পাড়ার বাহার আলীর ছেলে। তিনি কুড়িগ্রাম মজিদা কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়িতে থেকে কৃষি কাজ করেন তিনি। ছয় মাস আগে শ্বশুরবাড়ি থেকে পাঁচটি হাঁস উপহার পান তিনি। ছয় মাস প্রতিপালন করার পর গত ২৯ অক্টোবর একটি হাঁস ডিম দেয়। সকালে সেই ডিম দেখে অবাক হন ইব্রাহিম। সাদা ডিমের পরিবর্তে দেখতে পান কালো ডিম। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবেশীরা ওই ডিম দেখতে ছুটে আসেন তার বাড়িতে। পরদিন ৩০ অক্টোবর আবার একই ধরনের আরেকটি কালো ডিম দেয় হাঁসটি। এ খবর চাউর হতেই দূর-দূরান্ত থেকে ডিম দেখতে ছুটে আসেন মানুষ।
ইব্রাহিম জানান, ছয় মাস আগে উপহার পাওয়া পাঁচটি হাঁসই দেশি প্রজাতির। তাদেরকে অতি যত্নে তিনি এবং তার স্ত্রী রেহেনা বেগম প্রতিপালন করছেন। এদের মধ্যে একটি কালো রঙের হাঁস কালো ডিম দিয়েছে।
ইব্রাহিম আরও জানান, তার স্ত্রী অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী। পড়াশোনার তাগিদে বাড়িতে না থাকায় কয়েক দিন থেকে হাঁসগুলোকে তিনি দেখাশোনা করছেন।
তিনি বলেন, শনিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে হাঁসের বাসস্থান খুলে দেই। হাঁসগুলো বের হয়ে গেলে একটি কালো ডিম সেখানে পড়ে থাকতে দেখতে পাই। প্রথমে ডিমটি দেখে অবাক হই এবং ভড়কে যাই। পরে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের ডেকে ডিমটি বের করে আনি। পরদিন ৩০ অক্টোবর রোববার একই ধরনের আরেকটি ডিম পাড়ে। এই খবরে প্রতিবেশী থেকে শুরু করে দূর-দূরান্তের গ্রাম থেকেও মানুষ এক নজর ডিমটি দেখতে আমার বাড়িতে ভিড় করতে থাকে।
তিনি আরও জানান, হাঁসগুলোকে স্বাভাবিক খাবার দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রাকৃতিকভাবেই সেগুলো প্রতিপালন করা হচ্ছে।
ইব্রহিমের বড় ভাই আব্দুল মজিত হাঁসের কালো ডিম দেওয়ার খবর পেয়ে ছুটে আসেন। এ ডিম দেখে অবাক হয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, এর আগে এমন ডিম দেখেননি তিনি। সচারচর হাঁসের সাদা ডিমই হয়।
ইব্রাহিমের শ্বশুর একই গ্রামের জহুরুল ইসলাম জানান, হাঁসের কালো ডিম দেওয়ার বিষয়টি প্রথম দিনেই জামাতার কাছ থেকে জানতে পারি এবং এক নজর দেখতে ছুটে আসি। আসলেই এটি একটি অবাক করা কারবার। জামাই এবং মেয়েকে উপহার হিসেবে পাঁচটি হাঁস দেওয়া হয়েছিল। তারই একটি হাঁস এমন ডিম দিয়েছে।
৭০ বছর বয়সী দর্শনার্থী প্রতিবেশী মোজাহার আলী জানান, এই বয়সে প্রথম হাঁসের কালো ডিম দেওয়া কথা শুনলাম এবং দেখলাম।
ইব্রহিমের ভাবি সাহিদা বেগম জানান, কালো ডিম দেওয়ার পরও হাঁসটি অন্যান্য হাঁসের মতো স্বাভাবিক চলাফেরা করছে।
নাগেশ্বরী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আশিকুজ্জামান বলেন, নারায়ণপুরে পাতিহাঁসের কালো ডিম পাড়ার সংবাদটি পেয়েছি। এটি একটি বিরল ঘটনা। এটা অস্বাভাবিক ব্যাপার।
তিনি জানান, হাঁস যখন ডিম পাড়ে, হাঁসের জরায়ুতে কোনো ইনফেকশন থাকার করণে এমন হতে পারে। এ ছাড়া ডিম তৈরিতে যে পরিমাণ পিগমেন্টের দরকার, তা যদি অনুপোস্থিত থাকে তাহলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে।