বাঁধা অবস্থায় কিশোরীকে উদ্ধার, দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ প্রাক্তন প্রেমিকের বিরুদ্ধে
শরীয়তপুরের ডামুড্যাতে প্রেমের সম্পর্ক ছিন্ন করায় এক কিশোরীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সাবেক প্রেমিক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ঘটনার একদিন পর ওই কিশোরীকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ ও স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই কিশোরীর সঙ্গে আড়াই বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল উপজেলার ছোট সিধলকুড়া এলাকার খোদা বক্স প্যাদার ছেলে ও গোসাইরহাট সরকারি শামসুর রহমান কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিয়াম প্যাদার (১৯) সঙ্গে। সম্প্রতি তাদের প্রেমের সম্পর্কের টানাপোড়ন হলে অন্তত ২০ দিন আগে সম্পর্ক ছিন্ন করে ওই কিশোরী। এরপর থেকেই তার ওপর ক্ষিপ্ত হয় প্রেমিক সিয়াম।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) ওই কিশোরী কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ডামুড্যার ফরাজির টেক পৌঁছালে সিয়াম ও তার চার সহযোগী ওই কিশোরীর গতিরোধ করে এবং কিছু না বোঝার আগেই তার হাত-মুখ বেঁধে পরিত্যক্ত একটি ঘরে নিয়ে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই কিশোরী বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন চিন্তিত হয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ চালাতে থাকে, একপর্যায়ে খোঁজ না পেয়ে থানা পুলিশকে বিষয়টি জানায়।
এদিকে শুক্রবার (৩১ মে) রাতে সিধলকুড়া কাঠের ব্রিজ এলাকায় ওই কিশোরীর চোখ ও হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা। তারা পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও শনিবার (১ জুন) উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়।
ভুক্তভোগী ওই কিশোরী অভিযোগ করে বলেন, সিয়ামের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিছুদিন আগে আমাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। আমি কলেজ থেকে ফেরার পথে সিয়াম ও চারজন ছেলে আমাকে জোর করে মুখ বেঁধে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো। তারা আমার সঙ্গে সবাই খারাপ কাজ করেছে। আমি সবার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, আমার মেয়ে নিখোঁজ হলে আমি থানা পুলিশকে বিষয়টি জানাই। রাতে বাড়ি ফেরার পথে জানতে পারি আমার মেয়েকে হাত-পা আর চোখ বাঁধা অবস্থায় সিধলকুড়া ব্রিজে পড়ে আছে। পরে আমিসহ পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। যারা আমার মেয়ের সঙ্গে এমন করেছে তাদের সকলের আমি উপযুক্ত বিচার চাই। যাতে অন্য কোনো বাবার সন্তানের সঙ্গে এমন ঘটনা না ঘটে।
এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মিতু আক্তার বলেন, ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করে এক কিশোরীকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। এটি ধর্ষণ কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আলামত সংগ্রহ করা ও ডাক্তারি পরীক্ষা চলছে। ফলাফল আসলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এদিকে বিষয়টি জানার জন্য অভিযুক্ত সিয়াম প্যাদার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনের নাম্বারটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমারত হোসেন বলেন, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক কিশোরীকে উদ্ধার করার পর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন