শেরপুরে ভয়াবহ বন্যা, নিহত ৫ 

আরটিভি নিউজ

রোববার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪ , ১২:৩৭ এএম


শেরপুরে ভয়াবহ বন্যা, নিহত ৫ 
ছবি : আরটিভি

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে শেরপুরে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার থেকে শনিবার (৫ অক্টোবর) রাত পর্যন্ত বন্যার পানিতে ডুবে নারী, বৃদ্ধ ও কিশোরসহ মোট ৫ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে।

নিহতরা হলেন নালিতাবাড়ী উপজেলার অভয়পুর গ্রামের বাছির উদ্দিনের ছেলে হাতেম আলী (৩০) ও তার ভাই আলমগীর (১৬), উপজেলার বাঘবেড় বালুরচর গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী মিজা বেগম। একইদিন সন্ধ্যায় খলিসাকুড়া গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে মারা যান বৃদ্ধ ইদ্রিস আলী। তবে মৃত আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা জানান, জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার ৬০ ইউনিয়নের অবস্থা বেশি খারাপ। বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ, কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছগাছালি, গবাদি পশু, বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েকটি মহাসড়কসহ অসংখ্য গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক। কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা। সংকট তৈরি হয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার অভয়পুর গ্রামের বাছির উদ্দিনের ছেলে হাতেম আলী ও সহোদর আলমগীর চেল্লাখালী নদীর ভেঙে যাওয়া পানির স্রোতে নিখোঁজ হন। পরে শনিবার (৫ অক্টোবর) পানি কিছুটা কমে আসায় বিকেল ৪টার দিকে কুতুবাকুড়া গ্রামের ধানখেত থেকে ওই ২ ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

স্থানীয়রা আরও জানান, শুক্রবার বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন উপজেলার বাঘবেড় বালুরচর গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী মিজা বেগম। একইদিন সন্ধ্যায় খলিসাকুড়া গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে মারা যান বৃদ্ধ ইদ্রিস আলী। এছাড়া আরও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও এখনও পর্যন্ত তার নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন একজন।

নালিতাবাড়ী থানার ওসি ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা চারজনের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছি। বাকি একজনের পরিচয় জানা যায়নি।’

বিজ্ঞাপন

এ দিকে বানভাসি মানুষকে উদ্ধারে শুক্রবার থেকেই কাজ করছে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। শনিবার দিনভর স্পিডবোট, নৌকা, ভেলা, টিউব ইত্যাদি নিয়ে চলে বন্যায় আটকেপড়াদের উদ্ধার অভিযান। এছাড়াও শুকনা খাবারসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে বানভাসিদের মাঝে। এসব কাজে অংশ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।

নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘নালিতাবাড়ী উপজেলায় এ বছর ২৩ হাজার ২০০ হেক্টর আমন আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় আট হাজার হেক্টর আমন আবাদ তলিয়ে গেছে। কিছু এলাকায় পানি নেমে গেলেও নিচু এলাকায় নতুন করে বন্যার পানি ঢুকে আমন আবাদ তলিয়ে গেছে।’

শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘শেরপুরের বন্যা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে বন্যার্তদের শুকনো খাবার ও গো খাদ্যের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’ 

আরটিভি/এমকে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission