ঢাকাবুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে ৬ লক্ষাধিক মুসল্লির অংশগ্রহণ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫ , ১২:০৩ পিএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দান। শান্তিপূর্ণভাবে সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ১০টায় ১৯৮তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

বিজ্ঞাপন

জামাত শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা আগেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সকাল ১০টায় জামাত যখন শুরু হয়, তখন জনসমুদ্রে পরিণত হয় সড়ক ও অলিগলিসহ আবাসিক এলাকা। লাখো কণ্ঠে আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে শোলাকিয়া ঈদগাহ এলাকা। ৬ লক্ষাধিক মুসল্লির অংশগ্রহণে এবার শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহাসিক ঈদ জামাত হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী।

ঈদের নামাজ শেষে মোনাজাতে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও দেশের মানুষের সুস্থতা কামনা করে দোয়া করা হয়। এ ছাড়া ইসরায়েলের আগ্রাসন থেকে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের হেফাজত কামনাসহ মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।

বিজ্ঞাপন

নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার, সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠের ভেতরে ৬৪টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। এ ছাড়াও ছয়টি ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে মাঠের মুসল্লিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

২০১৬ সালের জঙ্গি হামলার পর থেকে শোলাকিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও উন্নত ও কঠোর করা হয়। চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়। নামাজের সময় ১১শ’ পুলিশ সদস্য, ৫ প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাব সদস্য ছাড়াও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও আনসার সদস্যরা মাঠ ও মাঠের বাইরে মোতায়েন ছিল। সাদা পোশাকে নজরদারি করেছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। ছিল ফায়ার ব্রিগেড, অ্যাম্বুলেন্স, মেডিক্যাল টিম ও পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম। ঢাকা থেকে এসেছিল বোম ডিসপোজাল ইউনিট। প্রতিটি মানুষ যখন ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশ করেছে তখন পুলিশের চারটি স্থাপনা পেরিয়ে আসতে হয়। সেটি চেকপোস্ট হোক বা পিকেট হোক। আবার কোথাও কোথাও পাঁচ থেকে ছয়টি স্থাপনা পেরিয়ে ময়দানে আসতে হয়েছে।

দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ভৈরব-কিশোরগঞ্জ (স্পেশাল) নামের ট্রেনটি ভৈরব স্টেশন থেকে ভোর ৬টায় ছেড়ে আসে। ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ (স্পেশাল) নামের অপর ট্রেনটি সকাল ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসে। নামাজ শেষে দুপুর ১২টায় এসব ট্রেন কিশোরগঞ্জ স্টেশন থেকে ফিরে যায়। নিরাপত্তার স্বার্থে ঈদের জামাতে কেবল জায়নামাজ ও মোবাইল নিয়ে মাঠে প্রবেশ করে মুসল্লিরা। এ ছাড়াও ঈদের আগের দিন থেকে দেশের বহু জেলা থেকে লোকজন শোলাকিয়ায় আসতে শুরু করে। তাদের আবাসন ও আপ্যায়নের ব্যবস্থা পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে করা হয়।

এর আগে ঐহিত্য অনুসারে জামাত শুরুর ১৫ মিনিট আগে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী শটগানের তিনটি গুলি ছোঁড়েন। পরে জামাত শুরুর ১০ মিনিট আগে আরও দুটি এবং পাঁচ মিনিট আগে আরও একটি গুলি ছোড়া হয়।

১৭৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানটি প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৮২৮ সালে প্রথম সোয়া লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছিল বলে জানা যায়। সেই হিসেবে এবারের ঈদুল আজহার জামাত শোলাকিয়ায় ১৯৮তম জামাত।

 

 

আরটিভি/টি

 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |