মাঠের ভেতর এতিম সেতু, কেউ জানে না কেন

আরটিভি নিউজ

বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০২:০৬ পিএম


মাঠের ভেতর এতিম সেতু, কেউ জানে না কেন
ছবি: সংগৃহীত

রাস্তা ছাড়াই দুই বছরের বেশি সময় ধরে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বিলের মধ্যে এতিম হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেতু। দুপাশে কোনো সংযোগ রাস্তা না থাকায় দুপারে বসবাসরত এলাকাবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। গ্রীষ্মের সময় বিলের মাঝখানে জেগে ওঠা ভাঙাচোরা রাস্তা আর বর্ষা মৌসুম এলেই বিলে থই থই করে পানি। তখন যেন নৌকায় ভরসা এ অঞ্চলের মানুষের। পায়ে হেঁটে কাদা মাড়িয়ে চলাচল এ জনপদের মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এ ভোগান্তি যেন দেখার কেউ নেই।  

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চরম দুর্ভোগ নিয়ে বছরের পর বছর ধরে চলাচল করছেন বলে দাবি করেছেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা। অন্তত ৬ থেকে ৭ হাজার মানুষ এসব গ্রামে বসবাস করেন। 

স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি প্রত্যন্ত এ জনপদে। তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের অন্তত ৬ থেকে ৭ হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন এ রাস্তা দিয়ে। দুর্ভোগ সঙ্গী করে যেতে হয় উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় চৌবাড়িয়া হাটে। এ ছাড়া নওগাঁর নিয়ামতপুর ও রাজশাহীর তানোর উপজেলার সঙ্গে স্বল্প সময় ও সহজে এ জনপদের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে বিলের ভেতরের এ রাস্তাটি। কিন্তু মান্দা উপজেলা এলজিইডি দপ্তর রাস্তা ছাড়াই খাম-খেয়ালিভাবে বিলের মাঝখানে সেতুটি নির্মাণ করে। রাস্তা না থাকায় জনগণের কোনো কাজেই আসছে না সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি।

বিজ্ঞাপন

শংকরপুর গ্রামের বিল ঘুরে দেখা যায়, চারিদিকে বিস্তৃত ফসলের মাঠের মাঝখানে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। তার দুপাশে নেই কোনো সংযোগ সড়ক। বিলের ভেতর দিয়ে আধা ভাঙা রাস্তায় অনেকে যাতায়াত করছেন চার্জারভ্যানে। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ বাইসাইকেল, কেউবা মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল করছেন বিলের ভাঙা রাস্তায়। 

এলজিইডির তথ্যসূত্র বলছে, ২৪ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৪৬ টাকা। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে ইথেন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কয়েক দফা দর বাড়িয়ে কাজটি শেষ করা হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে।

এ দিকে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম মোকলেছুর রহমান বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, সংকরপুর বিলে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার যে ব্রিজ নির্মাণ হয়েছে তা কোনো কাজেই আসছে না সাধারণ মানুষের। ব্রিজের দুপাশে মাটি দিয়ে যে সংযোগ রাস্তা করার প্রয়োজন ছিল সেটা এখন পর্যন্ত হয়নি। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি ঠিকাদারকে জানালেও তিনি একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরপরও এখন পর্যন্ত কাজ হয়নি। পরে এলজিইডি অফিসারকে জানালে ঠিকাদার জানান, বর্ষা মৌসুমের আগেই রাস্তার নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ শেষ করা হবে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ বলেন, সেতুটির নির্মাণ শেষ হলেও পুরো কাজ এখনও শেষ হয়নি। অতি শিগগিরই রাস্তার জন্য মাটি কাটা শুরু হবে। আশা করছি, বর্ষার আগেই রাস্তাটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে।

আরটিভি/এমকে/এআর

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission