‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’—ভূপেন হাজারিকার কালজয়ী গানের এই পঙ্ক্তিগুলোর কথাই যেন আজ বাস্তব হয়ে উঠেছে খুলনার পাইকগাছার এক বৃক্ষপ্রেমিকের জীবনে।
সিদ্দিক গাজী। বয়স ৬৯। এলাকায় যাকে সবাই ‘বকুল সিদ্দিক’ নামে চেনেন। একসময় হেঁটে হেঁটে একাই রোপণ করেছেন ১২ হাজারেরও বেশি বকুল গাছ।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে প্রচারিত হয়েছিল তার জীবনগাথা। ওই অনুষ্ঠান থেকে পেয়েছিলেন ৫০ হাজার টাকার পুরস্কার, যা তিনি খরচ করেন গাছ লাগানো ও মানবতার কাজে।
বর্তমানে তার জীবন কেটে যায় কপিলমুনির বিভিন্ন বিল-জলাশয় থেকে শাক তুলেই। বিরগুণি শাকসহ নানা রকম শাক বিক্রি করে কোনো রকমে দিন চলে তার। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ছিল কষ্টের সংসার। তারপরও সন্তুষ্ট ছিলেন তিনি।
তবে কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই বিপর্যয় নেমে আসে সিদ্দিক গাজীর পরিবারে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে খাঁদিজা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তিনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ধরা পড়ে অ্যাপেন্ডিসাইটিস। জরুরি অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন চিকিৎসক। সব মিলিয়ে খরচ পড়বে ১৪-১৫ হাজার টাকা।
অভাবের সংসারে এত টাকা জোগাড় করা তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। সহায়তা চেয়ে কড়া নাড়েন একের পর এক দরজায়। এখন পর্যন্ত সংগ্রহ করতে পেরেছেন মাত্র ৩ হাজার টাকা। মেয়ের চিকিৎসা থমকে আছে টাকার অভাবে।
সিদ্দিক গাজী বলেন, বিল থেকে শাক তুলে বাজারে বিক্রি করেই কোনোরকমে দিন চলত। এখন মেয়ের চিকিৎসার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। যদি কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ান, তাহলে মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারি।
বৃক্ষরোপণ ও পরিবেশ-সচেতনতায় অবদান রাখলেও আজ তিনি অসহায়। নিজের স্বপ্ন আর মেয়ের জীবন—দুটোর মাঝে দাঁড়িয়ে এক মানবিক আকুতি নিয়ে সহায়তার অপেক্ষায় আছেন বকুল সিদ্দিক।
সিদ্দিক গাজীকে সাহায্য পাঠানোর জন্য বিকাশ ও নগদ নম্বর— ০১৯৫৫৮৯৬৪৩৪
আরটিভি/এএএ -টি