দুই সন্তানের অসুস্থতা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আব্দুল হামিদ। জায়গাজমি বিক্রি করেও কূল পাচ্ছেন না। সন্তানদের উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেছেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে।
সন্তানদের অসুস্থতা ও পারিবারিক টানাপোড়নে প্রায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তার এই দুঃসময়ে সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন তারই সহকর্মীরা। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬৯ জন কর্মকর্তা তাদের একদিনের বেতনসহ মোট ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন।
বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে রেজিস্টার দপ্তরের একটি কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা এ অনুদান হস্তান্তর করেন।
এ সময় তারা জানান, আব্দুল হামিদের বড় ছেলের বয়স ৯ বছর। গত দুই বছর ধরে ব্রেইন টিউমারের সমস্যায় ভুগছেন সে। ছোট ছেলের বয়স এক বছর দুই মাস। জন্মের পর থেকেই সে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে মস্তিষ্কে আঘাত, জয়েন্ট জটিলতা, কানে সমস্যা ও কথা বলতে না পারার মত সমস্যা রয়েছে।
তারা আরও জানান, ছোট ছেলের চিকিৎসায় প্রাথমিকভাবে ১৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। বড় ছেলের চিকিৎসা চলমান। অনেক টাকা ব্যয় হচ্ছে। ইতোমধ্যে ওই কর্মকর্তা নিজের অনেক কিছু বিক্রি করছেন। ভারতের একটি হাসপাতালে ছেলেরা এখন চিকিৎসাধীন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি মো. ইউনুস আলী জানান, সহকর্মীদের বিপদের দিনে এগিয়ে যাওয়াই মহৎ গুণ। যেকোনো সময় আমরাও সমস্যায় পড়তে পারি। আব্দুল হামিদের ছেলেদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করার জন্য আমরা সহকর্মীরা পারস্পরিক আলোচনা করি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কর্মকর্তারা তাদের একদিনের বেতন প্রদানে সম্মতি জানায়।
কর্মকর্তারা জানান, এ ছাড়া কয়েকজন কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবেও অনুদান প্রদান করেছেন। সব মিলিয়ে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা আব্দুল হামিদের কাছে হস্তান্তর করেছি। আশা করি, তার ছেলেদের চিকিৎসায় এ অর্থ কিছুটা হলেও কাজে লাগবে আর তার জন্য কিছুটা হলেও আর্থিক প্রশান্তি এনে দিবে।
অর্থ হস্তান্তরকালে শাবিপ্রবি কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মখলিছুর রহমান পারভেজ, সহসভাপতি এমরান আহমদ চৌধুরী, সহসাধারণ সম্পাদক সাহেদ আহমদ, কোষাধ্যক্ষ মো. মঈনুল হক, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. মুরশেদ আহমদ, আহমদ মাহবুব ফেরদৌসি, মো. সিরাজুল ইসলাম (উজ্জ্বল), মো. মাহফুজুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. জয়নাল ইসলাম চৌধুরী ও ইংরেজি বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আশরাফুল হক, উপরেজিস্ট্রার মো. গিয়াস উদ্দিন খান ও মো. নাঈম উদ্দিন আহমেদ, সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. ওবায়দুল হক, সহকারী রেজিস্টার সত্ত রঞ্জন মল্লিক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা অসিত কুমার সূত্রধরসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।