২০ বছরে সিসিমপুর

বিনোদন ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪ , ১১:০০ পিএম


২০ বছরে সিসিমপুর
ছবি : সংগৃহীত

সময়টা ২০০৫ সাল, প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিশুদের শেখাকে আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য করার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে ‘সিসিমপুর’। দেখতে দেখতে এই অনুষ্ঠানটি পার করল ১৯ বছর।  সিসিমপুরের প্রথম প্রচারের দিন হিসেবে প্রতি বছর ১৫ এপ্রিল তারিখটিকে ‘সিসিমপুর দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সিসিমপুর তার টেলিভিশন অনুষ্ঠান, মুদ্রিত বিভিন্ন উপকরণ এবং স্কুলভিত্তিক কার্যক্রম ও কমিউনিটি কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশুদের শিখন দক্ষতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। যেমন- বর্ণ চেনা, শব্দ থেকে বর্ণ চিহ্নিত করা, বর্ণ দিয়ে শব্দ মেলানো, শব্দ দিয়ে বাক্য তৈরি করতে সাহায্য করে। চারপাশের পরিবেশ থেকে উপকরণ খুঁজে নিয়ে সেগুলোর মাধ্যমে বর্ণ ও শব্দ চিনতে সাহায্য করে। যেমন : ঘর, কলা, আম, টেবিল, ঘড়ি, গরু, গাছ, পাতা, কলম, বই ইত্যাদি শিশুর পরিচিতি বিভিন্ন শব্দ কোন বর্ণ দিয়ে শুরু হয়, তা খেলার ছলে শেখানো হয়। সিসিমপুরের চরিত্রগুলোর মাধ্যমে পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান থেকে বিভিন্ন আকার-আকৃতির নাম, রঙের নাম ইত্যাদি শেখানো হয়। 

এছাড়া ইন্টারনেটে শিশুদের নিরাপদ রাখার বিষয় নিয়েও বেশ কয়েক বছর ধরে কাজ করছে সিসিমপুর। পাশাপাশি প্রাক প্রাথমিক পর্যায়ের শিশুদের শেখার দক্ষতা বৃদ্ধি, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং অভিভাবক মাঝে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছে সিসিমপুর।

বিজ্ঞাপন

বর্তমানে  আরটিভি সহ দেশের ৩ টি বেসরকারি টেলিভিশনে সিসিমপুরের ১৬তম সিজন সম্প্রচারিত হচ্ছে। 

তবে শুরু থেকেই একটি সরাকারি টেলিভিশন বিগত ১৯ বছর ধরে বিরতিহীনভাবে সিসিমপুর সম্প্রচার একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, যা বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং সিসিমপুরের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফল। তিনটি টেলিভিশনের মাধ্যমে সারা দেশের প্রায় এক কোটি দর্শক অনুষ্ঠানটি উপভোগ করছেন।

প্রতি বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় শিশুদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের বিষয়ে পরিণত হয়েছে সিসিমপুর। মেলায় প্রতি শুক্র-শনি আর ছুটির দিনগুলোতে ইকরি, হালুম, টুকটুকি আর শিকুর সঙ্গে মজার সময় কাটাতে শিশুদের ঢল নামে। যা ইতোমধ্যেই অমর একুশে গ্রন্থমেলার অন্যতম অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সিসিমপুরের ১৯ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ১৯ বছর ধরে শিশুতোষ এই অনুষ্ঠানটি নির্মিত হচ্ছে তিন থেকে আট বছর বয়সী শিশুর প্রারম্ভিক শিক্ষার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে। সেইসঙ্গে সিসিমপুরের লক্ষ্য শিশুর পিতা-মাতা, যত্নকারী এবং শিক্ষকরাও। 

আনন্দ আর খেলার ছলে সিসিমপুর ভূমিকা রেখে চলেছে শিশুর সামগ্রিক বিকাশে। ভাষা-বর্ণ; গণিত; পরিবেশ; সুষম ও পুষ্টিকর খাবার; স্বাস্থ্যসুরক্ষার মতো মৌলিক বিষয়গুলো ছাড়াও সিসিমপুর জেন্ডার সমতা; সামাজিক মূল্যবোধ; নিরাপদে খেলাধুলা করা, ইন্টারনেটে নিরাপদ থাকা, দুর্যোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্যকর অভ্যাস চর্চা; ভূমিকম্প; রাস্তা পারাপার ও পানিডুবি-বিষয়ক নিরাপত্তা; বিভিন্ন আঘাত প্রতিরোধে সচেতনতা; সঞ্চয় করা, পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া এবং বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ইত্যাদি নানা বিষয় শিশুদের শিখতে সাহায্য করেছে সিসিমপুর। 

পাশাপাশি পারস্পরিক শ্রদ্ধা, মমত্ববোধ, অভিন্নত্ব ও বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধাসহ দেশের সব মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করার বিষয়েও গুরুত্ব দিচ্ছে সিসিমপুর।

সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ তার সব কার্যক্রমই সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে যৌথভাবে পরিচালনা করে থাকে। গত ১৯ বছরে সিসিমপুর বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেছে। 

ইউএসএআইডির অর্থায়নে সিসিমপুরের পথচলা শুরু এবং ইউএসএআইডি-র এই সহায়তা অদ্যাবধি অব্যাহত রয়েছে। নিউইয়র্কভিত্তিক সিসেমি স্ট্রিট নামক শিক্ষামূলক টেলিভিশন-ধারাবাহিকের সহ প্রযোজনা সিসিমপুরের কার্যক্রম বাংলাদেশে পরিচালনা করছে সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission