গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ২৪ দিন ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। ইতোমধ্যে দেশটির বেশি কিছু শহর নিজেদের দখলে নিলেও রুশ সেনাদের লক্ষ্য রাজধানী কিভেয়, খারকিভসহ প্রধান শহরগুলো। যুদ্ধ বন্ধ করতে বিশ্বনেতাদের আহ্বানের পাশাপাশি দু’দেশের কয়েক দফা বৈঠকেও কার্যকর কোনো সমাধান আসেনি। এমন অবস্থায় রাশিয়াকে কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে তাদের ‘ভর্বিষ্যৎ’ বলে দিলেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
শনিবার (১৯ মার্চ) এক ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি বলেন, নিজেদের ভুলের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য রাশিয়ার কাছে আলোচনাই এখন একমাত্র সুযোগ। অন্যথায় রাশিয়ার এমন ক্ষয়ক্ষতি হবে, তা কাটিয়ে উঠতে কয়েক প্রজন্মের প্রয়োজন পড়বে।
রুশ নাগরিকদের উদ্দ্যেশ্যে জেলেনস্কি আরও বলেন, কেবল কল্পনা করুন রাশিয়ার স্টেডিয়ামে পড়ে আছে ১৪ হাজার মৃতদেহ এবং হাজার হাজার আহত ও অঙ্গহানির শিকার হওয়া মানুষ। এই আগ্রাসনে ইতোমধ্যেই রাশিয়ার বহু হতাহত হয়েছে। এটাই যুদ্ধের মূল্য। এই যুদ্ধ অবশ্যই থামাতে হবে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কয়েক বছর আগে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত এ নিয়েই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো। কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। ঠিক তার দু’দিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
চলমান এই যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ৩৩ লাখ মানুষ। যুদ্ধে ইউক্রেনের ১৩শ’ সেনা নিহত এবং রাশিয়ার ১৪ হাজার ২০০ সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে তাদের প্রায় ৫০০ সৈন্য নিহত এবং ইউক্রেনের আড়াই হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ অভিযানে ইউক্রেনে ৮১৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ইউক্রেনে আনুমানিক ৫ থেকে ৬ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছে। সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি