গত ১৩ মাসে ২ হাজার ৬০১ জন বাংলাদেশি নাগরিককে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (১২ মার্চ) রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে এ কথা জানানো হয়। আটককৃতরা সবাই সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন বলে জানিয়েছে দেশটির মন্ত্রণালয়।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই লিখিত আকারে এতথ্য রাজ্যসভায় পেশ করেন। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছর ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিএসএফের হাতে মোট দুই হাজার ৬০১ জন বাংলাদেশি নাগরিক ধরা পরেছেন।
এক বছরের খতিয়ান
মন্ত্রণালয়ের বিস্তারিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এ বছরের জানুয়ারিতে ১৭৬ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এই সংখ্যা ছিল ২৫৩, নভেম্বরে ৩১০, অক্টোবরে ৩৩১, সেপ্টেম্বরে ৩০০, অগস্টে ২১৪, জুলাইতে ২৬৭ এবং জুনে এই সংখ্যা ছিল ২৪৭।
মে মাসে এই সংখ্যা কমে দাঁড়ায়ে ৩২। এছাড়া গত বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ এবং এপ্রিলে এই সংখ্যা ছিল যথাক্রমে, ১৩৮, ১২৪, ১১৮ এবং ৯১।
রক্ষী এবং প্রযুক্তির সাহায্যে বাড়ছে নজরদারি
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্তে আরও নজরদারি বাড়িয়েছে ভারত। এর জন্য সীমান্তরক্ষীদের সংখ্যা বাড়ানোর সঙ্গে প্রযুক্তির ব্যবহারও আরও জোরদার করা হয়েছে। এর ফলে আসামের ধুবড়ি সীমান্তে হ্যান্ড হেল্ড থার্মাল ইমেজার্স, রাতের অন্ধকারে ব্যবহারের জন্য নাইট ভিশন ডিভাইসেস, ইউএভি, সিসিটিভি /পিটিজেড ক্যামেরা, আইআর সেন্সর এবং কম্প্রিহেন্সিভ ইন্টিগ্রেটেড বর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, স্থানীয় পুলিশ বাহিনী এবং বিজিবির সঙ্গে সহযোগিতায় নজরদারি, নাকা চেকিং বাড়ানো হয়েছে। চেকপোস্টে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। সৌর আলো এবং অন্যান্য আলোর মাধ্যমে সীমান্ত অঞ্চল আলোকিত রাখা হয়েছে। নদী এলাকায় ভাসমান নৌকার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হচ্ছে। সংবেদনশীল অঞ্চলে প্রয়োজনীয় ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় দালাল চক্রের উপরেও নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
এদিন, পাচারের বিষয়েও জানিয়েছেন মন্ত্রী। তার কথায়, মানুষ পাচার রুখতে পুলিশ কুকুর এবং বিএসএফের নেতৃত্বে অ্যান্টি হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিটকে সক্রিয় করা হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ গাইডলাইন্স ১৯৭৫-এর ভিত্তিতে বিএসএফ এবং বিজিবি যৌথভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। ২০১১-র কো-অর্ডিনেটেড বর্ডার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান অনুযায়ী বিএসএফ এবং বিজিবির উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা নিয়মিত বৈঠকের মাধ্যমে কাজ চালাচ্ছেন।
সীমান্তে নজরদারি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে নিত্যানন্দ রাজ্যসভায় সীমান্তে ব্যবহৃত জলযান, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, টুইন টেলিস্কোপ, এনভিডি-সহ আরও ব্যবস্থার বিস্তারিত খতিয়ান দেন।
আরটিভি/আরএ-টি