শ্রীলঙ্কায় তীর্থযাত্রীবাহী একটি বাস গভীর খাদে পড়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২১ জন নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির জ্যেষ্ঠ পরিবহন কর্মকর্তারা।
রোববার (১১ মে) ভোরে দক্ষিণাঞ্চলের তীর্থস্থান কাটারাগামা থেকে মধ্যাঞ্চলের কুরুনেগালা শহরের দিকে যাত্রাকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুই শহরের দূরত্ব প্রায় ২৫০ কিলোমিটার। দেশটির মধ্যাঞ্চলের পার্বত্য এলাকা কোটমালের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে বাসটি খাদে পড়ে যায়। বাসটিতে ৭০ জনের বেশি যাত্রী ছিল, যা ধারণক্ষমতার চেয়ে অন্তত ২০ জন বেশি।
ঘটনাস্থলের ছবিতে দেখা যায়, বাসটির ছাদ এবং পাশের অংশ ছিঁড়ে গেছে, বেশির ভাগ আসন মেঝে থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং বাসটি উল্টে একটি চা-বাগানে গিয়ে পড়েছে।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে যান্ত্রিক ত্রুটি কিংবা চালকের ঘুমিয়ে পড়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বাসটি সরকার মালিকানাধীন ছিল।
পরিবহন উপমন্ত্রী প্রসন্ন গুনাসেনা জানান, আহতদের দ্রুত দুটি স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। নিহতদের শনাক্তের কাজ চলছে। তিনি বলেন, স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার কাজে সহায়তা না করলে প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারত।
একজন বেঁচে যাওয়া যাত্রী জানান, তিনি সামনের দিকে বসা ছিলেন এবং সামান্য আহত হয়ে প্রাণে বেঁচে গেছেন। স্থানীয় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বাসটি বাঁদিকে হেলে ছিল, একটি মোড় পার হওয়ার সময়ই চালক নিয়ন্ত্রণ হারান।
শ্রীলঙ্কায় প্রতিবছর গড়ে ৩ হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। রোববারের এ দুর্ঘটনাকে দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে।
এর আগে, ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে পোলগাহাওয়েলায় একটি বাস রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষে ৩৭ জন যাত্রী নিহত হন। ২০২১ সালের মার্চে পাসারায় আরেকটি বাস খাদে পড়ে চালকসহ ১৩ জন নিহত হন। সেই দুর্ঘটনাস্থলও রোববারের ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে।
এই ধরনের দুর্ঘটনা শ্রীলঙ্কার দুর্গম ও আঁকাবাঁকা সড়কগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার বিষয়টি আরও একবার সামনে এনে দিয়েছে।
সূত্র: এএফপি