ইরানের জনগণের ওপর অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। এই বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইরান নিজেকে রক্ষা করছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
শুক্রবার (২০ জুন) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৫৯তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আব্বাস আরাগচি বলেন, জাতিসংঘ সনদের ২ (৪) অনুচ্ছেদ স্পষ্ট লঙ্ঘন করে ইরানের ওপর উসকানিমূলক আগ্রাসন চালিয়েছে ইসরায়েল।
তিনি বলেন, ১৩ জুন প্রথম প্রহর থেকেই আমাদের জনগণের ওপর এই অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছুটিতে থাকা সামরিক বাহিনীর কর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে বেআইনি ও অপরাধমূলক অভিযান চালায় ইসরায়েল। এই আকস্মিক সশস্ত্র হামলায় আমার সহকর্মী ইরানিরা নিহত ও আহত হয়েছেন। আবাসিক এলাকা, সরকারি অবকাঠামো, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পারমাণবিক স্থাপনাগুলোও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের হামলাকে গুরুতর যুদ্ধাপরাধ বলে উল্লেখ করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কূটনৈতিক প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থাতেই ইরানের ওপর হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে আব্বাস আরাগচি বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির নিয়ে উদ্ভূত বিষয়গুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য একটি আশাব্যঞ্জক চুক্তি করতে ১৫ জুন আমেরিকানদের সঙ্গে আমাদের দেখা করার কথা ছিল।
কিন্তু, এর আগেই হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এটি ছিল বিশ্বাসঘাতকতা এবং আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ ব্যবস্থার ভিত্তির ওপর এক নজিরবিহীন আঘাত।’
জাতিসংঘকে সতর্ক করে এরপর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। অন্যথায় জাতিসংঘ-ভিত্তিক সমগ্র আন্তর্জাতিক আইনি ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ইরানে হামলার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে হামলা শুরুর বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইরানের বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রেসিডেন্ট।
ইসরায়েলের হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই সংঘাত কূটনৈতিকভাবে সমাধানের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ইউরোপের তিন দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা। বৈঠকের আগে আলোচনার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে একটি কূটনৈতিক সমাধান অর্জনের জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আরটিভি/এসএইচএম/এআর