ভারত-পাকিস্তান হামলা পাল্টা হামলাকে কেন্দ্র করে মিডিয়াও কম রসদ জোগায়নি। অতিরঞ্জিত ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে। এই বিতর্কের কেন্দ্রে এসেছেন ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দুর পররাষ্ট্র বিষয়ক সম্পাদক স্ট্যানলি জনি।
সম্প্রতি এক্স (সাবেক টুইটার) এর এক বার্তায় তিনি প্রচার করেন ভারতীয় নৌবাহিনী পাকিস্তানের বন্দরনগরী করাচিতে হামলা চালিয়েছে। একই স্ট্যাটাসে তিনি একটি ভিডিও শেয়ার করেন।
এতে অনেকেই বিভ্রান্ত হন। ধরে নেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনার চিত্র। কিন্তু পরে জানা যায়, ভিডিওটি ছিল সম্পূর্ণ ভুয়া। এই ভুল তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করে পরে স্ট্যানলি জনি প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করেন।
সোমবার (১২ মে) রাতে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল এ খবর নিশ্চিত করেছে।
এক্সে দেওয়া এক পোস্টে স্ট্যানলি জনি লিখেছেন, চারপাশে ঘন কুয়াশার মতো ছড়িয়ে আছে প্রচার-প্রোপাগান্ডা। আমি সবসময় চেষ্টা করি যাচাইকৃত তথ্য নিয়েই টুইট করতে এবং ষড়যন্ত্রতত্ত্ব এড়িয়ে চলতে। কিন্তু কখনো কখনো রিটুইট করার সময় ধরে নিই, অন্য প্ল্যাটফর্ম যা দিচ্ছে তা হয়তো সত্যিই সত্য।
তিনি আরও বলেন, (করাচিতে হামলার) এই ভিডিওটি ভুল তথ্য ছিল। এ নিয়ে আমি আপনাদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি।
এদিকে, পেহেলগাম ইস্যুতে টানা দুই সপ্তাহের বেশি উত্তেজনা ও শেষ চার দিনের সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত-পাকিস্তান। মূলত, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা ১০ মে সন্ধ্যা থেকে এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
সোমবার (১২ মে) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, পেহেলগামে হামলা ঘিরে ভারত ও পাকিস্তানের পারমাণবিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে সেই আশঙ্কা দূর হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যদি সম্ভাব্য পরমাণু সংঘাত না থামাতাম তাহলে খুব খারাপ হতো, লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হতো। ওয়াশিংটন যে তা রুখে দিয়েছি- এতে আমি খুব গর্বিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি উপলব্ধি করেছি ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা প্রশমনে সবচেয়ে কার্যকর পথ হতে পারে বাণিজ্য। এরপর আমি উভয়কেই বলেছিলাম, আমার কথা শুনুন, আমরা আপনাদের উভয়ের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বাড়াতে চাই। উত্তেজনা থামান। যদি আপনার থামেন, তাহলে আমরা বাণিজ্য করতে পারব; আর যদি না থামেন- আমরা কোনো ধরনের বাণিজ্যে যাব না।
উল্লেখ্য, ভারত শাসিত পেহেলগামে হামলার জন্য শুরু থেকেই পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে ভারত। তবে, হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে ইসলামাবাদ। তারপরেও কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নেয় ভারত। পাল্টা ব্যবস্থা নেয় পাকিস্তানও। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি, যা টানা দুই সপ্তাহ চলার পর শেষপর্যন্ত সংঘাতে রূপ নেয়।
দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলা রীতিমতো যুদ্ধের রূপ ধারণ করতে চলেছিল। এমন অবস্থায় দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টার আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত-পাকিস্তান।
আরটিভি/এএইচ