দেশের প্রখ্যাত ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুতে তার প্রতি সম্মান জানিয়ে আজ অর্ধবেলা বন্ধ থাকবে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারকাজ।
সোমবার (৫ মে) আপিল বিভাগের বিচারকাজ বেলা ১১টা পর্যন্ত চলবে। এরপর আর বসবে না আপিল বিভাগ। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকাজ দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে। এরপর হাইকোর্টে বিচারকাজ বন্ধ থাকবে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ এ নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর জেনারেল।
এর আগে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক রোববার (৪ মে) বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান। তার জুনিয়র অ্যাডভোকেট শিশির মনির ও অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তারা জানান, ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক গুরুতর অসুস্থ হয়ে কয়েকদিন যাবত ধানমন্ডির ইবনেসিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
উল্লেখ্য, আব্দুর রাজ্জাক জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্বপালন করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের আইনজীবী ছিলেন।
পরে তিনি ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। লন্ডনে থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দল থেকে পদত্যাগ করেন। সে সময় ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের পদত্যাগ এবং জামায়াতে ইসলামীতে সংস্কারের পক্ষে তার খোলামেলা বিবৃতি রাজনীতির অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। তখন দলটির আমির শফিকুর রহমান এক বার্তায় বলেছিলেন, তার পদত্যাগে আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। পদত্যাগ করা যেকোনো সদস্যের স্বীকৃত অধিকার।
পরে নতুন দল আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হয়েছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। দেশে ফিরে চলতি বছরের ১৭ আগস্ট সেই পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর (১১ বছর পর) যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন তিনি। এরপর সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় আবারো কাজ শুরু করেন।
ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের জন্ম ১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে। বিএ (অনার্স) ও এম এ ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৮৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ডনেই আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। দেশে ফিরে ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। পরে ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৯০ সালে তিনি দ্য ল’ কাউন্সিল নামে একটি আইনি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী হন।
আরটিভি/এফএ/এআর
