সময় বাঁচাতে গৃহস্থালির দরকারি কিছু টিপস
সহজ ও সুন্দর রান্নার জন্য ঘরোয়া টিপসের কোন বিকল্প নেই। গৃহস্থালির ছোটখাট কাজে সময় চলে যায় অনেক। সাধারণ কিছু টিপস জেনে রাখলে ঘরের কাজে সময় বাঁচবে অনেকটাই।
রইল টুকিটাকি কিছু গৃহস্থালি টিপস—
- চায়ের কাপে লেগে থাকা বাদামী রংয়ের দাগ লবণ দিয়ে ঘষলে উঠে যায়।
- পানিতে সামান্য কেরোসিন তেল মিশিয়ে রান্নাঘর মুছলে মাশা-মাছি ও পিঁপড়ের উৎপাত কমে যায়।
- খানিকটা কর্পূর ছিটিয়ে দিলে ছারপোকার উপদ্রব থাকবে না।
- বাড়তি বাটা মশলা সামান্য তেল ও লবণ মাখিয়ে রেখে দিলে কয়েকদিন পরও ব্যবহার করা যায়।
- বাসনপত্রে কয়েক ফোটা ভিনিগার ছিটিয়ে ধুয়ে নিলে আঁশটে গন্ধ থাকে না।
- পাত্রের কানায় সামান্য মাখন বা গ্লিসারিন লাগিয়ে দিলে দুধ উথলে পড়ার সম্ভাবনা থাকে না।
- ফ্রিজে একটি পাতিলেবু টুকরো টুকরো করে কেটে রেখে দিন দেখবেন ফ্রিজের ভেতরে কোন গন্ধ নেই।
- কিছু কিছু সবজি কাটলে হাতে কালচে দাগ হয়, তাই সেই সবজি কাটার আগে হাতে সরষের তেল মাখলে কালচে দাগ আর হবে না অথবা ভিনিগার কিংবা লাবুর রসে লবণ মিশিয়ে আঙ্গুলে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে নিলেও দাগ উঠে যায়।
- পাত্রের পোড়া দাগ উঠাতে পাত্রের গায়ে বেকিং সোডা এবং সামান্য পানি দিয়ে মেখে কয়েক ঘন্টা রেখে ধুয়ে নিলে দাগ চলে যাবে।
- বিস্কুটের টিনের ভেতরে ব্লটিং পেপার রেখে দিলে বর্ষাকালেও বিস্কুট মচমচে থাকে।
মন্তব্য করুন
বন্যা পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যা করবেন
আকস্মিক বন্যায় তলিয়ে গেছে দেশের ১১ থেকে ১৩টি জেলা। বন্যা-কালীন সময়ে ত্রাণ ও দুর্গতদের সাহায্য গুরুত্ব পেয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার পানি নেমে গেছে। এবারের ভয়াবহ বন্যায় ঘর বাড়ি ডুবে গেছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। পানিবন্দী অবস্থায় দিনের পর দিন কাটাতে হয়েছে অসংখ্য মানুষের। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যার পর পানি যখন কমতে শুরু করে তখন বেশি সতর্কতার প্রয়োজন হয়। বন্যার পর স্বাস্থ্য সুরক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বন্যার পানি বিভিন্ন ধরনের রোগজীবাণু বহন করে যা মানুষের শরীরে নানা ধরনের সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
বন্যা পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যা যা করবেন, চলুন জেনে নেই—
> পানি নেমে গেছে তাই নিজেই বাড়ি চলে গেলে হবে না। বন্যা নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ বাড়ি ফেরা নিরাপদ বললেই বাড়ি যান। বিশেষত বৈদ্যুতিক তার, গ্যাস লিক বা অন্যান্য বিপজ্জনক অবস্থার জন্য।
> বন্যার পানি গোসল বা গায়ে লাগানো থেকে বিরত থাকুন। কেননা এ পানি বিভিন্ন জীবাণুর ধারক ও বাহক। তাই এ পানির সংস্পর্শে বিভিন্ন চর্ম রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সব সময় পানির সংস্পর্শে থাকার জন্য হাতে-পায়ে স্যাঁতসেঁতে ও ভেজা আবহাওয়ার কারণে ত্বক বা ত্বকের খোসপাঁচড়া, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, প্যারনাইকিয়া, স্ক্যাবিস জাতীয় নানা ধরনের ত্বকের অসুখ হয়ে থাকে।
> বাড়ি ও আশপাশের এলাকা পরিষ্কার করার সময় গ্লাভস এবং বুট ব্যবহার করুন। আবার বন্যার কারণে পোকামাকড় ঘরে বা শুকনো জায়গায় উঠে আসে। তাই পরিষ্কার করার সময় গ্লাভস এবং বুট ব্যবহার করুন।
> বন্যা পরবর্তী সময়ে ভেজা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি থেকে দূরে থাকুন, এতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে।
> বাড়িতে পৌঁছেই মেইন সুইচ চালু করে দেবেন না। সবকিছু ভালোমত পরীক্ষা করে তারপর বিদ্যুৎ চালু করা উচিত। ভালো হয়, পুরো বাসার বৈদ্যুতিক সংযোগ ইলেকট্রিশিয়ান দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া। সংযোগ নিরাপদ হলেই মেইন সুইচ অন করতে হবে।
> বন্যা-দূষিত প্রতিটি ঘর পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে জীবাণুনাশক উপাদান ব্যবহার করুন। এরপর শুকিয়ে নিন। শুকনো ঘর ও আঙিনায় ছিটিয়ে দিন ব্লিচিং পাউডার।
> বন্যার পরও বিশুদ্ধ পানির অভাব থাকে। আবার সবসময় বিশুদ্ধ পানি পান করা জরুরি। তাই বোতলজাত পানি না পেলে, পানি বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে বিশুদ্ধ করে নিতে হবে।
> বন্যায় টিউবওয়েল ডুবে গেলে সেগুলোর পানি ডিসইনফেকশন না করে পান করবেন না। নিজেরাই করতে পারেন এ কাজ। ১০০ গ্রাম ব্লিচিং পাউডারের সঙ্গে দেড় থেকে দুই লিটার পরিমাণ পানি একটি জগ বা পাত্রে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এরপর টিউবওয়েলের মূল অংশটি পাইপ থেকে খুলে পাইপের মধ্যে সেই মিশ্রণটি ঢেলে দিন। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। টিউবওয়েলের মূল অংশটি লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট, প্রয়োজনে আরও বেশি সময় ধরে হাতল চাপতে থাকুন।
> পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে তারা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ফলে নানা রোগে শিশুরা আক্রান্ত হয়। তাই শিশুদের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী শিশুদের খাবার আলাদা করে রাখতে হবে। শিশুরা দুর্বল অনুভব করলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
> ত্বকের সংক্রমণ এড়াতে বন্যার পানির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকুন। খাবার খাওয়ার আগে এবং টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত ধোয়া অত্যন্ত জরুরি।
> বন্যার নোংরা ময়লা পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করবেন না। অপরিষ্কার হাত চোখে লাগাবেন না। ঘুমানোর সময় যে চোখ উঠেছে সেই কাতে ঘুমান।
> বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ যেমন- ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড ইত্যাদি পানিবাহিত রোগের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকুন। যেকোন সমস্যায় চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হোন।
> প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং অ্যান্টিসেপটিক সঙ্গে রাখুন। ছোটখাটো সমস্যাকেও এড়িয়ে না গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।
বাড়তি মেদ ঝরাতে সাহায্য করবে যেসব সবজি
পেটের মেদ কমাতে অনেকেই দৌড়ঝাঁপ করেন। আর সবচেয়ে কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ হলো মেদ ঝরানো। তলপেটের মেদ ঝরানোর জন্য শরীরচর্চা অত্যন্ত জরুরি । অবশ্যই প্রশিক্ষকের সঠিক পরামর্শ মেনে যোগাসন কিংবা জিম করতে পারেন। ব্যায়াম ও সুষম খাবার পেটের মেদ কমাতে সহায়তা তো করেই, পাশাপাশি নির্দিষ্ট কিছু শাকসবজি খেলে এ প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হয়। পেটের মেদ ঝরাতে উপকারী কয়েকটি সবজি সম্পর্কে জেনে নিন।
জেনে নিন তালিকা—
লাউ- লাউয়ে ক্যালরির পরিমাণ কম, পানির পরিমাণ বেশি। এ কারণে লাউ ওজন নিয়ন্ত্রণে আদর্শ খাবার। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্সের গবেষণায় দেখা গেছে, লাউয়ে থাকা উচ্চমাত্রার পানি ও আঁশজাতীয় পদার্থ দ্রুত পেট ভরিয়ে ফেলে এবং ক্যালরি গ্রহণের ইচ্ছা কমিয়ে দেয়। বিভিন্ন ধরনের তরকারি রান্না করে খাওয়ার পাশাপাশি লাউ দিয়ে জুস বানিয়েও খাওয়া যায়।
কুমড়া- বেশির ভাগ মানুষ কুমড়া খেতে পছন্দ করেন না। অথচ এই সবজি খেলে খুব কম সময়ে পেটের মেদ ঝরবে। কুমড়ায় ক্যালোরি কম। ফাইবারের পরিমাণ বেশি। এ ছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন কে। এইসব উপকরণই স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। ফাইবার বেশি থাকার কারণে কুমড়া খেলে হজমশক্তির উন্নতি হবে। দূর হবে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা।
ফুলকপি: ওজন কমাতে সহায়ক আরেকটি সবজি হলো ফুলকপি। ফুলকপিতে ক্যালরি কম, আঁশ বেশি। তাই ফুলকপি খেলে দ্রুত পেট ভরে যায়। ফুলকপিতে আছে ইনডোলের মতো বেশ কয়েকটি যৌগ। এসব যৌগ হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে এবং পেটের মেদ কমায়। ভাতের বিকল্প হিসেবেও ফুলকপি খাওয়া চলে।
গাজর- গাজর খেলে ওজন কমে এ কথা অনেকেই জানেন। গাজর খেলে পেটে জমে থাকা চর্বি বা মেদও সহজে কমবে। গাজরের মধ্যে ক্যালোরির পরিমাণ কম। যদি কাঁচা গাজর খেতে পারেন তাহলে পেটের মেদ ঝরবে খুব কম সময়ে। তবে বেশি পরিমাণে কাঁচা গাজর খেলে সমস্যা হতে পারে পেটে। আপনি পেটে ব্যথা অনুভব করতে পারেন। খাবার হজম করার শক্তিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতএব একটু সতর্ক থাকা ভালো।
ব্রকলি- ব্রকলি একটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর খাবার। একাধিক পুষ্টি উপকরণ রয়েছে ব্রকলির মধ্যে। ওজন কমায় সবুজ রঙের এই ফুলকপি। ভিটামিন কে রয়েছে ব্রকলির মধ্যে। মেটাবলিজম রেট বাড়িয়ে ওজন কমাতে এই সবজি সাহায্য করে। এ ছাড়াও ব্রকলির মধ্যে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। তাই পাতে এই সবজি রাখা জরুরি।
পালংশাক- পালংশাক খেলে সহজে আপনার পেটে জমে থাকা মেদ কমবে। এই শাক মেটাবলিজম রেট বাড়ায়। ফলে নিয়ন্ত্রণে থাকে ওজন। পালংশাকে রয়েছে ভিটামিন ই এবং ম্যাগনেসিয়াম। এই দুই উপকরণ পেটের মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও ভিটামিন ‘ই’ আমাদের ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো একটি উপকরণ। তাই আমাদের চুল এবং ত্বক ভালো রাখতেও কাজে লাগে পালংশাক। তবে এই শাক রান্না করার আগে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া জরুরি। তা না হলে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আরটিভি/এফআই/এসএ
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায় যে খাবারগুলো
রক্তে হিমোগ্লোবিন অনেক কারণেই কমে যেতে পারে। এর মধ্যে খাবারের ম্যাল নিউট্রেশন বা অপুষ্টি অন্যতম একটি কারণ। আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি দেখা দিলে একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দেবে। তার মধ্যে অন্যতম হলো রক্তসল্পতা বা অ্যানিমিয়া। আর শরীরে স্বাভাবিকের তুলনায় কম পরিমাণে হিমোগ্লোবিন থাকলে অর্থাৎ আপনি অ্যানিমিয়ার শিকার হলে অনেক সমস্যা তৈরি হয়।
খাবারের অনেকগুলো উপাদান আছে যেগুলো রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে সহায়তা করতে পারে। এর মধ্যে ভিটামিন সি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শুধু আয়রন খেলেই হিমোগ্লোবিন বাড়বে এমন কোনো কথা নেই। অ্যানিমেল সোর্স বা প্রাণীজ উৎস থেকে খাবার খেলে হিমোগ্লোবিন দ্রুত বাড়ে। তাই হিমোগ্লোবিন যাদের কম তারা বেশ কয়েকটি খাবার নিয়মিতভাবে খেতে পারলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক হবে।
আসলে এই হিমোগ্লোবিন হলো আমাদের লোহিত রক্ত কণিকায় থাকা এক ধরণের প্রোটিন। এই হিমোগ্লোবিনের কাজ হলো শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সঠিকভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করা। তাই যদি হিমোগ্লোবিন কম থাকে তাহলে শরীরের সর্বত্র সঠিকভাবে অক্সিজেন পৌঁছবে না এবং দেখা দেবে বিভিন্ন সমস্যা। হিমোগ্লোবিন কম থাকলে অ্যানিমিয়া বা রক্তসল্পতার পাশাপাশি অত্যাধিক ক্লান্তি, ঝিমানি ভাব, মাথা ঘোরা, শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট, এইসব সমস্যা দেখা দিতে পারে। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধির জন্য মূলত আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি।
এক্ষেত্রে তালিকায় আপনি কোন কোন খাবার রাখবেন দেখে নিন একনজরে
বেদানা খেলে রক্ত ভালো হয়, এই প্রবাদ অনেকেই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছেন। এর অর্থ হলো বেদানা খেলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তার ফলে কমে অ্যানিমিয়ার সমস্যা। অতএব যাদের অ্যানিমিয়া রয়েছে তারা অতি অবশ্যই বেদানা খাবেন।
বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাকসবজি বিশেষ করে পালংশাক খেলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ে। কারণ পালংশাকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। অতএব যাদের হিমোগ্লোবিন কম তারা অতি অবশ্যই পালংশাক খাবেন। তবে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে অতিরিক্ত পালংশাক খেলে। তাই একটি সতর্ক থাকা ভালো। পালংশাক রান্না করার আগে অতি অবশ্যই ভালভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। নাহলে পেটে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থেকেই যাবে।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলের মাধ্যমেও হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব। শীতকালে কমলালেবু, সারাবছর পাতিলেবু, আর লেবুজাতীয় বিভিন্ন ফল অতি অবশ্যই পাতে রাখতে হবে। ভিটামিন সি আসলে আমাদের শরীরে আয়রন অ্যাবসরপশন অর্থাৎ শোষণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সেই জন্যই যাদের হিমোগ্লোবিন কম তারা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবুজাতীয় ফল অবশ্যই খাবেন নিয়মিত।
বিট খেলেও হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। বিটের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ফলিক অ্যাসিড এবং আয়রন। এই তিন উপকরণ হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক পরিমাণে বজায় রাখতে সাহায্য করে।
আরটিভি/এফআই
খালি পেটে আমলকি খেলে দূরে থাকবে অনেক সমস্যা
ক্যালোরি, প্রোটিন, ভিটামিন, ক্য়ালসিয়াম, আয়রনের মতো একাধিক পুষ্টিগুণে ভরপুর আমলকি। আমলকির রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা। ডায়েরিয়া, জন্ডিস এবং প্রদাহের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা নিরাময়ের জন্য এটি খাওয়া যেতে পারে। আমলকি কাঁচা খাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্নভাবে খাওয়া যেতে পারে। যেমন আচার, ক্যান্ডি, গুঁড়া, জুস ইত্যাদি। আমলকি ভিটামিন ‘সি’র একটি সমৃদ্ধ উৎস এবং এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। অনেকেই বিশ্বাস করেন, আমলকি দিয়ে দিন শুরু করলে তা পুষ্টির শোষণ বাড়ায় এবং হজমের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে।
জেনে নিন খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা—
হজমে সহায়ক এনজাইমের কাজে সাহায্য করতে পারে আমলা। এতে বদহজমের আশঙ্কা দূর করে। দূর হতে পারে কোষ্ঠাকাঠিন্যের সমস্যাও।
আমলায় উপস্থিত ভিটামিন ‘সি’ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। বলিরেখা দূর করতে পারে। অকাল বার্ধক্যের আশঙ্কা দূর হয়।
আমলায় আছে ক্যারোটিন এবং আয়রন। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে আমলা। নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। চুল পেকে যাওয়া কমায়।
আমলা এলডিএল (LDL) কমায় এবং বাড়াতে পারে এইচডিএল (HDL)। হৃদরোগের আশঙ্কা কমায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।
ওজন কমাতেও কার্যকর আমলা। এতে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে পর্যাপ্ত। মেটাবলিজম বাড়াতে এবং ফ্যাট কমাতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার আছে আমলায়। খিদে কমাতে পারে আমলা।
ক্যারোটিন সমৃদ্ধ আমলকি, যা চোখ ভালো রাখতে পারে। এমনকি চোখের ছানির আশঙ্কাও কমতে পারে।
ডায়বেটিকদের জন্য কার্যকর আমলা, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। এমনকী ডায়বেটিস সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে পারে।
শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে পারে আমলকি। পাশাপাশি লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখে আমলা।
সহজে তালের বড়া তৈরির রেসিপি
তালের মিষ্টি স্বাদ ও গন্ধ ভালোবাসেন অনেকেই। মজার এই ফলটি দিয়ে তৈরি করা যায় অনেকরম পিঠা। তেমনই একটি পিঠা হলো তালের বড়া। মজাদার এই তালের পিঠা খেতে চাইলে এখনই সময়। বাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে পাকা তাল। তাই দেরি না করে সহজেই তৈরি করে নিন তালের পিঠা।
চলুন জেনে নেই তালের বড়া তৈরির রেসিপি—
উপকরণ:
তালের রস- ২ কাপ
নারিকেল কোড়ানো- ৪ টাবিল চামচ
চালের গুঁড়া- ৩ কাপ
বেকিং পাওডার- ১/২ চা চামচ
গুঁড়া দুধ- ৩ টেবিল চামচ
পানি- পরিমাণমতো
লবণ- পরিমাণমতো
চিনি- ৪ চা চামচ
তেল- ভাজার জন্য
প্রণালি:
প্রথমে একটি পাত্রে তালের রস নিয়ে তাতে একে একে নারিকেল কোড়ানো, চালের গুঁড়া, গুঁড়া দুধ, বেকিং পাউডার, লবণ, চিনি, এবং পানি দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে মিশিয়ে নিন। এবার মাখানো উপকরণগুলো আধাঘণ্টা রেখে দিতে হবে। একটি প্যানে তেল গরম করে তাতে মাখানো তাল বড়ার আকারে দিয়ে ভেজে নিন। হয়ে এলে নামিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার তালের বড়া।
আরটিভি/এফআই
ঝটপট তৈরি করুন চিজি অমলেট
চিজ খেতে পছন্দ করেন না এরকম মানুষের সংখ্যা নেহাতই হাতে গোনা। ডিম, পাস্তা, টোস্টের সঙ্গে চিজের কিন্তু একটা দারুণ সম্পর্ক রয়েছে। ডিমের সঙ্গে চিজ মিশিয়ে যেমন সুন্দর ওমলেট বানানো যায় তেমনই কিন্তু টোস্টের সঙ্গে যদি মেশে একটুকরো চিজ স্লাইস তাহলেও কিন্তু তা দেখতে বেশ লাগে। ডিম দিয়ে সাত তাড়াতাড়ি নানা রকম খাবার বানিয়ে নেওয়া যায়। এছাড়াও যখন খুশি তা খাওয়া যায়। বাড়িতে অতিথি এলে যেমন চটজলদি ডিমের ওমলেট বানিয়ে দেওয়া যায় তেমনই কিন্তু খিদে পেলেও ৫ মিনিটে বানিয়ে নেওয়া যায়। ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি। ব্রেকফাস্টে তাই অনেকেরই পছন্দ এই চিজি অমলেট। রাতে হোক কিংবা সকালে যখন গরম অমলেটের মধ্যে থেকে চিজ গলে জিভে পড়ে তখনকার মনের যে অনুভূতি তা কিন্তু ভাষায় প্রকাশ করে বোঝানো যাবে না। শিশুর টিফিনেও বৈচিত্র আনতে নিত্যনতুন খাবার তৈরি করতে হয়। আর তাই কম সময়ে সুস্বাদু আর স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করতে চাইলে চিজ প্রেমীদের জন্য রইল দারুণ স্বাদের ৪টি চিজ অমলেট রেসিপি।
জেনে নিন রেসিপি—
প্লেন চিজ অমলেট- ডিম, এক চামচ দুধ, স্বাদমত লবণ, গোলমরিচের গুঁড়ো আর সামান্য মাখন একসঙ্গে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এবার তা ১০ মিনিট রাখুন। প্যানে অয়েল ব্রাশ করে ডিম ঢেলে দিন। চিজের স্লাইস দিয়ে সাবধানে উল্টে নিলেই তৈরি চিজ অমলেট।
মাশরুম-সসসেজ ওমলেট- স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট কিংবা ব্রাঞ্চ হিসেবে কিন্তু এই রেসিপি খুবই হিট। ডিম ফেটিয়ে নিন। সঙ্গে দিন দুধ, চিলি ফ্লেক্স, মাখন , লবণ আর গোলমরিচ। মাশরুম আগে থেকে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ভাপ তুলে রাখুন। এবার প্যানে তেল বা বাটার দিয়ে ডিম দিন। ওপর থেকে ছোট ছোট টুকরো করে মাশরুম, সসেজ ছড়িয়ে দিন। লো আঁচে রেখে খানিকক্ষণ ঢেকে রাখুন। এবার উলটে নিলেই তৈরি ওমলেট।
চিজ সবজির ওমলেট- ডিম ভেঙে ওর মধ্যে লবণ, গোলমরিচের গুঁড়ো, গাজর কুচি, পেঁয়াজ কুচি, টমেটো কুচি, মরিচ আর ক্যাপসিকাম কুচি মিশিয়ে নিন। এবার তা ভালো করে ফেটিয়ে নিন। প্যানে তেল ব্রাশ করে নিতে হবে। এবার ডিমের গোলা ছড়িয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। চিজ স্লাইস আর ধনেপাতা কুচি দিয়ে ঢেকে দিন। ফুলে উঠলে নামিয়ে নিলেই তৈরি ওমলেট।
এগ পটাটো ওমলেট- আলু সেদ্ধ করে মাখন, গোলমরিচ, লবণ দিয়ে মেখে নিন। এবার প্যানে মাখন ব্রাশ করে ডিমের গোলা দিন। চিজ স্লাইস দিন। এরপর আলুর পুর দিয়ে দিন ওর মধ্যে। চুলা আল্প আঁচে রাখুন। ফুলে উঠলেই নামিয়ে নিন। ডিনারে খুবই ভালো লাগে এই ওমলেট।
আরটিভি/এফআই
পায়ের পেশিতে টান লাগলে যা করবেন
বর্তমান সময়ে কমবেশি অনেকেরই কিছু না কিছু শরীরে সমস্যায় রয়েছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই সতর্ক হয়ে যেতে হবে। কারণ আপনি যদি নিজের মতো করে এই সমস্যার প্রথমেই সমাধান না করতে পারেন, তবে জটিলতা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এদিকে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথার মধ্যে পায়ের যন্ত্রণায় ভোগা মানুষের সংখ্যাই বেশি। পায়ের মাংসপেশিতে হঠাৎ টান ধরার সমস্যা অনেকেরই হয়ে থাকে। বিশেষ করে রাতে ঘুমের মধ্যে এটা বেশি হয়। তীব্র ব্যথায় ঘুম ভেঙে যায়। কিছুতেই পা আর সোজা বা ভাঁজ করা যায় না। কখনো কখনো একটানা পা ভাঁজ করে রেখে হঠাৎ সোজা করতে গেলে বা সকালে হাঁটা শুরু করার পরও পায়ের পেশিতে টান পড়তে পারে। সাধারণত পায়ের কাফ মাসল বা পেছনের মাংসপেশি আর পায়ের পাতায় এই টান ধরে। টান ধরার কারণ এই পেশির হঠাৎ শক্ত হয়ে যাওয়া। মাঝেমধ্যে ব্যথা ঊরুতেও উঠে আসে। ব্যথার তীব্রতা কারও ক্ষেত্রে কয়েক সেকেন্ড পর্যন্ত স্থায়ী হয়, আবার কখনো কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে সারা রাত ভোগাতে পারে। যেকোনো বয়সে যে কারওরই হতে পারে এ সমস্যা। তবে বয়স্ক ও নারীদের মধ্যে এই পেশিতে টান পড়ার প্রবণতা বেশি।
আসলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে ভিটামিন ডি-এর অভাব, পায়ের মাংসপেশির শৈথল্য, কোনও আঘাতসহ অন্যান্য কারণে পায়ের মাংসপেশিতে হঠাৎ টান ধরার সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে ঘরোয়া কিছু নিয়মে পায়ের ব্যথা কমানো যেতে পারে। জেনে নিন নিয়মগুলো।
নানা কারণে পায়ের পেশিতে টান লাগে। যেমন—
অতিরিক্ত ব্যায়াম ও পরিশ্রম করলে কিংবা পায়ের পেশিতে বেশি চাপ পড়লে।
টানা বসে বা দাঁড়িয়ে কাজ করলে।
পানিশূন্যতা।
শরীরে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হলে।
গর্ভাবস্থায়, বিশেষ করে শেষ ৩ মাসে।
এ ছাড়া পায়ে রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে, অতিরিক্ত মাদকাসক্তি, বাত, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, কিডনি, হার্টের সমস্যার জন্যও এমন হতে পারে।
যা করা উচিত
পায়ে টান পড়লে দ্রুত পেশিকে রিলাক্স করতে হবে। পেশি প্রসারিত হলে ব্যথাও কমবে। পায়ের পেছনের পেশিতে ব্যথা হলে পা সোজা করে হাত দিয়ে পায়ের আঙুলগুলো নিজের দিকে টানতে হবে, সঙ্গে মাংসপেশিতে হালকা মালিশ বা ম্যাসেজ করা যেতে পারে।
পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে পা উঁচু করে রাখতে পারেন।
হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে কিছুক্ষণ গরম সেক দিতে পারেন আবার পেশি ফুলে গেলে আইসব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
নিয়মিত বিশেষ করে ঘুমানোর আগে পায়ের মাংসের স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম করতে হবে।
শরীরে পানিশূন্যতা দূর করতে দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে, সঙ্গে ফলের রস, ডাবের পানিও খেতে পারেন।
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার—দুধ, ডিম, বাদাম, কলিজা, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে।
ধূমপান, মদ্যপান করা থেকে বিরত থাকুন।
সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ৩০ মিনিট করে হাঁটার অভ্যাস করুন।
দীর্ঘ সময় একটানা বসে কাজ না করে এক ঘণ্টা পরপর অবস্থান পরিবর্তন বা হাঁটাচলা করতে হবে।
তবে সমস্যাটা যদি প্রায়ই হয় কিংবা টান লেগে পেশি ফুলে যায় বা পায়ের চামড়ার রং পরিবর্তন হয়, পা ঝিন ঝিন বা অবশ হয়ে আসে, শরীরের অন্যান্য জায়গায়ও ব্যথা হয়, তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
তথ্যসূত্র: অনলাইন
আরটিভি/এফআই