ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ পেয়ারার স্বাস্থ্য উপকারিতা
পেয়ারা খেতে খুবই সুস্বাদু ও সুমিষ্ট। পেয়ারাকে ভিটামিন সি-এর ব্যাংক বলা যায়। সাধারণত বর্ষা ও শীত ঋতুতে গাছে পেয়ারা হয়। সব জাতের পেয়ারার গুণাগুণ শীতকালে বেড়ে যায়, রোগ ও পোকার আক্রমণও কম থাকে। ফলের আকৃতি এবং রং সবদিক থেকেই সুন্দর হওয়ায় এ সময়ে পেয়ারার দামও থাকে বেশি। এসব দিক বিবেচনায় রেখেই বর্ষাকাল বাদে কীভাবে অন্যান্য ঋতুতে অত্যধিক হারে উৎপাদন বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে গবেষণা শুরু হয়।
পেয়ারা একটি দ্বিবীজপত্রী বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Psidiun guajava। পেয়ারা একরকমের সবুজ রঙের বেরী জাতীয় ফল। পেয়ারার প্রায় ১০০টিরও বেশি প্রজাতি আছে। তবে অন্যান্য বর্ণের পেয়ারাও দেখতে পাওয়া যায়। লাল পেয়ারাকে (Marroonguava) রেড আপেলও বলা হয়।
পেয়ারার উপকারিতা:
- পেয়ারা নিয়মিত খেলে ক্যানসার এবং মেয়েদের ব্রেস্ট ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
- পেয়ারা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে তাই নিয়মিত পেয়ারা খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
- পেয়ারা নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
- অনেকেরই মুখের ভেতর সাদা দাগের মতো একটি আলসার দেখা যায়। এমন হলে পেয়ারা খেলে উপকার পাওয়া যায়।
- পেয়ারা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সাথে লড়াই করে। তাই পেয়ারা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
- পেয়ারার পাতা চিবিয়ে বা রস করে খেলে মাসিককালিন ব্যথা কমে যায়।
- কাঁচা পেয়ারা খেলে ঠান্ডাজনিত সমস্যা দূর হয়।
- নিয়মিত কাঁচা পেয়ারা খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে।
মন্তব্য করুন
বরিশালের জনপ্রিয় শরবত মলিদা
বরিশাল অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় পানীয় হলো মলিদা। বিভিন্ন উৎসব পার্বণে এই অঞ্চলে মলিদা খাওয়ার চল অনেক পুরোনো। তবে বর্তমান প্রজন্মের অনেকে এই মলিদার সঙ্গে পরিচিত নন। এ অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে জনপ্রিয় পানীয় মলিদার নামটি সর্বাঙ্গে জড়িয়ে। যদিও আধুনিকতার ছোঁয়ায় বড় কোনো উৎসব ছাড়া মলিদার আয়োজন এখন আর দেখা যায় না। তবে কেউ কেউ এখনও সংস্কৃতি বা ঐতিহ্য ধরে রাখতে ছোট পরিসরে মলিদা খাওয়ানোর আয়োজন করেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক মলিদা তৈরির রেসিপি।
রেসিপি-
উপকরণ: নতুন পোলাওয়ের চাল, নারিকেল, আদা, লবণ, খাঁটি আঁখের গুড়, খই/মুড়ির প্রয়োজন হয়। পরিমাণের হিসাব কষলে বড় এক কাপ বাটা পোলাওয়ের চালের সঙ্গে, কিছুটা মুড়ি/খই বাটা, বড় টেবিল চামচ নারিকেল বাটা, চা চামচ আদা বাটার সাথে পরিমাণ মতো আঁখের গুড়, লবণ মিশিয়ে ৩-৪ কাপ পানির সাথে মিশ্রণ করতে হবে।
প্রণালি: একটি পাত্রে প্রথমে পরিমাণ মতো পোলাওয়ের চাল বাটা, মুড়ি বা খই বাটা, নারিকেল বাটা ও খাঁটি আঁখের গুড় মিশিয়ে হাত দিয়ে কচলে নিন যেন সবগুলো উপাদান একসঙ্গে মিশে যায়। আরেকটি পাত্রে পানি দিয়ে তাতে আগের মিশ্রণগুলো অল্প অল্প করে মিশিয়ে নাড়তে থাকুন, তবে এ মিশ্রণে পানির পাশাপাশি তরল দুধ বা ডাবের পানিও ব্যবহার করেন অনেকে। এবারে সবগুলো মিশ্রণ ঢালার পর পরিমাণ মতো লবণ ও আদা বাটা দিয়ে ভালো করে নাড়ুন। মিশ্রণ হয়ে গেলে পছন্দমতো গ্লাসে ঢেলে তার ওপর মুড়ি বা খই ছিটিয়ে অল্প নারিকেল বাটা ছিটিয়ে দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন সুস্বাদু মলিদা।
মলিদাকে আরও সুস্বাদু করতে অনেক জায়গাতে চিড়াও মিশানো হয়। আগে মিশ্রণ ও বাটার কাজ শীলপাটা ও ঘুঁটনি দিয়ে করা হতো, তবে এখন চাইলে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে তৈরি করে নিতে পারেন। যদিও চাল বাটার কাজটি শীলপাটায় করলে স্বাদটা অনেক ভালো হবে। ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করুন।
আরটিভি/এফআই
প্রতিদিন চিয়া বীজ খেলে হতে পারে যে সমস্যা
চিয়া বীজের অনেক গুণ। সহজপাচ্য ফাইবার, প্রোটিন থেকে হার্ট ভালো রাখার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সবই রয়েছে এই বীজে। ওজন কমানোর জন্য পুষ্টিবিদরা চিয়া বীজ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নানা রকম পুষ্টিগুণের জন্য ক্রমশই এই বীজের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এই বীজের উপকারিতার শেষ নেই। খাবার বেক করার ক্ষেত্রেও চিয়া বীজ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এত গুণ থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত পরিমাণে চিয়া বীজ খেলে কিন্তু উপকারের বদলে নানা রকম শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
জেনে নিন সমস্যাগুলো—
রক্ত পাতলা করে দেয়: চিয়া বীজে ওমেগা ৩ রয়েছে ভরপুর পরিমাণে। এই উপাদান রক্ত পাতলা করে। শরীরের পক্ষে যা ভাল। কিন্তু যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাচ্ছেন, সে ক্ষেত্রে কিন্তু সমস্যা হতে পারে। তেমন ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই চিয়া বীজ খাওয়া যেতে পারে।
শর্করার মাত্রা একেবারে কমিয়ে দেয়: চিয়া বীজে ফাইবার রয়েছে ভরপুর পরিমাণে। ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। তাতে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমে। কিন্তু শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে কমে যাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। আবার ডায়াবিটিস রোগীদের জন্যেও চিয়া বীজ কিন্তু ক্ষতিকর। ইনসুলিন নিলে এই বীজ থেকে দূরে থাকাই ভালো।
হজমের সমস্যা: বেশি চিয়া বীজ খেলে হজমের গোলমাল দেখা দিতে পারে। চিয়া বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ফাইবার উপকারী। কিন্তু বেশি খেলে সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত ফাইবার হজমপ্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে নির্দিষ্ট পরিমাণ চিয়া বীজ খাওয়া যেতে পারে। তবে বেশি নয়।
আরটিভি/এফআই
ব্রেস্টফিডিং করানোর সময় ভুলেও খাবেন না যে ৫ খাবার
মাতৃত্ব এক বিশেষ অনুভূতি। এই সময় মায়েরা নিজের জীবনের কিছু সেরা মুহূর্ত কাটান। তবে মুশকিল হলো, আনন্দে বিভোর হয়ে অনেক মা এমন কিছু খাবার খেয়ে ফেলেন যাতে তার এবং সন্তানের শরীরের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে যাওয়ার আগেই সাবধান হন। জেনে নিন কোন কোন খাবার খেলে বিপদ বাড়তে পারে, তারপর এসব খাবারের থেকে বাড়িয়ে নিন দূরত্ব। তাহলেই সুস্থ থাকবেন আপনি। সুস্থ থাকবে গর্ভের সন্তান।
পারদ সমৃদ্ধ মাছ খাবেন না: মাছ হলো পুষ্টির ভাণ্ডার। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। সেই সঙ্গে এতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ভাণ্ডার। তাই ডেলিভারির পর নিশ্চিতভাবে মাছ খেতে হবে। তাতেই সুস্থ থাকবে শরীর। তবে ভুলেও এই সময় পারদ সমৃদ্ধ টুনা, মার্লিন, শর্ডফিশের মতো মাছ খাবেন না। এই ভুলটা করলে উপকার তো মিলবেই না, উল্টে বাচ্চার শরীরে পারদ পৌঁছে যাবে। আর এমনটা ঘটলে বাচ্চার বিকাশ এবং বৃদ্ধি আটকে যেতে পারে। তাই সাবধান হন।
মদ্যপান এড়িয়ে চলুন: মদ যে শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর, এই কথাটা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তারপরও অনেক মহিলা ব্রেস্টফিডিং করানোর সময়ও এই পানীয়ে চুমুক দেন। আর এই ভুলটা একদমই করা যাবে না। কারণ মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে মদের কিছুটা অংশ বাচ্চার শরীরেও ঢুকে যেতে পারে। তারপর শুরু হতে পারে সমস্যা। তাই ভুলেও ব্রেস্টফিডিং করানোর সময় মদ্যপান করবেন না।
কফি: আপনি যদি কফি খেতে খুব ভালোবাসেন, তাহলে যে আপনাকে সাবধান হতে হবে। কারণ, কফিতে রয়েছে ক্যাফিন। আর এই উপাদান দুধের মাধ্যমে বাচ্চার শরীরে পৌঁছে গেলেই মুশকিল। সেক্ষেত্রে তার রাতের ঘুম উড়ে যেতে পারে। এমনকী তার পেটের সমস্যাও হতে পারে। তাই চেষ্টা করুন এই সময় কফি না খাওয়ার। তার বদলে প্রচুর পরিমাণে পানিপান করুন। এই কাজটা করলেই কিন্তু মিলবে উপকার।
প্রসেসড ফুডের থেকে বাড়ান দূরত্ব: ব্রেস্টফিডিং করানোর সময় যতটা সম্ভব প্রসেসড ফুডের থেকে বাড়িয়ে নিতে হবে দূরত্ব। কারণ, এই ধরনের খাবারের ক্যালোরি ভ্যালু খুবই বেশি। এমনকী এতে প্রচুর রাসায়নিক, ফ্যাট মেশানো রয়েছে। তাই এই সময় যতটা সম্ভব প্রসেসড ফুডের থেকে বাড়িয়ে নিন দূরত্ব। আশা করছি, এই কাজটা করলেই উপকার মিলবে। আপনার পাশাপাশি সুস্থ থাকবে গর্ভের সন্তান।
যা খেতে পারেন:
এই সময় পাতে থাকুক প্রচুর পরিমাণে শাক, সবজি এবং ফল। সেই সঙ্গে রোজ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এমনকী দিনে অন্ততপক্ষে ৩ লিটার পানিপান করাও জরুরি। এর পাশাপাশি প্রতিদিন ৭ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। এই সামান্য কাজটা করলেই ব্রেস্টমিল্ক বেশি পরিমাণে তৈরি হবে। সন্তান এবং আপনি থাকবেন সুস্থ-সবল।
আরটিভি/এফআই
কম খরচে আনন্দ করার দিন আজ
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা যদি যেকোনো ক্ষেত্রে চাহিদার চেয়ে বা প্রয়োজনের বেশি কিছু ব্যয় করে ফেলি, তাহলে তা খারাপ। যেকোনো ব্যাপারে যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটুকু খরচ করা উচিত। তাই জীবনে চলার পথে প্রতিটি ব্যাপারে আমাদের মিতব্যয়ী হওয়া উচিত। মিতব্যয়ী শব্দের অর্থ পরিমাণমতো ব্যয় করা। মিতব্যয়ী কিন্তু কৃপণ নয়।
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, আয় বুঝে ব্যয় করো। আয় বা সম্পদের পরিমিত ব্যয়ের অভ্যাসই মিতব্যয়িতা। মিতব্যয়িতা একটি অসামান্য মানবীয় গুণ। জীবনে যে যত বেশি মিতব্যয়ী, সে তত বেশি দুশ্চিন্তামুক্ত। সুন্দর ও সফল জীবন গঠনের জন্য মিতব্যয়িতার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। মিতব্যয়িতা মানুষকে হিসাবি ও সৎ সাহসী হতে সাহায্য করে। আয় ও সম্পদের সঙ্গে ব্যয়ের সমন্বয় ব্যতীত কখনোই সুখ ও সমৃদ্ধি অর্জন করা যায় না।
মানুষ জীবনে যে পেশাই গ্রহণ করুক না কেন, তার প্রধান উদ্দেশ্য থাকে অর্থ উপার্জন। তবে অর্থ উপার্জনই বড় কথা নয়, অর্থের যথার্থ ব্যয়ের মধ্যেই মানুষের প্রকৃত পরিচয় উন্মোচিত হয়। কিন্তু আমাদের সমাজবাস্তবতাই এমন যে এখানে অর্থ খরচকে আনন্দের সমার্থক বলে ভাবা হয়। ফলে ভালো সময় কাটানোর জন্য অর্থ খরচ করতে হবে, মানুষের মধ্যে এ রকম একটা ধারণা চালু আছে। অথচ মৌলিক সত্যটা কিন্তু একদমই বিপরীত। ব্যাংক হিসাব কিংবা পকেটের ওপর বাড়তি চাপ না দিয়েও নির্মল সুখ পাওয়া সম্ভব। পুরো ব্যাপারটাই নির্ভর করছে, আপনি অর্থব্যয়ের ক্ষেত্রে কতটা চৌকস ও বুদ্ধিদীপ্ত তার ওপর।
দৈনন্দিন জীবনযাপনে কোথায় কতটুকু খরচ করা উচিত, ব্যবহার্য পণ্যসামগ্রী বাছাই ও ক্রয়ে কতটুকু মিতব্যয়ী হওয়া দরকার, প্রয়োজনীয়তা-অপ্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে যথার্থ বিবেচনা-বোধ এসব বিষয়ই মূলত আপনার প্রাত্যহিক আনন্দের সঙ্গে অর্থের সমীকরণ নির্ধারণ করে দেবে। মিতব্যয়িতা মানে কিন্তু কোনোভাবেই কৃপণতা নয়। বরং ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে টাকাপয়সার এমন বিবেচনাপ্রসূত ব্যবহার নিশ্চিত করা, যা নিয়ে আসবে সত্যিকারের সুখ ও সমৃদ্ধি।
তবে এই প্রলোভনমুখী বাজারব্যবস্থায় মিতব্যয়ী হওয়াটা সহজ নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষের বিলাসী জীবনের চিত্র, বাহারি বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি আমাদের সামনে অপচয়ের রঙিন ফাঁদ পেতে রেখেছে। ফলে ধারদেনা করে হলেও অর্থের বিনিময়ে চাই সুখ। তবুও চেষ্টা করা উচিত অপচয়ের রঙিন ফাঁদ থেকে এড়িয়ে চলা।
আজ শনিবার (৫ অক্টোবর) মিতব্যয়ী আনন্দ (কম খরচে আনন্দ) দিবস। ১৯৯৯ সালে আমেরিকান লেখক শেল হরোভিৎজ উদ্যোগে দিনটি চালু হয়। অতিরিক্ত অর্থব্যয় না করে জীবন উপভোগ করার ব্যাপারে মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে এই দিবসের প্রবর্তন করেন তিনি। তবে এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পরিবেশ সচেতনতাও। পরিবেশ বাঁচাতে প্রাকৃতিক সম্পদের পুনর্ব্যবহার করে যেমন অর্থ বাঁচানো সম্ভব, তেমনই প্রয়োজন মেটানোও সম্ভব।
দিবসটি তাহলে পালন করা যাক। অল্প খরচে কিংবা বিনা খরচে কাটুক একটা আনন্দময় দিন। কম খরচে আনন্দ কীভাবে পাওয়া যেতে পারে, জেনে নিন কিছু আইডিয়া।
ঘরোয়া আয়োজনে রান্নাবান্না করতে পারেন।
মুক্ত প্রকৃতিতে বেরিয়ে পড়ুন।
পার্কে হাঁটহাঁটি করে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারেন।
সামাজিক কার্যক্রম কিংবা স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমেও পেতে পারেন নির্মল আনন্দ। এবার নিজের মতো করে আরও কিছু ভাবুন যা করলে আপনি আনন্দ পাবেন।
সূত্র: ডেজ অব দ্য ইয়ার
আরটিভি/এফআই
স্ট্রেস কমানোসহ গরম পানির রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা
সারাদিনের বিভিন্ন সময়ে গরম পানি পান করেন অনেকেই। ঋতু পরিবর্তনের সময় এই অভ্যাস আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে খুবই উপকারী হয়ে ওঠে। অনেকেই আবার সকালবেলায় খালি পেটেও গরম পানি পান করেন। এছাড়াও নিয়মিত গরম পানি পানের অভ্যাস থাকলে একাধিক উপকার পেতে পারেন আপনি। তবে একটা বিষয় অতি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। খুব বেশি গরম পানি এবং অনেকটা পরিমাণে গরম পানি পান করা কখনই স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো অভ্যাস নয়। তাই একটু সতর্ক থাকা জরুরি।
গরম পানি পানে কী কী উপকার মিলবে তা জেনে নিন:
আমাদের শরীরের জন্য গরম পানি পানের অভ্যাস খুবই উপকারী একটি জিনিস। অনেক সময় স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটি কমাতেও সাহায্য করে এই অভ্যাস। তবে কখনই খুব বেশি গরম পানি পান করবেন না। হালকা গরম পানি পান করতে হবে।
বডি ডিটক্সিফিকেশনের কাজ করে গরম পানি। অর্থাৎ শরীরের মধ্যে জমে থাকা যাবতীয় দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায় গরম পানি পানে। তাই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে হালকা গরম পানি পান করতে পারেন।
ওজন কমানোর জন্য আমরা অনেক ধরনের পানীয়ই পান করি। এর মধ্যে অন্যতম হলো গরম পানি। তবে হালকা গরম পানি পান করতে হবে। এর সঙ্গে যদি পাতিলেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে নিতে পারেন তাহলে উপকার পাবেন দ্রুত। সকালবেলায় খালি পেটে এই পানীয় পান করুণ নিয়মিত। ওজন কমবে দ্রুত। তার পাশাপাশি দূর হবে অ্যাসিডিটি এবং বদহজমের সমস্যাও।
গরম পানি পান করলে আপনার যাবতীয় বদহজম, অ্যাসিডিটি, গ্যাস কিংবা পেট ফেঁপে যাওয়ার মতো সমস্যা দূর হবে। অনেক সময় খুব ভারী খাবার খাওয়া হয়ে গেলে আইঢাই লাগে আমাদের। সেই সময় হালকা গরম পানি পান করলে আপনি অনেক উপকার পাবেন।
অনেকের সারাবছরই ঠান্ডা লাগার, সর্দি-কাশির সমস্যা দেখা যায়। গলা ভেঙে থাকে। বুকে জমে থাকে কফ। এই জাতীয় সমস্যা এড়াতে চাইলে ভরসা রাখুন গরম পানিতে। হালকা গরম পানি পানে উপকার পাবেন নিঃসন্দেহে।
আরটিভি/ এফআই
স্বাদে তেতো হলেও গুণে অদ্বিতীয় যেসব খাবার
বাঙালির কাছে তেতো বলতে মূলত উচ্ছে, করলা, পাটশাক, নিমপাতা, সজনে ডাঁটা বা ফুল। এ ছাড়াও আছে মেথি, কালমেঘ বা থানকুনি। আছে ব্রাহ্মি আর হেলেংচাও। আর এদের নাম শুনলেই অনেকের চোখে, ঠোঁটে বিরক্তি আসে। মাছ-মাংস, মিষ্টি ছেড়ে কে-ই বা তেতো খেতে চায়। কিন্তু তেতোর অনেক গুণ। তা জানলে মন বদলাবে অনেকেরই।
প্রতিদিনের খাবারে না হলেও অন্তত সপ্তাহে চারদিন তেতো খাওয়া দরকার বলেই জানান চিকিৎসকেরা। তেতো খাবারের আরও কিছু গুণগুণ জানলে অবাক হবেন আপনিও।
জেনে নিন তেতো খাবারে কী কী উপকারিতা রয়েছে—
মেথি: রান্নায় নিয়মিত মেথি ব্যবহার করুন। মেথি ফোঁড়ন দিয়ে আলুর চচ্চড়ি যদি কোনও খেয়ে থাকেন তাহলে বুঝবেন মেথির স্বাদ সামান্য তিতকুটে হলেও আলুর চচ্চড়ির স্বাদ বিশ্বের সেরা। পাঁচ ফোঁড়নেও মেথি থাকে। সুতরাং তা থেকেও খাওয়া যায়। আবার রাতে মেথি ভিজিয়ে সকালে সেই জল খেলে শরীর ভালো থাকে। মেথি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর একটি মশলা বা বীজ। এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল এবং সলিউবল ডায়টারি ফাইবার। নিয়মিত মেথি খেলে কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর হয়। রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক থাকে। কোলেস্টরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে এই মেথি।
করলা: করলা স্বাদে তেতো। কিন্তু এর গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। করলার রস অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য আদর্শ। করলা ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ। প্রতিদিন একটি বা একাধিক করলা খেতে পারলে রোগ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না।
পাট শাক: পাট গাছের কচি পাতাগুলোকে শাক হিসেবে খাওয়া হয়। এই শাকের মধ্যে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাট, লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। লাইকোপিন শরীরের কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। পাট শাকে আরও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালসিয়াম, যা হাড় গঠনে সহায়োক এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করে। পাট শাক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ব্রাহ্মী শাক: তিতা স্বাদের এই শাকের রয়েছে বিশেষ কিছু ওষধি গুণ। স্বরভঙ্গ, বসন্ত রোগ, শিশুদের ঠাণ্ডা-কাশিতে এ শাক খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়। এই শাক স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ব্রাহ্মী শাক খেলে স্মৃতিশক্তি ভালো থাকে।
গ্রিন টি: বিজ্ঞাপনে নায়িকা যখন গ্রিন টি খেয়ে মিষ্টি মুখে হাসি হাসেন তখন মনে হয় যেন কতই সুস্বাদু এই চা। কিন্তু বাস্তবটা আলাদা। গ্রিন টি বেজায় তেতো আর কষালো স্বাদের হয়। কিন্তু এর পুষ্টিগুণ অসাধারণ। নিয়মিত গ্রিন টি খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ওজন কমে। গ্রিন টি-তে উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং পলিফেনোল ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
শাক: নিয়মিত পাতে রাখতে পারেন পালং শাক, সর্ষের শাক। পালং শাক সুস্বাদু। কিন্তু সর্ষে শাকে সামান্য তিতকুটে স্বাদ আছে। যদিও রান্নার পর খেতে ভালোই লাগে। এগুলি আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এবং মিনারেলে পরিপূর্ণ। খেলে শরীর ফিট থাকে।
সজনে ফুল: সজনে ডাটার মতোই উপকারী সজনে ফুল। তবে সারাবছর এই ফুল পাওয়া যায়না। বসন্তকালে দেখা পাওয়া যায় সজনে ফুলের। তাই সে সময় এই ফুল খেতে হবে নিয়মিত। সজনে ফুল খেলে দূরে থাকে অনেক রকম অসুখ। সর্দি-জ্বর, ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন, বসন্ত ইত্যাদি রোগ দূরে রাখতে পারে এই ফুল। এতে আছে প্রচুর পটাশিয়াম ও ক্যালশিয়াম। প্রসূতি মায়ের শরীরের জন্য উপকারী এই ফুল।
ডার্ক চকোলেট: নামে চকোলেট থাকলেও এটি আদতে তিতকুটে স্বাদের হয়। কিন্তু সাধারণ সুস্বাদু চকোলেটের থেকে হাজার গুণ ভালো। যাঁরা চকোলেট খেতে ভালোবাসেন অথচ ডায়াবিটিসের কারণে খেতে পারেন না তাঁরা কিন্তু অনায়াসেই ডার্ক চকোলেট খেতে পারেন। ডার্ক চকোলেটে থাকে জিঙ্ক, কপার, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, পলিফেনোল এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। রক্ত চলাচলে এটি এগুলি সাহায্য করে। শরীরে প্রদাহ কমায়।
তেলকুচা পাতা: শাক হিসেবে খেতে পারেন তেলকুচা পাতা। এই পাতার রস আমাদের মাথা ঠান্ডা রাখতেও ব্যবহার করা হয়। তেলকুচা পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এই পাতা খেতে পারেন। তবে তেলকুচা পাতা তেলে ভেজে খেলে এর পুষ্টিগুণ অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। তাই চেষ্টা করুন ঝোল রান্না করে খেতে। বাড়ির আশেপাশে কিংবা বাজারে মিলবে এই উপকারী পাতা।
তেতো খাবার: ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রতি দিন খাবারের পাতে রাখুন তেতো। হয় নিম পাতা, নয়তো উচ্ছে। এ সবের অ্যান্টিভাইরাল উপাদান শরীরকে মজবুত রাখে ও এই সময় বাতাসে উড়ে বেড়ানো রোগজীবাণুর সঙ্গে্ লড়তে সাহায্য করে।
আরটিভি/এফআই
আমড়া নাকি জাম্বুরা, কোনটি বেশি উপকারী
এখন রাস্তাঘাটে দেখা মিলছে দেশীয় ফল আমড়া ও জাম্বুরার। টক আর মিষ্টির স্বাদ পেতে ফল দুটো অনেকেরই বেশ পছন্দ। দুটো ফলই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আমড়া, জাম্বুরা দুটোরই অনেক উপকারিতা। ভিটামিন সি বেশি থাকায় দুটো ফলই শরীরের জন্য বেশ ভালো। প্রতিদিন অন্তত এর একটি ফল খেতে পারেন। ফল দুটি মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
আমড়া—
১ আমড়ায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। স্কার্ভি রোগের পাশাপাশি সর্দি-কাশি-জ্বরের উপশমেও আমড়া অত্যন্ত উপকারী।
২. শরীরের সুস্থতার জন্য প্রয়োজন ক্যালসিয়ামের। ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস আমড়া। আমড়া খেলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হয়। তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পর আমড়া খেতে পারেন। এতে হজম প্রক্রিয়া ভালো হবে।
৩. আমড়ায় কিছু ভেষজ গুণ আছে। আমড়া পিত্তনাশক ও কফনাশক হিসেবে কাজ করে।
৪. আমড়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে দেহকে নানা ঘাত-প্রতিঘাত থেকে রক্ষা করে।
৫. আমড়া মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। আমড়া খেলে অরুচি অনেকটাই কেটে যায় এবং খাবারের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়।
৬. প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় মাড়ি ও দাঁতের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কাজ করে।
৭. ফলটিতে প্রচুর আঁশ থাকায় বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
৮. এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৯. আমড়া খেলে অরুচি দূর হয়ে যায়, ক্ষুধা বাড়ে।
১০. ত্বক, নখ, চুল সুন্দর করে।
জাম্বুরা—
১. জাম্বুরা ঠাণ্ডা, সর্দি-জ্বর অনেক উপকারি। জাম্বুরাতে থাকা ভিটামিন সি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
২. জাম্বুরা খেলে পেটের হজমজনিত নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। এ ছাড়া জাম্বুরা ডায়াবেটিস, নিদ্রাহীনতা, মুখের ভেতরে ঘা, পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৩. জাম্বুরায় থাকা প্রোটিন এবং ফাইবার দীর্ঘ সময়ের জন্য পেটে থাকে। ফলে বাড়তি ক্ষুধাও লাগে না।
৪. খাবারের রুচি বাড়াতে জাম্বুরা বেশ কার্যকর। জাম্বুরায় প্রচুর পরিমাণে পানি ও ভিটামিন সি থাকে। ফলে নিয়মিত ফলটি খেলে ভালো থাকবে আপনার ত্বক।
৫. জাম্বুরা শরীরের বাড়তি চর্বিকে ভেঙে ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই যারা ওজন কমাতে চান, তারা জাম্বুরা খেতে পারেন।
৬. জাম্বুরায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৭. এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহে ক্যানসারের জীবাণু প্রতিহত করে।
৮. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে জাম্বুরার রস সাহায্য করে।
৯. জাম্বুরায় থাকা ভিটামিন সি ও বি হাড়, দাঁত, ত্বক, চুলে পুষ্টি জোগায়।
১০. রক্তনালির সংকোচন-প্রসারণ ক্ষমতা বাড়ায়। ওজন কমাতে সাহায্য করে।
আরটিভি/এফআই/এআর