বাচ্চাদের কিছু না কিছু সমস্যা লেগেই থাকে। আর সবথেকে বেশি তারা যে সমস্যার অভিযোগ করে, তা হল পেটে ব্যথা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ পেট ব্যথা জটিল কিছু নয়। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে পেট ব্যথা জটিল সমস্যার ইঙ্গিত করে। কাজেই কখন আপনার বাচ্চাকে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে তা জানা উচিত।
অভিভাবকরা বাচ্চার যে সমস্যার জন্য চিকিৎসকের কাছে আসেন তার অন্যতম হচ্ছে পেট ব্যথা।
তবে মনে রাখবেন, শুধুমাত্র ওষুধ খাইয়ে তাকে এই সমস্যা থেকে একবারে মুক্তি দিতে পারবেন না। বরং এই পরিস্থিতিতে তার ডায়েটে থেকে এমন কিছু খাবারকে বের করে দিতে হবে, যেগুলো এই সমস্যা তৈরি করে। ঠিক কোন কোন খাবার এক্ষেত্রে পেটে ব্যথার কারণ জেনে নিন। তারপর এসব খাবারের থেকে সন্তানের দূরত্ব বাড়ান। তাতেই সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পাবে ছোট্ট সোনা।
বিরিয়ানি: ছোট থেকে বড়, সবাই মাঝে মধ্যেই বিরিয়ানি খেয়ে করছে রসনাতৃপ্তি। আর এই ভুলের মাশুল গুনছে তাদের শরীর। বিশেষত, ছোটরা বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য বেশি সমস্যায় পড়ছে। কারণ, এতে রয়েছে ফ্যাট এবং একাধিক ক্ষতিকর মশলা। আর এসব উপাদান পেটের হাল বিগড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তাই ছোট্ট সোনাকে আজ থেকেই এই খাবার খাওয়ার নেশা ছাড়ান।
বাচ্চা যেভাবে বুঝবে তার পেটে ব্যথা
- আপনার বাচ্চা যদি কথা বলতে পারে তবে সে তার ব্যথার কথা প্রকাশ করতে পারবে।
- গোটা পেট বা পেটের অর্ধেকের বেশি অংশজুড়ে ব্যথা থাকলে। এই ব্যথা স্টমাক ভাইরাস, বদহজম, গ্যাস, পায়খানা বন্ধ থাকলে হতে পারে। যদি পেট মোচড়ায় তবে তা গ্যাস এর জন্য হতে পারে।
- পেট যদি কামড়ায় এবং হঠাৎ ব্যথা শুরু হয় এবং হঠাৎ ভালো হয়ে যায়। তারপর আবার শুরু হয়। এটাকে বলা হয় ‘ওয়েবি পেইন’। এই ব্যথা প্রায়শই মারাত্মক হয়ে থাকে।
- আপনার বাচ্চা যদি অর্ধেক পেটের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ব্যথা চিহ্নিত করে তবে তা এপেন্ডিসাইটিস, পিত্তথলীয় সমস্যা, বা পেটের আলসারজনিত সমস্যা হতে পারে। বাচ্চা কথা বলতে না পারলে তার পেটে ব্যথা আছে কি নাই তা বুঝা কষ্টকর। এক্ষেত্রে বাবা-মা হিসেবে আপনার পর্যবেক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- বাচ্চা যদি কান্নাকাটি করতে থাকে। যা অন্যান্য দিনের চেয়ে আলাদা।
- বাচ্চা যদি পা ওপরে তুলে পেটের দিকে নিয়ে আসে।
- বাচ্চার খাবারের পরিমাণ কমে গেলে।
করণীয়
- ব্যথা কমানোর জন্য নিজে থেকে প্যারাসিটেমল, আইরোপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দেবেন না।
- কার্বোনেটেড বেভারেজ দেবেন না।
- চর্বিযুক্ত খাবার বন্ধ রাখবেন।
- টমেটো, লেবুজাতীয় খাবার দেবেন না।
- চকলেট ও অন্যান্য দুগ্ধজাতীয় খাবার বন্ধ রাখতে হবে।
পেট ব্যথা প্রতিরোধে করণীয়
- চর্বিযুক্ত ও তৈলাক্ত খাবার বাচ্চাকে কম খাওয়ান।
- প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ পানি খাওয়ান।
- অল্প পরিমাণ খাবার বার বার খাওয়ান।
- প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ান।
- কখন পেটে ব্যথার জন্য চিকিৎসকের কাছে যাবেন
- বাচ্চার বয়স যদি তিন মাসের কম হয় ও বাচ্চার যদি ডায়রিয়া ও বমি থাকে।
- বাচ্চা যদি তিন দিনের বেশি সময় পায়খানা না করে ও পেটে ব্যথা থাকে।
- যদি রক্ত বমি করে ও পায়খানার সঙ্গে রক্ত যায়।
- পেট শক্ত হয়ে গেলে।
- ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পেট ব্যথা না কমলে।
- পেট ব্যথার সঙ্গে যদি ডায়রিয়াসহ জ্বর থাকে।
- পেট ব্যথা ও শ্বাস নিতে কষ্ট হলে।
- পেটে কোনো আঘাত পেলে।