হাঙ্গেরিতে উচ্চ শিক্ষা, চাকরি ও বসবাসের সুযোগ
হাঙ্গেরি ইউরোপের সেনজেনভুক্ত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী একটি রাষ্ট্র। হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্ট যা হাঙ্গেরির বৃহত্তম শহর ও দানিউব নদীর তীরে অবস্থিত। পৃথিবীতে উন্নত, সুন্দর ও বসবাসযোগ্য শহরের মধ্যে বুদাপেস্ট অন্যতম। হাঙ্গেরি থেকে অন্যান্য নিকটবর্তী দেশগুলো হচ্ছে জার্মানি, অষ্ট্রিয়া, রোমানিয়া ও ক্রোয়েশিয়া। হাঙ্গেরি NATD, EU, DECD সদস্যভুক্ত একটি দেশ।
পড়াশোনা:
পৃথিবীর বুকে অন্যতম বেশ কিছু প্রাচীন বিশ্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় হাঙ্গেরিতে অবস্থিত যেগুলো ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিং এ প্রথম সারির দিকে এবং তাদের পড়াশোনার অনবদ্য ও সর্বত্র গ্রহণযোগ্য। খুব কম খরচে ইউরোপের এই দেশে আন্তর্জাতিক মানের উচ্চ শিক্ষার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। এখানে ইংরেজি ভাষা ও হাঙ্গেরিয়ান ভাষায় পড়াশোনা পরিচালনা করা হয়।
সুযোগ সুবিধা:
১। টিউশন ফি ইউরোপের অন্যান্য দেশের থেকে অনেক কম।
২। প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের উন্নত ল্যাব, রিসার্চ ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে। যা পড়াশোনা শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে চাকরিতে নিয়োগে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে।
৩। হাঙ্গেরিতে পড়াশোনার পাশাপাশি রয়েছে পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ যা দিয়ে ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়াশোনা ও আবাসন খরচ মিটাতে পারে এবং বিশ্ববিদ্যালয়য়ে ছুটির সময়ে ফুল-টাইম কাজের সুযোগ পায়।
বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য হাঙ্গেরি
বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষস্থানীয় দেশের মধ্যে রয়েছে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু এসব দেশের পড়াশোনা খরচ অনেক বেশী হওয়ায় মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পরিবারে পক্ষে প্রায়শই বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। অন্য একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিগত বছরে উক্ত দেশেগুলোর ভিসা দেয়ার পরিমাণ খুব কম এবং খুবই উদ্বেগজনক। অপর পক্ষে হাঙ্গেরি সবসময় বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি খুবই বন্ধুশুলভ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে তাদের মেধা দিয়ে।
হাঙ্গেরি একটি সেনজেনভুক্ত দেশ, তাই শিক্ষার্থীরা হাঙ্গেরির ভিসা প্রাপ্তির মাধ্যমে সে সহজে ইউরোপের ২৬টি দেশে যাতায়াত করতে পারে।
হাঙ্গেরি বিশ্ববিদ্যালয় যখন ছুটি থাকে, একটি স্টুডেন্ট তখন অন্যান্য দেশে গিয়ে কাজ করার মাধ্যমে বাড়তি আয় করার সুযোগ পায়।
স্থায়ী বসবাস:
হাঙ্গেরি পড়াশোনা অন্যতম দিক হলো খুব সহজে স্থায়ীভাবে বসবাস এর নিশ্চয়তা। এছাড়া বাংলাদেশী অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা হাঙ্গেরিতে এসে ফ্রান্স, ইতালি, পর্তুগালে খুব সহজে গিয়ে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সহজেই বসবাস করার সুযোগ পায়।
পরিবার নিয়ে বসবাস এর সুযোগ থাকার দরুন দক্ষিণ এশিয়ার স্টুডেন্টদের কাছে, ইউরোপের এই ছোট দেশটি হয়ে উঠেছে সম্ভাবনার এক নতুন দুয়ার। বিগত বছর থেকে হাঙ্গেরি ভিসা প্রদানের বিষয়ে নমনীয়তা দেখিয়ে আসছে। ২০১৯ সালে হাঙ্গেরি দূতাবাস শতকরা ৯০% ভিসা প্রদান করে। সাম্প্রতিক একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে প্রচুর পরিমাণ শিক্ষার্থী হাঙ্গেরিতে পড়াশোনা করছে এবং এই ব্যাপারে হাঙ্গেরিতে বসবাসরত বাঙ্গালী, ব্যবসায়ী মো. সাদিকুর রহমান এরসাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, হাঙ্গেরিতে বাঙ্গালী কমিউনিউটি অনেক সমৃদ্ধ এবং সুনামের সাথে বসবাস করছে। তিনি আরও বলেন, বিগত বছরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শিক্ষার্থী হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষার জন্য এসেছে যা গর্ব করার মতো।
হাঙ্গেরিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বছরে ২ বা ৩ বার ভর্তির জন্য আবেদন করা যায়। এগুলো হলো এপ্রিল থেকে জুলাই, জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর। প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে তাদের নিজস্ব আবেদনের জন্য অনলাইন পোর্টাল, তাই নির্দিষ্ট সময়ে অনলাইন পোর্টালে আবেদন করতে হবে। এ বিষয়ে Looks Global Education Management Limited এর CEO প্রফেশনাল কনসালটেন্ট মো. সাইফুল ইসলাম শামিম বলেন, এ জন্য জরুরী বিষয় হলো শুরুতে স্টুডেন্ট ভিসার ধরন ঠিক করা এবং ভিসার আবেদন ফরম ডাউনলোড করে সেটা পূরণ করে অনলাইনেই আবেদন করা। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টসগুলো আগে থেকে গুছিয়ে রাখা প্রয়োজন। কী কী প্রস্তুতি ও ডকুমেন্টের প্রয়োজন পড়বে এমন প্রশ্নের উত্তরে সাইফুল ইসলাম বলেন,
পূরণকৃত অনলাইন/অফলাইন অ্যাপ্লিকেশান ফর্ম
ট্রান্সক্রিপ্ট ও সার্টিফিকেট- এসএসসি, এইচএসসি, ব্যাচেলর (মাস্টার্স এর জন্য), মাস্টার্স (পিএইচডি এর জন্য)
ইংলিশ প্রফিসিয়েন্সি সার্টিফিকেট (আইইএলটিএস/টোফেল)
মোটিভেশন লেটার ও সিভি
কাজের অভিজ্ঞতার সনদপত্র
গবেষণাপত্র/রিসার্চ পেপার
অ্যাপ্লিকেশন ফি পরিশোধের রশিদ
বি: দ্র: ইউনিভার্সিটির নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা সনদপত্র ও কাগজগুলো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে সত্যায়ন করতে হবে।
উপরিউক্ত কাগজগুলোসহ আবেদন করার পর ইউনিভার্সিটি চাইলে অনলাইন পরীক্ষা নিতে পারে। আপনার পরীক্ষা, একাডেমিক ও অন্যান্য যোগ্যতা বিবেচনা করে আপনাকে ভর্তির ফলাফল জানাবে। যদি ভর্তির জন্য নির্বাচিত হন তাহলে তারা আপনাকে একটি শর্তসাপেক্ষ পত্র (কন্ডিশনাল অফার লেটার) দিবে। যেখানে আপনাকে কিছু নির্দেশনা (টিউশন ফি + ব্যাংক একাউন্ট তথ্য) দেয়া থাকবে। আপনি টিউশন ফি পাঠালেই কেবল ফুল অফার লেটার পাবেন। টিউশন ফি প্রতি সেমিস্টারে ২৫০০ থেকে ১০,০০০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। এটা নির্ভর করে ইউনিভার্সিটি, কোর্স ও লেভেল এর উপর।
ভিসা সংক্রান্ত তথ্য
বাংলাদেশে হাঙ্গেরিয়ান এমব্যাসি না থাকায় ভিসার আবেদনের জন্য আপনাকে ভারতের নয়াদিল্লিস্থ হাঙ্গেরিয়ান এমব্যাসিতে যেতে হবে। ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২ সপ্তাহ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত লাগতে পারে।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
ভিসা/রেসিডেন্স পারমিট অ্যাপ্লিকেশান ফর্ম, ইউনিভার্সিটির অফার লেটার
সকল একাডেমিক ডকুমেন্টস (অবশ্যই সত্যায়িত)
বৈধ পাসপোর্ট (কমপক্ষে ১ বছরের মেয়াদ থাকতে হবে)
২ কপি ছবি , ভিসা ফি প্রায় ৫০ ইউরো
ট্র্যাভেল মেডিকেল ইন্স্যুরেন্স ও আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণাদি
কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক
উচ্চশিক্ষার পোর্টাল: http://studyinhungary.hu/
EMBASSY: https://delhi.mfa.gov.hu/eng/page/consular-information
হাঙ্গেরিতে উচ্চ শিক্ষার সম্ভাবনা এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বর্তমান প্রেক্ষাপট, ভিসা দেয়ার প্রবণতা, পড়াশোনা খরচ, পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে বসবাস এর জন্য হাঙ্গেরি হতে পারে আদর্শ দেশ।
তাই যে কোন অভিবাক/ ছাত্র-ছাত্রী বিনা খরচে তাদের আবেদন প্রক্রিয়ার সম্ভাবনা, হাঙ্গেরিতে উচ্চ শিক্ষার সকল ধরনের তথ্য নিতে জনাব সাইফুল ইসলাম শামিমের এর সাথে দেখা করতে পারেন তার Looks Global Education Management Limited এর ৯৯, ঢাকা ট্রেড সেন্টার(লেভেল-১৩), কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ অফিসে।অথবা তথ্যের জন্য ভিজিট করতে পারেনLooks Global Education Management Ltd. এর পেজ https://www.facebook.com/LooksGlobal/অথবা ফোনে প্রাথমিক তথ্য জানতে কল করুন +৮৮০২-৫৫০১১৯১৯, ০১৯৭৩ ৯৬৫৫২১ ও ০১৯৭৩ ৯৬৫৫২৫, নম্বরে।
বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন