ঢাকা

তরুণদের উদ্ভাবনী কার্যক্রমে এগিয়ে আসার আহ্বান নসরুল হামিদের

আরটিভি নিউজ

রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ , ০৩:১০ এএম


loading/img
ছবি : আরটিভি

দেশের সকল তরুণকে উদ্ভাবনী কার্যক্রমে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইয়াং বাংলা’ আয়োজিত পাওয়ার সেল ও গ্রিন ডেল্টা ইনস্যুওরেন্স কোম্পানির সহযোগিতায় উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা ‘বিচ্ছুরণ’-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

নসরুল হামিদ বলেন, তরুণদেরকে বলবো, আপনারা যদি বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে আরও বড় পরিসরে কাজ করতে চান, তাহলে পাওয়ার সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা নতুন চিন্তাকে গ্রহণ করতে চাই। এটা হলো বড় বিষয়। কোন ভয় নাই, সাহস রাখতে হবে। ভুল হবে। ভুল না হলে নতুন কিছু তৈরি হবে না।

বিজ্ঞাপন

গবেষণায় আগ্রহীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের এনার্জি রিসার্চ কাউন্সিল নামে একটি বিভাগ রয়েছে যেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগণ ও বিশ্ববিদ্যালয় সহযোগিতা নিতে পারে। আপনারা জানেন প্রতি বছর ২০ কোটি টাকার মত আমরা ফান্ড করি। ছোট যেই প্রজেক্টগুলো আরও বড় হতে চায়, গবেষণা করতে চায় আমরা তাদের ফান্ড করছি। হাজার হাজার ইঞ্জিনিয়ার দরকার আমাদের, হাজার হাজার ম্যানেজমেন্টের মানুষ দরকার।

ভবিষ্যতে এনার্জি সেভিং করতে হলে গবেষণার বিকল্প নেই জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ভবিষ্যতের জ্বালানি কেমন হবে তার জন্য তিনটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ- জ্বালানিটি ইফিসিয়েন্ট কিনা, আনইন্টারাপডেট কিনা এবং সাশ্রয়ী কিনা। এখন যে খরচ করে যানবাহন চালানো হয় বিদ্যুৎ চালিত যানবাহন হলে সেই খরচের পরিমাণ ৮০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব ছিলো। অর্থাৎ এখন ১০০ টাকা ভাড়া দিলে তখন সেটি হবে ২০ টাকা ভাড়া। যত দ্রুত আমরা সেখানে যেতে পারবো তত ইফিসিয়েন্ট হবো। আর এটি কার্বন নিঃসরণ 'জিরো পার্সেন্ট'।

নসরুল হামিদ আরও বলেন, এই আজকে যারা অংশ গ্রহণ করেছে। এখনই তাদের আইডিয়া গুলো বড় কিছু হয়ে যাবে সেটা আমরা আশা করি না। আমাদের লক্ষ্য মূলত তাদের আইডিয়া তৈরির অভ্যাস গড়ে তোলা। সেটা করলে ভবিষ্যতে তারা আরও ভালো ও বড় পরিসরের আইডিয়া তৈরি করতে পারবে। যা ভবিষ্যতে আমাদের কাজে আসবে।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে ফাইনাল পিচিং এর বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ডুয়েট এর কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল কাশেম, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক নার্গিস আক্তার এবং গ্রীন ডেল্টা ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লি. এর এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর এবং হেড অব ডিজিটাল বিজনেস মো. মনিরুজ্জামান খান।

বিজ্ঞাপন

এ সময় গ্রীন ডেল্টা ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ফারজানা চৌধুরী বলেন, আমরা চেয়েছি তরুণদের উদ্ভাবনী কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে। এ কারণেই বিচ্ছুরণের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। আশা করি বাংলাদেশের তরুণরা এ ধরণের উদ্ভোবনী কার্যক্রমের সঙ্গে আরও বেশি যুক্ত হবে এবং এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

বিজয়ী ও শীর্ষ বাছাই দলগুলোর হাতে পুরষ্কার তুলে দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) ট্রাস্টি নসরুল হামিদ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন- গ্রীন ডেল্টা ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ফারজানা চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাওয়ার সেল বিভাগের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া।

বিচ্ছুরণের আয়োজকরা জানান, স্মার্ট পাওয়ার এবং এনার্জির খোঁজে চলতি বছর অক্টোবরের শুরু থেকে আইডিয়া আহ্বান করা হয়। বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হলেও নিয়ম অনুসারে ১৮ বছর থেকে ৩৫ বছর বয়সী সকলকে আবেদনের সুযোগ দেয়া হয় বিচ্ছুরণে। নভেম্বর ২৬ তারিখ পর্যন্ত চলা এই আয়োজনে সারা দেশ থেকে ৭০০টির বেশি আইডিয়া জমা দেয় তরুণরা। সেখান থেকে যাচাই বাছাই শেষে শীর্ষ দলগুলোকে বাছাই করা হয়। সর্বশেষ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) পিচিং শেষে চূড়ান্ত বাছাই হওয়া দলগুলো অর্জন করে ৫ লাখ করে প্রাইজমানি।

স্মার্ট পাওয়ার এবং এনার্জিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় জানালো বিচ্ছুরণের বিজয়ী ৭ দল। তারুণ্যের প্লাটফর্ম ইয়াং বাংলা; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাওয়ার সেল এবং গ্রিন ডেল্টা ইনস্যুরেন্স কোম্পানির উদ্যোগে উদ্ভাবনী আইডিয়া প্রতিযোগিতা 'বিচ্ছুরণ' এর বিজয়ী ৭ দলের হাতে প্রাইজমানি ৫ লক্ষ টাকা এবং শীর্ষ বাছাই ২৩ দলের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেয় আয়োজকরা।

এবারের বিজয়ী দলগুলো হলো:

বিডি হাইওয়ে ট্রিবিউন: সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল আরাফের নেতৃত্বে কাজ করছে বিডি হাইওয়ে ট্রিবিউন। প্রটোটাইপ যন্ত্র নিয়ে বিচ্ছুরণের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে তারা।

দ্য অ্যালকেমিস্ট: মো. রিফাত খন্দকার ডুয়েট ক্যামিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।

সোল-কিল: খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি শেষ করেছেন সোল-কিলের উদ্যোক্তা সুমাইয়া আফরোজা। বর্তমানে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সহকারী প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করছেন তিনি।

স্মার্ট পাওয়ার প্রোডাকশন উইথ এ স্মার্ট ডাস্টবিন ফর স্মার্ট সিটি: খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যায় থেকে বিএসসি শেষ করে খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন তন্ময় বকশি।

টিম এপলোগ: ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির সিভিল অ্যান্ড এনভারমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জেফরিন রহমান নাহিনের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে টিম এপলোগ।

ডেভলোপমেন্ট অ্যান্ড অপটিমাইজেশন অব এ গ্রাভেটি পাওয়ারড ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেটর ইউজিং নিওডায়মিয়াম ম্যাগনেট কয়েল পাথ ওয়েস: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ (এনআইটিইআর) এর ট্রিপলি (ইইই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রবিউল আলম নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই আইডিয়ার।

'এনার্জি চেইন: ব্লক চেইন সলুশ্যান ফর পিটুপি এনার্জি ট্রেডিং ইউজিং লাইটওয়েট কনসেন্সাস মেকানিজম': ইউল্যাব সিএসসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাখোয়াত হোসেনের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে 'এনার্জি চেইন'।

 

 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |