এআই দিয়ে মৃত ব্যক্তির সঙ্গে কথোপকথন
চলতি বছর ‘ইটার্নাল ইউ’ নামে একটি তথ্যচিত্র মুক্তি পেয়েছে। এতে মৃত ব্যক্তির সঙ্গে এআই-এর মাধ্যমে যোগাযোগের সম্ভাবনা ও তার প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে এমন অভিজ্ঞতা নেওয়া ব্যক্তিরা কথা বলেছেন এই তথ্যচিত্রে৷ একজন মৃত ব্যক্তির মতো কাউকে সৃষ্টি করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। এআই ও ডিপফেক প্রযুক্তির কারণে এগুলো প্রায় বাস্তবের মতো হয়ে উঠছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রে শোক প্রযুক্তি ইতিমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
মার্কিন নাগরিক ক্রিস্টি অ্যাঞ্জেল এভাবে তার মৃত প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলেছেন৷ তার আগে তার প্রেমিকার কিছু ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে বটকে প্রশিক্ষণ দিতে হয়েছে। কথা বলার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানান, অভিজ্ঞতাটা ভয়ংকর ছিল। কিছু জিনিস ছিল যা আমাকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিল, এবং এমন অনেককিছু বলা হয়েছিল যা আমি শুনতে চাইনি, জানান তিনি।
ইটার্নাল ইউ নামক তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন দুই জার্মান পরিচালক। তাদের একজন মরিৎস রিজেভিক বলেন, মানুষ সবসময় মানুষ হওয়ার ভান করে এমন যন্ত্রের সঙ্গে কথা বলার প্রভাবকে অবমূল্যায়ন করে। একজন মৃত ব্যক্তির ডেটা সেট থেকে কিছু অংশ বাছাই করে এআই তা মানুষের সামনে তুলে ধরে। যেমন আপনি একসঙ্গে শুনেছেন এমন গান, কিংবা একসাথে দেখেছেন এমন সিনেমার কথা বলে।
এ ধরনের এআই-এর মনস্তাত্ত্বিক পরিণতি নিয়ে এখনও গবেষণা হয়নি। সে কারণে সমাজবিজ্ঞানী মাটিয়াস মাইৎসলার জানতে চান, এটি কীভাবে শোককে প্রভাবিত করে।
মাইৎসলার বলেন, আপনি জানেন না, অবতার পরবর্তীতে কী বলবে, কিংবা এটা কীভাবে অরিজিনাল ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করবে। এটা কি মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে মিথ্যা বলবে, হয়ত তাদের নিয়ে আপনার স্মৃতিগুলিও বিকৃত করবে? আর ম্যানিপুলেশন? কারণ, একজন-কেতো ঐ অবতারকে কনফিগার করতে হবে। এখানে কী স্বার্থ জড়িয়ে আছে? আর এটা যদি হয় একটা কোম্পানি যার অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য আছে, তাহলে শোকের ক্ষেত্রে এটা উপকারী নাও হতে পারে।
ভবিষ্যতে হয়ত ডিজিটাল অবতার আমাদের বিদায় বলতে কিংবা স্মরণ করতে সহায়তা করতে পারে৷ তবে নিশ্চিতভাবেই এটি এআই এর মান এবং আপনি কীভাবে কাজে লাগাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে৷ তবে এ ধরনের অবতারের উপর খুব বেশি ভরসা করার বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা৷
আরটিভি/এএইচ
মন্তব্য করুন