সুইজারল্যান্ডের গির্জায় এআই যিশু!

ডয়চে ভেলে

বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ , ১১:২৯ পিএম


এআই
ছবি : সংগৃহীত

এবার ধর্মের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর নাম জড়িয়ে গেল। কারণ, সুইজারল্যান্ডের লুসার্ন শহরের এক গির্জায় মানুষ এআই যিশুর সঙ্গে কথা বলছে। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ তার সঙ্গে কথা বলে সন্তোষ প্রকাশের কথাও জানিয়েছে। তবে অনেকে সমালোচনাও করছেন।

বিজ্ঞাপন

পিটার্স চ্যাপেলে স্বীকারোক্তির সময় একজন যাজকের পরিবর্তে অনুতপ্ত ব্যক্তিদের স্বাগত জানায় তার কম্পিউটারসহ কিছু প্রযুক্তি, যার মূল্য কয়েক হাজার ইউরো। আর অন্য পাশে থাকা স্ক্রিনে যিশুর মতো একজন ভেসে ওঠেন, যিনি সান্ত্বনা, আনন্দ ও বিশ্বাসের কথা বলেন। এখন পর্যন্ত যিশু শুধুমাত্র ভক্তিমূলক বস্তু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন: নীরব আর দৃঢ়, যদিও প্রার্থনা ও ধ্যানের জন্য সবসময় তার কাছে যাওয়া যায়।

তবে পিটার্স চ্যাপেলের এআই যিশু এখন কথা বলছেন। তার কাছে মেয়েদের কেন যাজক হতে দেওয়া হয় না প্রশ্ন করলে সে বলে, ধর্মগ্রন্থে বলা আছে, গির্জায় যার যার কাজ নির্দিষ্ট করা আছে। ঈশ্বরের পরিকল্পনায় প্রতিটি দায়িত্ব ও কাজের গুরুত্ব আছে।

বিজ্ঞাপন

উত্তরের মধ্যে অনেক প্রশ্ন থাকে, তারপরও অনুপ্রেরণামূলক। একজন ধর্মপ্রাণ নারী এআই যিশুর সঙ্গে কথা বলার পর জানান, আমি যেভাবে চলছি সেটা ঠিক আছে বলে তিনি আমাকে নিশ্চিত করেছেন। আমার মনে যে প্রশ্ন ছিল তার উত্তর দিয়েও সহায়তা করেছেন।

যেমন আমি জানতে চেয়েছিলাম, আমি কীভাবে অন্য মানুষকে তার কাছাকাছি আসতে উৎসাহিত করতে পারি।

আরেকজন বলেন, আমি অবাক হয়েছি। ব্যাপারটা অনেক সহজ ছিল। যদিও এটা একটা যন্ত্র ছিল, তারপরও এটা আমাকে অনেক পরামর্শ দিয়েছে- খ্রিস্টান ধর্মের মতাদর্শের ভিত্তিতেও। আমার মনে হয়েছে তিনি আমার সমস্যা বোঝার চেষ্টা করেছেন। ধর্মেও ডিজিটাল বিপ্লবের ছোঁয়া লেগেছে।

বিজ্ঞাপন

এই শহরের নাম শুনলে মানুষের সাধারণত প্রথমে লেক ও পাহাড় ঘেরা একটি সুন্দর এলাকার কথা মনে পড়ে। ঐতিহাসিক বিভিন্ন ভবন দেখতে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ঐ শহরে যান। কিন্তু লুসার্ন ভবিষ্যতের দিকেও তাকায়- সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ বেশ সমৃদ্ধ। সেখানেই এআই যিশুর জন্ম হয়েছে। মার্কো শ্মিড সেটি তৈরি করেছেন। প্রযুক্তিপ্রেমী এই মানুষটি পিটার্স চ্যাপেলের একজন ধর্মতত্ত্ববিদ।

তিনি বলেন, আমরা এখানে একটা পরীক্ষা করছি। এআই এর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা দেওয়ার মাধ্যমে আমরা মানুষের মধ্যে আলোচনা শুরু করতে চেয়েছি। এভাবে আমরা একে অপরের সঙ্গে এআই নিয়ে কথা বলার ভিত্তিটা গড়ে দিতে চেয়েছি। এআই যিশুর সঙ্গে কথা বলার পর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা নিয়ে বের হয়েছেন।

লুসার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নীতিশাস্ত্রের অধ্যাপক পেটার কির্শশ্ল্যাগার প্রকল্পটি নিয়ে খুশি না হলেও মনে করছেন, এটি চিন্তার খোরাক জোগাচ্ছে। তিনি বলেন, যখন বিশ্বাস ও যাজকের সেবা পাওয়ার কথা আসবে তখন আমাদের সতর্ক হতে হবে। ধর্মের অর্থ খোঁজার সময়ও। এই বিষয়টায় যন্ত্রের চেয়ে আমরা মানুষেরা অনেক বেশি দক্ষ। ফলে এসব বিষয় আমাদেরই করা উচিত।

পোপ ফ্রান্সিসও এখনও এই বিষয়ে কথা বলেননি। তবে চ্যাপেলের কর্মকাণ্ড নিয়ে অনেক সমালোচনাও হচ্ছে। যেমন এই লেখা বলছে: পরিণতি ভোগ করতে হবে। 

আরটিভি/এএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission