টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফল্যের সঙ্গে শেষ হলো ‘আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত উৎসব-২০১৬’র আয়োজন। এতে যোগ দেন ৭ দেশের একশরও বেশি শিল্পী। ৩ দিনব্যাপী মাটির গানের উৎসব বৃহস্পতিবার শুরু হয়ে শেষ হয় শনিবার গভীর রাতে। প্রতিদিন উদ্দীপনা নিয়ে ফোকফেস্ট উপভোগ করেছেন লাখো দর্শক।
শনিবার ছিল বাংলাদেশের সুনীল কর্মকার, ইসলাম উদ্দিন কিস্সাকার, বারী সিদ্দিকী এবং তাপস অ্যান্ড ফ্রেন্ডস্’র দারুণ পরিবেশনা। দেশের বাইরের শিল্পীর মধ্যে ছিলেন নুরান সিস্টার্স, স্যাম মিল্স ও সুশীলা রহমান এবং পবন দাস বাউল।
শুরুটা হয় নেত্রকোনার বাউল সুনীল কর্মকারের উন্মাদনায়। তার সঙ্গে যোগ দেন শিশুশিল্পী শফিকুল ইসলাম। তাদের গাওয়া ‘কী সুখে জীবন কাটাবো’, ‘কত আশা ছিল রে বন্ধু’ গানগুলো মনে গেঁথেছে।
এরপর মঞ্চে আসেন কিশোরগঞ্জের পালাকার ইসলাম উদ্দিন কিস্সাকার। তিনি গেয়ে শোনান শাহ্ আবদুল করিমের ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’ গানটি। দর্শকরাও তার সঙ্গে মেতে ওঠেন জনপ্রিয় এ গানে। মনে হচ্ছিল যেনো, আজ সবাই শিল্পী।
দেশীয় লোকসঙ্গীতের তুমুল জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী বারী সিদ্দিকী তার ‘পূবালী বাতাসে’, ‘সোয়াচান পাখি’, ‘রজনী’, ‘মালিক ছাড়া গতি নাই’ গান গেয়ে আরো মাতিয়ে তুলেন উৎসব। যদিও শেষদিনের আয়োজনের অন্যতম সফল শিল্পী নুরান সিস্টার্স। ওস্তাদ গুলশান মীরের দু’কন্যা জ্যোতি ও সুলতানা নুরানের ‘আল্লাহু রব’, ‘দামাদম মাস্ত কালান্দার’ গানের সময় স্টেডিয়ামজুড়ে করতালির ঝড় ওঠে।
তবে বাংলাদেশের তাপস ও তার ব্যান্ড ‘মন আমার দেহঘড়ি’, ‘আছেন আমার মোক্তার’, ‘বন্ধে মায়া লাগাইছে’সহ জনপ্রিয় বেশ কিছু গান করলেও দর্শকদের তৃপ্ত করতে পারেনি। তাদের পরিবেশনার শেষ দিকে কদ্দুস বয়াতিকে মঞ্চে উঠালেও মন গলেনি দর্শকদের।
শেষদিনের মূল আকর্ষণ ছিলেন পবন দাস বাউল। রাত দেড়টায় অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মঞ্চে ওঠেন তিনি। ‘গুরু তো দয়াল বটে’ গান দিয়ে শুরু করেন তার পরিবেশনা। একে একে ‘দে দে পাল তুলে দে’, ‘খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধো মন’ গেয়ে আবারো দর্শক মন জয় করে নেন এ গুণিশিল্পী। শেষ করেন শ্রোতাপ্রিয় গান ‘তোমার দিল কি দয়া হয় না’ গেয়ে।
ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত আড়াইটা। শেষ হয় মাটির গান বলে পরিচিত লোকসঙ্গীত উৎসবের এবারের আয়োজন। তবে আয়োজন শেষ হলেও গানের রেশ থেকে যাবে হয়তো আগামী উৎসব পর্যন্ত। মাটির গান এমন করেই বেঁচে থাক মাটি ও মানুষের হৃদয়ে।
• সুরের মূর্ছনায় হারানোর রাত
• এ শুধু গানের রাত
এইচএম/ এস