নিজেদের শততম টেস্টের প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ১২৯ রানে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভালোই জবাব দিচ্ছে স্বাগতিকরা। তৃতীয় দিন শেষে বিনা উইকেটে ৫৪ রান করেছে দলটি। দিমুথ করুনারত্নে ও উপুল থারাঙ্গা দু’জনই ২৫ রান করে অপরাজিত আছেন। তবে দিন শেষে এখনো ৭৫ রানে এগিয়ে মুশফিকবাহিনী।
এর আগে স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংসে দেয়া ৩৩৮ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিনে ৪৬৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এ সুবাদে ১২৯ রানের লিড পায় টাইগাররা।
সাকিব আল হাসানের মহাকাব্যিক সেঞ্চুরি, অভিষিক্ত মোসাদ্দেক হোসেন ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের হাফসেঞ্চুরিতে তৃতীয় দিনটি দারুণ কাটে বাংলাদেশের।
শুক্রবার সকালে ৫ উইকেটে ২১৪ রান নিয়ে দিন শুরু করেন মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। বিপর্যয়ে পড়া দলকে সেখান থেকে তারা ভালোমতোই টেনে তুলেন। নিজেদের ইনিংসের ৭৭তম ওভারে চার মেরে ক্যারিয়ারের ১৭তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। কিন্তু এর পর বেশিক্ষণ ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি তিনি। দলীয় ২৯০ রানে সুরঙ্গা লাকমলের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এর আগে সাকিবের সঙ্গে গড়েন ৯২ রানের জুটি।
মুশফিক বিদায় নিলেও অভিষিক্ত মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে হাল ধরেন সাকিব। মোসাদ্দেকও তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন। ধীরে ধীরে তারা এগিয়ে যান ইতিহাস রচনার পথে। এরই মধ্যে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন সাকিব আল হাসান। হাফসেঞ্চুরি পাবার পর একটু মারমুখী হয়ে নিজের রান বাড়িয়ে নেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। এর ফাঁকে রান তোলায় কম যাননি মোসাদ্দেকও। সাকিবের কিছুক্ষণ পরই হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। এ নিয়ে ১৪তম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্ট অভিষেকে হাফসেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব গড়েন সম্ভাবনাময় ব্যাটিং অলরাউন্ডার। অভিষেকে আটে নেমে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ডও এখন তার দখলে।
মোসাদ্দেকের পর ইতিহাসের পাতায় ঠাঁয় করে নেন সাকিব আল হাসান। তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি। পাশাপাশি শততম টেস্টে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৫৯ বলে ১০ চারের সাহায্য ১১৬ রান করে সান্দাকানের বলে চান্দিমালের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন তিনি। তবে একপ্রান্ত আগলে রাখেন মোসাদ্দেক হোসেন।
সাকিব যখন সাজঘরে ফেরেন তখন দলের স্কোর ৭ উইকেটে ৪২১ রান। এতে টাইগারদের লিড দাঁড়ায় ৮৩ রান। এর কিছুক্ষণ পরই অনন্য ইতিহাস রচনা করে বাংলাদেশ। ১২৮ ওভারে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ৪৫৪। যা শততম টেস্টে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর আগের সর্বোচ্চ ইনিংসটি শতবর্ষ পুরনো। ১৯১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪৪৮ রান করে অস্ট্রেলিয়া।
ইতিহাস গড়ার পরের ওভারেই খেই হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ওই ওভারের প্রথম দু’বলেই ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমান। তারা রঙ্গনা হেরাথের এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন। মিরাজ করেন ২৪ রান। আর মুস্তাফিজ কোনো রানের খাতায় খুলতে পারেননি।
নবম উইকেট পতনের পর বেশিক্ষণ ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি মোসাদ্দেকও। রঙ্গনা হেরাথকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি। তার আগে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ১৫৫ বলে খেলেন ৭৫ রানের অসাধারণ ইনিংস। এরই সঙ্গে ৪৬৭ রানে থামে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।
নিন্দুকদের ধুয়ে দিলেন সাকিবের স্ত্রী!
শততম টেস্টে সাকিবের মহাকাব্যিক সেঞ্চুরি
দ্বিতীয় দিনটা রাঙাতে পারলো না বাংলাদেশ
ওয়াই/ডিএইচ