বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ওয়ানডে ফরম্যাটের ২০২২-২৩ মৌসুমের ফাইনালে উঠেছিল বিসিবি উত্তরাঞ্চল ও বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল। যেখানে প্রতিযোগিতায় আগের সব ম্যাচে জেতা মেহেদি মিরাজ-নাসির হোসেনদের দক্ষিণাঞ্চলকে রুদ্ধশ্বাস ছড়ানো ম্যাচের শেষ বলে ৬ রানে হারিয়েছে লিটন দাস-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের উত্তরাঞ্চল। যার সুবাদে এবারের বিসিএলের শিরোপা ঘরে তুলল উত্তরাঞ্চল।
রোববার (২৭ নভেম্বর) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিবারাত্রির ফাইনাল ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল উত্তরাঞ্চল। তবে দলীয় ৪৫ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল দলটি। শুরুতেই লিটন দাস ও শাহাদাত হোসেনের বিদায়ের পর ইতিবাচক ক্রিকেট খেলা সৈকত আলীও ফেরেন ৩০ বলে ২২ রান করে।
সেখান থেকে ফজলে রাব্বীকে সঙে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব নেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। তবে মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে সে জুটি ভাঙেন নাসির হোসেন। ৫৩ বলে ৩৯ রান করা এই ব্যাটারের বিদায়ে ভাঙে রাব্বীর সঙ্গে ৭৮ রানের জুটি। ইনিংসের ৪২তম ওভারে মিরাজের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে বিদায় নেন ১১৪ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৬৫ রান করা ফজলে রাব্বী।
শেষ দিকে আকবর আলীর ৪১ বলে ৪৪ রানে ও শামীম হোসেনের ২০ বলে ৩৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রান করে উত্তরাঞ্চল। বোলিংয়ে ৩ উইকেট নেন শরীফুল। এছাড়া মিরাজের শিকার ২টি উইকেট।
জবাবে রান তাড়া করতে নেমে আগের তিন ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো মোহাম্মদ নাঈম দলীয় ১৭ রানে বিদায় নেন রান আউটের ফাঁদে পড়ে। বিদায়ের আগে ২৪ বলে ১১ রান করেন এই ব্যাটার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এনামুল হক বিজয় ও জাকির হোসেন মাত্র ১২.৪ ওভারেই শতরানের জুটি গড়ে জয়ের পথে নিয়ে যান।
তবে নাইমের মতো জাকিরকেও রানআউট হয়ে ফিরতে হয় অপরপ্রান্তে থাকা এনামুলের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝিতে। বিদায়ের আগে ৩৯ বলে ৪টি চারের সঙ্গে ২ ছক্কায় ৪২ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তার বিদায়ের ১ বল পর রিপন মণ্ডলের বলে এলবিডব্লু হন নাঈম ইসলাম। এরপর আরেক স্পিনার রকিবুল হাসানের বলে ৪৮ বলে ৫৯ রান করে আউট হন ওপেনার এনামুলও।
মূলত বিজয়ের বিদায়ের পরই দক্ষিণাঞ্চলের ব্যাটিংয়ে ধস নামে। একে একে বিদায় নেন তৌহিদ হৃদয় ও অধিনায়ক মিরাজ। এই দুই ব্যাটারকে ফেরান রকিবুল। এমন কঠিন মুহূর্তে বিষাদ হয়ে দাঁড়ায় জিয়াউর রহমানের ইনজুরি। নাসির হোসেনের মারা শট সরাসরি এসে লাগে ননস্ট্রাইকে থাকা জিয়ার হাতে। এতে শেষ পর্যন্ত উঠেই যেতে হয় এই অলরাউন্ডারকে।
এরপরও ৯ নম্বরে নামা নাসুম আহমেদকে নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলকে জয়ের পথ দেখান নাসির হোসেন। তারা দুজনে মিলে দলের সঙ্গে আরও ৮৫ রান যোগ করেন। তবে রকিবুলের বলে আউট হয়ে যান নাসুম। তার আগে ৭০ বলে ৩৮ রান করেন এই লো অর্ডার ব্যাটার। উপায় না পেয়ে আবারও চোট নিয়েও মাঠে নামেন জিয়াউর রহমান। তবে মাত্র ৬ বল খেলেই সাইফউদ্দিনের বলে ক্যাচ দেন তিনি।
তবুও একপ্রান্তে নাসির হোসেন থাকায় জয়ের স্বপ্ন দেখছিল দক্ষিণাঞ্চল। তবে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১০ রান দরকার ছিল দক্ষিণাঞ্চলের। তবে প্রথম বলেই রান আউটের কবলে পড়ে বিদায় নেন নাসির। ৮৮ বলে লড়াকু ৬১ রানের ইনিংস খেলেও শেষ পর্যন্ত দলকে জয়বঞ্চিত করেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। যার কারণে ৬ রানের জয় পায় উত্তরাঞ্চল।