• ঢাকা রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
logo
দুর্ঘটনা কমাতে ফ্রান্সে প্রচারণা- ‘নারীর মতো গাড়ি চালান’
যে কারণে হয় হিটস্ট্রোক, প্রতিরোধে যা করবেন
প্রচণ্ড গরমে মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত। আর এই পরিস্থিতিতে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই এ বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকলে সহজেই সেই পরিস্থিতি সামলানো যায়। হিটস্ট্রোক বা হাইপারথার্মিয়াতে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে বাড়তে থাকে। আমাদের শরীর তখন আর এই হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া তাপমাত্রাকে কন্ট্রোল করে শরীরকে ঠান্ডা করতে পারে না। এই সময় শরীরের তাপমাত্রা মাত্র ১০-১৫ মিনিটে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটেরও বেশি হয়ে যায় একে হিটস্ট্রোক বলে। এ সময় শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছরে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ হিটস্ট্রোক-এ মারা যায়। অনেক সময় ধীরে ধীরে এটি ঘটে থাকে, যদিও হুট করে ঘটার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। আমাদের দেশেও এই রোগ এখন প্রায়ই দেখা দেয় কারণ প্রতিনিয়তই পরিবেশের তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। হিটস্ট্রোকের কারণ, লক্ষণ ও বাঁচার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন। হিটস্ট্রোক-এর কারণ, লক্ষণ ও এর প্রতিকার- হিটস্ট্রোক: হিটস্ট্রোক বা সানস্ট্রোক এক ধরনের অসুস্থতা, যা অত্যধিক গরমের কারণে হয়ে থাকে। এই অসুখে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ᱸ ফারেনহাইট-এর বেশি এবং সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছরে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ হিটস্ট্রোক-এ মারা যায়। অনেক সময় ধীরে ধীরে এটি ঘটে থাকে, যদিও হুট করে ঘটার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। আমাদের দেশেও এই রোগ এখন প্রায়ই দেখা দেয় কারণ প্রতিনিয়তই পরিবেশের তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। হিটস্ট্রোক কয়েকটি কারণে হতে পারে। চলুন কারণগুলো দেখে নেই- পারিপার্শ্বিক উচ্চ তাপমাত্রা শরীরে পানিশূন্যতা বা মিনারেলসের অভাব কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায়, যেমন- ডাই-ইউরেটিক্স, বিটা ব্লকারস, অ্যালকোহল হার্টের বা স্কিনের অসুখে লক্ষণ বা উপসর্গ- হিটস্ট্রোকে প্রাথমিক কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে। গরমে হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক পর্যায়ে এটি ধরতে পারলে অনেক জটিল অবস্থা থেকে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো হিটস্ট্রোক-এ দেখা যায় শরীরের অত্যধিক তাপমাত্রা মাথাব্যথা দুর্বলতা ঝিমুনি বমি বমি ভাব হার্টবিট বেড়ে যাওয়া তবে রোগীর অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে গেলে আরও কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন- চামড়ার রং লালচে হয়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীনতা হাঁটতে অসুবিধা হওয়া চোখের মণি বড় হওয়া বমি হওয়া ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া খিঁচুনি অজ্ঞান হয়ে যাওয়া প্রাথমিক চিকিৎসা- এই গরমে কড়া রোদ ও ভিড় এড়িয়ে চলুন। যেহেতু এটি একটি জরুরি অবস্থা, তাই এর চিকিৎসাও দ্রুত হওয়া প্রয়োজন। এই রকম পরিস্থিতিতে প্রথমেই যা করা দরকার তা হলো, রোগীর শরীর ঠান্ডা করা এবং খোলা বা ফাঁকা স্থানে নিয়ে যাওয়া। ভারি পোশাক পরে থাকলে সেটা চেইঞ্জ করে পাতলা সুতি কাপড়ের পোশাক পরিয়ে দিন। ঠান্ডা বাতাসের ব্যবস্থা করুন, প্রয়োজন মনে হলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিন। রোগীর সুস্থ হতে কয়েকদিন পর্যন্ত সময় লাগবে সেটা এর তীব্রতা বা ধরনের ওপর নির্ভর করে। যদি সঠিক চিকিৎসা করা না হয় তাহলে হিটস্ট্রোক রোগীর মস্তিষ্ক , পেশী, কিডনি এবং অন্যান্য অঙ্গগুলোকেও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা শুধুমাত্র শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য কিছু না করে বরং পানি বা লিকুইড জাতীয় খাবার গ্রহণের ওপর জোর দিতে বলেন। প্রতিকার- হেলদি ও লিকুইড খাবার রাখুন ডায়েটে: আমাদের মধ্যে যারা বাইরে রোদে কাজ করি বা এক ঘন্টার বেশি ব্যায়াম করি তাদের হিটস্ট্রোক এড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে লিকুইড জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। বিশুদ্ধ পানির কোনো বিকল্প নেই। ডাবের পানি, ফ্রেশ জুস, ঠান্ডা শরবত এগুলোও পান করতে পারেন। ভাজাপোড়া, মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। লাইট ও হেলদি ফুড বেছে নিন যাতে হজমে সমস্যা না হয়। ব্যায়াম ভোরবেলায় করুন: তাপদাহ বিদ্যমান থাকলে ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ অবশ্যই সূর্যোদয়ের আগে বা খুব ভোরে করতে হবে। অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন: গরমের দিনগুলোতে অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। কারণ, অ্যালকোহল বা সুগার ড্রিংকগুলো শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার সৃষ্টি করে। অনেক সময় শরীরে লবণ বা মিনারেলস-এর ঘাটতি দেখা যায়। সেই সময়ের জন্য সবচেয়ে উপকারী হলো ওরস্যালাইন। রোগীর পরিস্থিতি খারাপ হলে মুখে খাওয়া সম্ভব না হলে শিরার মাধ্যমে দেওয়া হয়। কিন্তু হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের ক্ষেত্রে সবসময় এটা নিরাপদ নাও হতে পারে। কারণ, স্যালাইনের সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিন সঙ্গে সঙ্গেই। শিশু ও বয়স্কদের জন্য টিপস- সব বয়সী মানুষের ক্ষেত্রে হিটস্ট্রোক এক রকম হলেও, বয়স্ক ও শিশুদের প্রতি আলাদা নজর রাখা জরুরি। খেয়াল রাখতে হবে যেন তাদের শরীরে কোনভাবেই পানিশূন্যতা দেখা না দেয়। যেহেতু ১-২ বছর বয়সী শিশুরা নিজেদের শারীরিক অসুবিধাগুলোর কথা বলতে পারে না। তাই গরমের দিনে তাদের বার বার পানি বা শরবত দিতে হবে। শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি বাড়তে দেয়া যাবে না। তাদের খোলামেলা জায়গায় বা প্রচুর বাতাস আছে এরকম জায়গায় রাখতে হবে। শিশুদের মতো বয়স্কদের জন্যও খোলামেলা স্থান বাছাই করা উচিত। যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাদের শরবত বা মিষ্টি জুস না দিয়ে পানি, ডাবের পানি এগুলো দিতে হবে। এই গরমে আমি বা আপনি যেকোনো সময়ে হিটস্ট্রোক-এ আক্রান্ত হতে পারি। তৎক্ষণাৎ প্রতিরোধের বা মোকাবেলার উপায়গুলো জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই এই পরিস্থিতি থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারি।
গরমে হিট অফিসারের পরামর্শ
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়
ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার আগে যা যা করবেন
যে ৬ খাবারেই কমবে কোলেস্টেরল থেকে ডায়াবেটিস
ঠান্ডায় বাচ্চাকে ঘুমানোর সময় ভারী কিছু চাপা দিচ্ছেন, যা বলছেন চিকিৎসকরা
শীতের এবার কোনও ঠিকঠিকানা নেই। তাপমাত্রা কখন কি অবস্থায় থাকবে তা বোঝার যেনো কোন সুযোগই নেই। কখনও এক ধাক্কায় চারদিকে জমে যাওয়ার মতো ঠান্ডা, কখনও আবার এমন আবহাওয়া, গরম কালকেও হার মানায়। এ আবহাওয়ায় শিশুদের অবস্থা বেশ কাহিল। সর্দি-জ্বর লেগেই আছে। এমন সময় একেবারে সদ্যোজাত শিশুদের যত্নের সময় নানা রকম চিন্তায় থাকেন অভিভাবকরা। গোসল করানো থেকে গরম-জামা পরানো, নানা বিষয় নিয়েই বাড়ির বড়দের মনে থাকে বিভিন্ন চিন্তা। অনেক অভিভাবক জানেন না শিশুকে ঘুম পাড়ানোর নিরাপদ উপায় কী হতে পারে। অনেকেই আবার নানা রকম ভুলও করেন যা সদ্যোজাত শিশুদের জন্য অনেক বিপদেরও কারণ হতে পারে।  জেনে নিন বিষয়গুলো-  >> অনেকেই সর্দি-কাশিতে ওষুধ না দিয়ে গরম তেল মালিশ করেন। অভিভাবকদের অনেকেরই ধারণা, বুকে-পিঠে তেল মালিশ করে দিলে বুঝি সর্দি উঠে যাবে। না, তা একেবারেই নয়। এতে সর্দি কাশি ভালো হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও উপকার হয় না। >> যারা সরিষের তেল মাখাতে চান বাচ্চাকে, তাদের মনে রাখতে হবে, সব তেল শিশু শরীরের উপযুক্ত নয়। একবার বাচ্চার র‍্যাশ হয়ে গেলে কষ্ট কিন্তু কমার বদলে বেড়ে যাবে। >> প্রতিদিন গোসল করাতে না চাইলেও অল্টারনেটিভ দিনে শরীর স্পঞ্জ করা প্রয়োজন। একদম সদ্য জন্মানো শিশুকে প্রতিদিন গোসল করান অনেকেই। তবে নতুন মায়েরা সবসময় দক্ষভাবে সদ্যোজাতকে গোসল করাতে পারেন না। হালকা গরম পানি দিয়ে শিশুর গা স্পঞ্জ করা যেতে পারে।  >> লেপ-কম্বল চাপা দেওয়া যায় সদ্যোজাতকে? উত্তর হবে না। এতে খেয়াল না রাখলে যে কোন বিপদ ঘটতে পারে। কম্বল চাপা দিলে যদি বাচ্চার কষ্ট হয়, তাহলে সে তো মুখ ফুটে বলতে পারবে না। বরং লেপ, কম্বলের ভারে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। যাকে বলে সিট (SID : Sudden Infant Deaths)।  >> শিশুকে লেয়ারে পোশাক পরাতে হবে। অর্থাৎ বিশাল একটা মোটা কিছু না পরিয়ে একাধিক পোশাক স্তরে স্তরে পরানো যেতে পারে তাপমাত্রা অনুসারে। তাহলে কতটা ঠান্ডা পড়ল, তা ভেবেই বাচ্চাকে ভীষণ ভারী কিছু পোশাক বা জামার ওপর জামা পরিয়ে দেবেন না। >> যিনি শিশুর যত্ন করছেন তিনিই বুঝে নেবেন শিশুর কি শীত লাগছে নাকি মোটা মোটা জামাকাপড়ের নিচে সে ঘেমে গিয়েছে। তা বুঝে জামা পরাতে হবে বা খুলে দিতে হবে। 
ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে ক্ষতিগ্রস্ত লিভার-কিডনি
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অথবা নিজে ফার্মেসি থেকে কিনে অনেকেই শরীরের রোগ ভালো করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়া শুরু করে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া, অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স পূরণ না করা বা ছোটখাটো শারীরিক সমস্যার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার প্রবণতা মানুষের মধ্যেও প্রবল। তবে সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হলো এসব অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের পুরো কোর্স সম্পন্ন না করেই রোগীরা ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়। অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই শরীর থেকে রোগ মুক্তি ঘটে। অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধের ভুল এবং অসচেতন ব্যবহারের কারণে বিশ্বব্যাপী নিউমোনিয়া, যক্ষ্মার মতো রোগের চিকিৎসা প্রক্রিয়া ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিকের ভুল এবং অসচেতন ব্যবহারের কারণে এ জাতীয় ওষুধ কার্যকারিতা হারাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। চিকিৎসকরা বলছেন, রোগীর রোগ মুক্তি হয়ে যাওয়ার পরও অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের পুরো কোর্স পর্যন্ত ওষুধ খেয়ে যাওয়া উচিত। নয়তো শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে জন্ম নেয় ব্যাকটেরিয়া। যেভাবে বাড়ে জীবাণুর ক্ষমতা-  জীবাণু মেরে ফেলার জন্যই আমরা অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করি। কিন্তু এতে কোনো অনিয়ম হলে কিছু জীবাণু বেঁচে যায়। ওই অ্যান্টিবায়োটিকটিকে তারা চিনে রাখে, অ্যান্টিবায়োটিককে প্রতিহত করতে নিজেদের জিনগত পরিবর্তন করে, এতে করে জীবাণুটির পরবর্তী প্রজন্ম হয়ে ওঠে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী। অথচ নিয়ম মেনে ওষুধটি খেলে বাকি জীবাণুগুলোও মরে যেত, ক্ষমতাসম্পন্ন প্রজন্মেরও আর জন্ম হতো না। অন্যদিকে অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে দেহের উপকারি জীবাণুগুলোও হয়ে উঠতে পারে মারাত্মক ক্ষতিকর। হয়ে যেতে পারে মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (অনেক অ্যান্টিবায়োটিক–প্রতিরোধী), এক্সট্রিম ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (অল্প কিছু মূল্যবান অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া অন্য অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না) কিংবা প্যান ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (কোনো একটি অ্যান্টিবায়োটিক এককভাবে আর কার্যকর হয় না)। যিনি এ ধরনের মারাত্মক জীবাণুর দ্বারা সংক্রমিত, তার কাছ থেকে এ জীবাণু এমন কারও মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে, যিনি হয়তো অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে কখনোই অনিয়ম করেননি। এ কোন বিপদ- সব অ্যান্টিবায়োটিক সব জীবাণুর জন্য নয়। শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকগুলোকে ‘সংরক্ষিত’ রাখা হয় মারাত্মক সংক্রমণের জন্য। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী জীবাণুর নতুন নতুন প্রজন্ম এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে জীবন–মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা রোগীর জন্যও কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ছে। অন্য অনেক রোগীর জন্যও শক্তিশালী একাধিক অ্যান্টিবায়োটিকের সমন্বয় ব্যবহার করতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তাতেও সংক্রমণ পুরোপুরি সারছে না। এসব বাড়তি অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে লিভার বা কিডনি। আবার সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করার কারণেও জীবনসংশয়ে পড়ছেন রোগী। এসব মারাত্মক জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর হবে, এমন অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ভাবনও হচ্ছে না। এমনটা চলতে থাকলে সামনের দিনগুলো হয়ে উঠতে পারে আরও ভয়াবহ। ব্যাকটেরিয়া তো বটেই, ছত্রাক সংক্রমণের ক্ষেত্রেও ভুলভাবে অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ প্রয়োগের ফলে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ছত্রাকের প্রজন্ম। এখনি সচেতন হোন- ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিক–জাতীয় ওষুধ খাবেন না। নিবন্ধিত চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া যাবে না। ওষুধ বিক্রেতারাও অনেক ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ দেন। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক–জাতীয় ওষুধ ক্রয়বিক্রয় করা যাবে না। প্রয়োজন মনে করলে চিকিৎসক আপনার রোগের জন্য দায়ী জীবাণুটিকে চিহ্নিত করতে কালচার পরীক্ষা দেবেন। কালচার পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে সময় লাগে। ধৈর্য ধারণ করতে হবে। সরকারিভাবে সারা দেশে কালচার পরীক্ষার সুবিধা চালু করাও প্রয়োজন। অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শমাফিক নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধান মেনে চলুন। উপসর্গ প্রশমিত হলেও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক চালিয়ে যেতে হবে।  করণীয়- >>> শুধু রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ মতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে। >>> চিকিৎসককে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশন করার জন্য চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। >>> ওষুধের মাত্রা ও সেবনকাল মেনে চলতে হবে। >>> একজনের বেঁচে যাওয়া বা অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অন্যজন সেবন করবে না (রোগের লক্ষণ এক হলেও)। >>> সংক্রমণ প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা। >>> যেসব প্রতিষ্ঠানে অ্যান্টিবায়োটিকসমৃদ্ধ মাছের খাবার, পোল্ট্রি ফিড ব্যবহার করা হয়, তাদের বর্জন করা। >>> শুধু সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়ের পরই সঠিক মাত্রায় প্রয়োজনীয় জীবাণুরোধক ওষুধ প্রদান করতে হবে।
শীত থেকে মুক্তি পেতে খাবেন যে খাবারগুলো
কবজি ডুবিয়ে খানাপিনার জন্য একেবারে উপযুক্ত বলা যায় শীতের সময়কে। আর ঠান্ডায় এমন খাবার নির্বাচন করা উচিত, যা আমাদের শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে। আর এ খাবারগুলো বাড়ির রান্নাঘরেই কমবেশি সবসময় পাওয়া যায়। জেনে নিন নামগুলো- গুড়: এ খাবারটি একাধিক কৌশলে ব্যবহার করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, গুড়ের চা, গুড়ের ক্ষীর ইত্যাদি। গুড় হলো এমন খাদ্যসামগ্রী, যা শীতের দিনে বেশ গরম প্রকৃতির হয়। আবার গরমের দিনে গুড় ঠান্ডা প্রকৃতির হয়। ফলে দুই মৌসুমেই তা খাওয়া যেতে পারে।  স্যুপ: বিভিন্ন অসুস্থতায় মুরগির স্যুপ খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এটি ঠাণ্ডার সময় প্রদাহরোধী হিসেবে কাজ করে। স্যুপের প্রদাহরোধী এবং নিরাময়কারী গুণ আধুনিক আবিষ্কার নয়। বহু আগে থেকেই বিষয়টি মানুষের জানা রয়েছে। গোলমরিচ: শীতের দিনে গোলমরিচ খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি হতে পারে। এটা সর্দি আর কাশির মতো সমস্যাও দূর করে। এর পাশাপাশি গোলমরিচের কাড়া সেবন করলে ওজন কমে। লবঙ্গ: শীতের জন্য উপযোগী আরেকটি খাবার হলো লবঙ্গ। লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াস এবং অ্যান্টিসেপটিক-ধর্মী উপাদান। এই উপাদানগুলো বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করতে সক্ষম। ফলে সর্দি-কাশি থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। এ ছাড়াও শুকনো কাশি দূর করতে লবঙ্গ চা অতুলনীয়। কারণ লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। আর এই দুই উপাদান শুকনো কাশি নিরাময় করতে অত্যন্ত কার্যকর।
শীতে গরম পানিতে গোসলে ভয়ঙ্কর বিপদ
শীতের তীব্রতা কিছুটা কমলেও ঠান্ডা কমেনি। গত কয়েক দিন কুয়াশার দাপটও ছিল দেখার মতো। দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ টানা পাঁচ থেকে সাতদিন ধরে পাননি সূর্যের দেখা। রাজধানীতে কিছুটা সময়ের জন্য রোদের দেখা মিললেও দিনের অধিকাংশ সময়ই ছিল মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। মূলত, দমকা হাওয়া বা বৃষ্টি না হলে ঘন কুয়াশা সরবে না। আর কুয়াশা না সরলে রোদ এসে শীতের দাপটও কমাতে পারবে না। এমনতাবস্থায় শীতকাতুড়ে আর ঠান্ডাজনিত রোগ যাদের পিছু ছাড়ে না তাদের জন্য গোসল একটি বাড়তি বিড়ম্বনা। শীতে গোসল কষ্ট থেকে বাঁচতে গরম পানিতে আস্থা প্রায় সবার। তবে এটি যে শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, তা হয়তো জানেন না অনেকেই। চর্মবিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গরম পানি দিয়ে গোসল শরীরের জন্য কখনই ভালো কিছু বয়ে আনে না। নিয়মিত কেউ গরম পানিতে গোসল করতে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তারা জানান, গরম পানি দিয়ে নিয়মিত গোসল ত্বকের ফলিকলগুলোকে নষ্ট করে দেয়। পানি কুসুম গরম না হয়ে একটু বেশি গরম হয়ে গেলে তা আরও বিপজ্জনক। মাথায় অতিরিক্ত গরম পানির ব্যবহারে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া মস্তিস্কের ওপরে চাপ সৃষ্টি হয়।  রক্তচাপও বাড়িয়ে দেয়।   তারা জানান, অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করলে মুখে ব্রন হয়। অ্যাসিডিটির সমস্যা যাদেরও তাদেরকে গরম পানি পরিহার করতে পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। হৃদরোগবিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, যারা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন তাদের গরম পানি দিয়ে গোসল করা ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ গরম পানি কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের ওপর প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া গরম পানি দিয়ে গোসল করলে মানসিক বিষণ্নতায় ভোগা ব্যক্তিদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এসব কারণেই মাথায় ঠান্ডা পানির ব্যবহার করতে ও গরম পানি দিয়ে গোসলে অভ্যাস না করতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ৪-৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা কঠিন। এ ক্ষেত্রে টনসিল, সর্দি, কাশি প্রভৃতি বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয়।   সেজন্য অতিরিক্ত গরমও নয় আবার ঠান্ডাও নয় প্রত্যেককে কুসুম গরম পানিতে গোসল করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে শরীরের রক্ত চলাচলের বৃদ্ধি ঘটে এবং অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর হয়। শীতকালীন সর্দি-কাশি উপসর্গ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।  
শীতকালে মধু পানে মিলবে যেসব উপকারিতা
মধু এক বিচিত্র প্রাকৃতিক উপাদান। ফুলের মধ্যে থাকা মধু মূলত সংগ্রহ করে মৌমাছির দল। নিজেদের প্রয়োজনে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছির দল জড়ো করে মৌচাকে। তবে ফুল থেকে আনা একেবারে তরল টাটকা মধুর সঙ্গে মিশে যায় তাদের শরীর নির্গত কিছু যৌগ, উৎসেচক। তারপর সেই মৌচাক ভেঙে নিয়ে মধু সংগ্রহ করা হয়।সারাদেশে সুন্দরবনের মধুর অনেক চাহিদা রয়েছে। খাঁটি, প্রাকৃতিক মধুর অনেক গুণ। নিয়মিত মধু খেলে শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন হতে পারে।  দেখে নিন এক নজরে- চিনির বিকল্প হিসেবে দারুন কাজ করতে পারে মধু। ফলে স্বাদের পাশাপাশি স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। মধুতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস। যা কোষের ক্ষতি রোধ করতে সক্ষম, ফলে শরীরের উপকারি বন্ধু ব্লা যায় মধুকে। গলা ব্যথা, ছোটখাটো সংক্রমণ, ক্ষত সারিয়ে তোলার ক্ষমতা রয়েছে মধুতে। কারণ এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান। মধু খুব দ্রুত শক্তি জোগাতে পারে। বলবর্ধক হিসেবে মধু দীর্ঘদিন ধরেই পরিচিত।  হজমকারক হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে মধুর। শুধু তাই নয় বদহজম বা কোষ্ঠবদ্ধতার মতো সমস্যার সমাধানেও কার্যকর এই প্রাকৃতিক উপাদান। ভালো ঘুমের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে মধু। রাতে ঘুমোনোর আগে এক চামচ মধু খেলে ভালো ঘুম হয়। মধুতে রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন। এছাড়াও একাধিক খণিজ পদার্থও পাওয়া যায় এতে। প্রাণীজ এবং উদ্ভিজ্জ উপাদানের মিলনে এর মধ্যে নানা ধরনের উৎসেচকও মিশে থাকে। তাই সার্বিক ভাবেই স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে মধুর একটা গুরুত্ব থেকেই যায়। শুধু খেয়ে নয়, মধু ত্বকের জন্যও উপকারি। তাই ত্বক চর্চার ক্ষেত্রেও মধুর ব্যবহার ব্যাপক প্রচলিত।  হঠাৎ করে তাপমাত্রার অস্থিতিশীলতার কারণে শীতের শুরুতে অনেকেরই গলা বসে যায়, গলাব্যথা হয়। দিনে দুবার বিভিন্ন মসলা (আদা, এলাচি, দারুচিনি, লবঙ্গ, গোলমরিচ) পানিতে ফুটিয়ে মধু মিশিয়ে খেলে গলাব্যথা সেরে যায়। শীতকালে অনেকেরই শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। নিয়মিত রং চায়ের সঙ্গে কিংবা কুসুম গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন। শীতে ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ হয়ে যায়। এই শুষ্ক ত্বককে মসৃণ টান টান রাখতে চাইলে অ্যালোভেরার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে ভালো ফল পাবেন।