কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামের কাস্তলে অপরিকল্পিত খননের ফলে একটি খাল এখন নদীতে পরিণত হয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত গভীরতার জন্য দু’পারে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে পাকা ড্রেন, ফসলি জমি ও সড়কসহ কয়েকটি বসত ঘরের ভিটা মাটি বিলীন হয়ে গেছে। দ্রুত বালি ফেলে এই খাল ভরাট কিংবা ভাঙন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ না করলে বর্ষা মৌসুমে ভাঙন আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, বর্তমানে খালটি সরকারের বিএডিসি (ক্ষুদ্রসেচ) বিভাগের অধীনে। প্রায় দেড় বছর আগে বিএডিসি বিভাগের কাছে এটি খননের জন্য আবেদন করলে তা মঞ্জুর হয়। পরে উপরের অংশে খনন না করে গোঁড়ার দিকে অপরিকল্পিতভাবে খনন করেন তারা। সঙ্গে কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বরাদ্দকৃত সকল অর্থ উত্তোলন করে অসাধু মহলটি। অথচ, খাল খননের আবেদন বা খনন প্রসঙ্গে কিছুই জানেন না স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কিংবা জনপ্রতিনিধিরা। ভুক্তভোগী আরমান মিয়া জানান, তার বাড়ির প্রায় অর্ধেক ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। কোন দিন যেন বাকি অংশ ভেঙ্গে যায়। ফুল মিয়া নামে আরেকজন জানান, খননের পর থেকেই ভাঙন দেখা দেয়।
এ বিষয়ে কাস্তল ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম রন্টি জানান, খালটি পুনরায় খননের বা খালের কোনো প্রয়োজন নেই। এটি খননের পরেই এই ভাঙন দেখা দেয়। ফলে হুমকির মুখে পরেছে ফসলি জমি ও সড়কসহ ঘর-বাড়ি। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে বিএডিসিকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তারা পরিদর্শনে আসেননি।
অপরিকল্পিতভাবে খাল খনন অভিযোগ প্রসঙ্গে অষ্টগ্রাম বিএডিসি’র এসও রোকন জাহান মুঠোফোনে জানান, অপরিকল্পিভাবে না, নিয়মানুযায়ী খাল খনন করা হয়েছে। আসলে বর্ষা মৌসুমে পানির প্রবল চাপে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। লোক দেখানো খনন করে বরাদ্দের টাকা লুটপাট করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবেন না। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে অষ্টগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শহিদুল হক জেমস মুঠোফোনে জানান, তিনি এবং ইউএনওসহ কয়েকজন উপস্থিত থেকে এই খাল খনন কাজের উদ্বোধন করেছেন। কিন্তু ঠিকাদার ছিলেন না। এমন কি তার কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নেই বলেও দাবি করেন।
এছাড়া বিএডিসি’র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের লোকজন তদন্তে এসে লুটপাট অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি। ভাঙন ঠেকাতে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কিনা এর উত্তরে জানান, স্থানীয় এমপি রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের নির্দেশ আগামী বর্ষার আগে খালের ভাঙন ঠেকাতে বিএডিসি, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ এই তিন দপ্তর মিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
এসকে/এসআর/