পঞ্চগড় শহরের বানিয়াপট্টি এলাকায় কালভার্টের মুখে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। কালভার্টের সম্মুখে বর্গাকারে ৩০ ফুট জায়গায় সরকারি ড্রেনের মুখ বন্ধ করে প্রায় দুই শতাংশ জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চালছে। শ্রমিকরা বাঁশ-কাঠ ও রড সিমেন্ট দিয়ে ফাউন্ডেশনের পিলার তৈরির কাজ করছিল রাতদিন।
স্থানীয়রা জানান, পঞ্চগড় পৌরসভা এলাকার কামাতপাড়া, ইসলামবাগ, কায়েতপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকার পানি বানিয়াপট্টির এই কালভার্ট দিয়ে প্রবাহিত হয়ে করতোয়া নদীতে যায়। এমনিতেই বৃষ্টির পানি হলে কামাতপাড়া এলাকা জলাবদ্ধ হয়। যদি এই কালভার্টের মুখে ড্রেনের উপর স্থাপনা তৈরি হয় তাহলে পৌরসভা এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত জলাবদ্ধতা তৈরি হবে। বিভিন্ন দপ্তরে এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছে এলাকাবাসী।
বিষয়টি আমলে নিয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল হক বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উচ্ছেদ অভিযান চালান। যা শেষ হয় গভীর রাতে। এতে প্রায় কোটি টাকার জমি দখল মুক্ত করা হয়।
এ সময় বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ করাসহ স্থাপনা নির্মাণের জন্য সিমেন্ট দিয়ে তৈরি পিলার ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এর সঙ্গে সরকারি ড্রেনের জায়গা দখলমুক্ত করে পানি প্রবাহের গতিপথ পরিষ্কার করা হয়।
সদর উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, দীর্ঘ ৪০ বছরের কালভার্ট এর নালা বন্ধ করে দিয়ে স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে। স্থানীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন পঞ্চগড় সদর উপজেলার ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও পঞ্চগড় সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাসহ পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ গিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে। এতে বাধা দেয় প্রভাবশালী রফিজউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত এলাকাবাসী প্রশাসন এবং দখলদারদের মধ্যে হট্টগোল হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারে তত্ত্বাবধানে সেতুর মুখে তৈরিকৃত স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলা হয়।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল হক জানান, স্থানীয়রা পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। আমি নিজেই পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে অবৈধ দখলদারের হাত থেকে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের জমি এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে অভিযান পরিচালনা করেছি।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, পঞ্চগড় শহরের প্রাণকেন্দ্রে বানিয়াপট্টি এলাকার ওই কালভার্টের ভিতর দিয়ে পানি প্রবাহ চলমান রয়েছে। হঠাৎ করেই অবৈধ ভাবে পানির প্রবাহ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছিল। সেখানে স্থাপনা নির্মাণ করা হলে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হবে। অভিযান পরিচালনা করে দখলদার হটিয়ে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেখানেই সরকারের জমি দখল হবে, সেখানেই দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারণ দেশে আইন আছে, যত প্রভাবশালী দখলদার হোক সরকারের জমি দখল করে কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না।