অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার বীরগাঁও পাখিমারা হাওরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রামীণ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের যুবসমাজের উদ্যোগে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
‘নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চা করি, উন্নয়ন সম্ভাবনার সমাজ গড়ি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী প্রতিযোগিতায় রং-বেরঙের নৌকা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ঢুল মন্দিরার তালে তালে নেচে-গেয়ে বৈঠা টানেন বাইচালরা। জয়-পরাজয়ের দৌঁড়ে পানির ওপরে বাতাসের বেগে ছুটে চলা নৌকার নৈপুণ্য দেখে মুগ্ধ হন আগত দর্শনার্থীরা।
গ্রাম বাংলার শত বছরের গ্রামীণ বিনোদনের ধারা বজায় রাখতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দুপুরে গ্রামীণ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিরুল হুদা মুকুট। বীরগাঁও গ্রামের মুরব্বি হাজী তয়ফুর আহমদের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক শহীদনূর আহমেদের সঞ্চালনায় এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শংকর চন্দ্র দাস, আসাদুজ্জামান সেন্টু, সদস্য অমল কর, শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শীতাংশু শেখর সিতু প্রমুখ।
নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় সিলেট সুনামগঞ্জ অঞ্চলের ৭টি নৌকা অংশগ্রহণ করেন। একেকটি নৌকা লম্বায় ৬০ থেকে ৭০ হাত দৈর্ঘ্য এবং ৫০ থেকে ৮০ জন বাইচাল থাকেন।
প্রতিযোগিতা দেখতে সকাল ১০টা থেকে পাখিমারা হাওরে জড়ো হন হাজার হাজার দর্শনার্থী। দর্শকদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয় হাওরের চারপাশ। এই ধরনের আয়োজন অব্যাহত রাখতে আয়োজকদের প্রতি আহ্বান জানান আগত অতিথি ও দর্শনার্থীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল হুদা মুকুট বলেন, নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা গ্রামবাংলার ইতিহাস ঐতিহ্যের নিদর্শন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছে। সুস্থ বিনোদন চর্চায় এমন আয়োজনের প্রশংসা করে আগামীতে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।
নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে সলফ সোনার তরী, দ্বিতীয় স্থান বীরগাঁওয়ের বীর পবন এবং ধলমৈনশা স্বপ্নের তরী তৃতীয় স্থান অর্জন করে। পরে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন সংশ্লিষ্টরা।