চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষ, আওয়ামী লীগের ২৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ২৯ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) নগরের কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন মোহাম্মদ উল্লাহ নামে এক ব্যক্তি। মামলায় তিনি নিজেকে ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করেন।
আদালতের ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়টি মামলা হয়েছে। এর আগে হত্যা, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়াসহ আরও পাঁচটি মামলা হয়েছিল। এরমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি, হত্যার শিকার আইনজীবী আলিফের বাবা ও ভাই বাদী হয়ে দুটি মামলা করেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম জানান, ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৫০ জনের বিরুদ্ধে হামলায় আহত করার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর ও নগর আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক জহুর লাল হাজারী, নগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ, নগর যুব মহিলা লীগের নেত্রী ও সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক জিনাত সুহানা চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা সমীর কুমার দে, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রিপন কান্তি নাথ, ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাত আহমেদ, কাজী তানভীর প্রমুখ। মামলার বাকি আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মী।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ২৬ নভেম্বর একটি মামলা নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করার জন্য তিনি চট্টগ্রাম আদালতে আসেন। কাজ শেষে করে বাসায় ফেরার পথে আদালত ভবনের মূল ফটকে রঙ্গম কনভেনশন সেন্টারের সামনে দেখেন আসামিরা সশস্ত্র অবস্থান করছেন। একপর্যায়ে তারা বাদীকে ধাওয়া দিয়ে মারধর করতে থাকেন। একজন আসামি লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করলে হাত দেওয়ায় তা পিঠে লাগে। এতে পিঠ থেঁতলে যায়। একপর্যায়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। পরে বাদী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এ কারণে মামলা করতে দেরি হয়।
২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ২৬ নভেম্বর জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর চিন্ময় অনুসারীরা আদালতে বিক্ষোভ শুরু করে প্রিজনভ্যান আটকে দেয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর পুলিশি অ্যাকশনের পর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।
এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও চারটি মামলা হয়। পাঁচ মামলায় গ্রেপ্তার হন ৩৯ জন। এর মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ৯ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধাদানের মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামির জন্য ওকালতনামা দিলে আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর এপিপি নেজাম উদ্দীন।
আরটিভি/এএএ/এস
মন্তব্য করুন