জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রবেশপত্র আটকে রেখে বাধ্যতামূলকভাবে পিকনিকের চাঁদা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোর পিকনিক বা বার্ষিক বনভোজনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও মানবিক বিবেচনায় অনেক শিক্ষার্থীকে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেই টাকার জন্য তাদের চাপ দেওয়া হয়। এমনকি এই টাকার জন্য সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ফি দেওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলো প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের জন্য বনভোজনের আয়োজন করে থাকে। সেখানে শিক্ষার্থীদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা ধরা হয়। সেই টাকা অনেক শিক্ষার্থীরই সাধ্যের বাইরে থাকে। মানবিক বিবেচনার কথা বলে বিভাগগুলো সেই সময় চাঁদার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ছাড় দিলেও পরীক্ষার আগে সেই টাকা আদায়ের জন্য পরীক্ষার প্রবেশপত্র আটকে রাখা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান, পরিসংখ্যানসহ বেশ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা এমন অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, ভর্তি ও পরীক্ষার ফি পরিশোধ করলেও যেসব শিক্ষার্থী পিকনিকের চাঁদা দেয়নি তাদের প্রবেশপত্র বিভাগে আটকে রাখা হয়। অন্যদের প্রবেশপত্র দেওয়া হলেও পরীক্ষার ফি পরিশোধ করেও প্রবেশপত্র না থাকায় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার হলে ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়।
এদিকে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক বনভোজনে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে কি না, সে ব্যাপারে জানতে চাইলে মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আকরাম উজ্জামান বলেন, ‘এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কোনো শিক্ষার্থী যেতে চাইলে যাবে, না হলে যাবে না। সবার অংশগ্রহণের জন্য আমরা বলে থাকি’।
বনভোজনে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থী পিকনিকে গিয়েছিল এবং পিকনিক কমিটিতে যারা ছিল তাদের সঙ্গে কথা বলতে। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না বলেই তিনি ফোন কেটে দেন।
পরীক্ষার ফি পরিশোধ করার পরেও বনভোজনের টাকার জন্য বিভাগগুলো প্রবেশপত্র আটকে রাখতে পারবে কি না, সে ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রবেশপত্রের সঙ্গে শুধুমাত্র পরীক্ষার ফি’র সম্পর্ক। কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষার ফি পরিশোধ করলেই সে প্রবেশপত্র পাবে। কোনো জরিমানা বা বিলম্ব ফি তো সে তার সঙ্গেই দিয়ে দেয়। এর সঙ্গে অন্য কোনো ফি বা টাকার জন্য প্রবেশপত্র আটকে রাখার কোনো নিয়ম নেই। আমরা বিভাগগুলোকে প্রবেশপত্র দিয়ে দেই। তারা কেন আটকে রাখবে সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে কিংবা নিয়ম-নীতিমালায় বনভোজনের বাধ্যতামূলক কোনো নিয়ম আছে কি না জানতে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘এমন কোনো নিয়ম নেই।’