জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে সাময়িক বহিষ্কারের পর দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়ার এখতিয়ার রাখে কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ আলম স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অবন্তিকার মৃত্যুতে উপাচার্য সাদেকা হালিম ও কোষাধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
মৃত্যুর আগে অবন্তিকা তার সুইসাইড নোটে অভিযুক্ত করে যাওয়া সহপাঠী আম্মানকে সাময়িক বহিষ্কার ও দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশসহ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে সহায়তাকারী শিক্ষক দীন ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত ও প্রক্টরিয়াল বডি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
তবে এ বিজ্ঞপ্তিতে শুধুমাত্র নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, আদেশ নয় বলে জানিয়েছেন উপপরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ আলম।
তিনি বলেন, আমরা চাই দোষীদের আইনের আওতায় আনতে। প্রশাসনকে গ্রেপ্তারের জন্য অনুরোধ করেছেন উপাচার্য মহোদয়। আদেশ নয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়ার এখতিয়ার রাখে কি না এ প্রসঙ্গে জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক মো. তানভীর আহসান আরটিভি নিউজকে বলেন, কথাটি আসলে নির্দেশনা হবে না, এটা রূপক অর্থে বোঝানো হয়েছে। ওই সময় এমন একটা পরিস্থিতি ছিল যে, তড়িৎ সব করতে হয়েছে। সবকিছু পরিষ্কার করে বলতে গেলে অনেক বিষয় যুক্ত করতে হতো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আইনুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারের নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয় আইনে নেই। গ্রেপ্তারটা হলো আইনের বিষয়। তার পরিবার থেকে যদি মামলা করে তাহলে পুলিশ মামলা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে। প্রেস রিলিজে এটা দেওয়া ঠিক হয়নি। গতকাল রাতে আইন সংস্থার লোকজন ছিল, তাদের হয়তো বলেছে। এর বেশি কিছু নয়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ফাইরুজ অবন্তিকা কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। মৃত্যুর আগে এক ফেসবুক পোস্টে নিজের মৃত্যুর জন্য নিজের সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দীন ইসলামকে দায়ী করেছেন তিনি।