ঢাকাসোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যৌনপল্লী থেকে নায়িকা, অতঃপর মায়ের চক্রান্তে স্বামীর হাতে খুন

বিনোদন ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

শনিবার, ১০ মে ২০২৫ , ০২:৩৬ পিএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

ষাট ও সত্তরের দশকে তোলপাড় ফেলে দেন পাকিস্তানি চলচ্চিত্র অঙ্গনে লাহোরের নিষিদ্ধপল্লী থেকে উঠে আসা এক যৌনকর্মী। অল্পদিনের মধ্যেই তিনি দেশের সবচেয়ে দামী অভিনেত্রীর খেতাবও পেয়েছিলেন। তবে সেই সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। নিজের মায়ের চক্রান্তেই স্বামীর হাতে খুন হন তিনি। যে মৃত্যু আজও আলোচনায় শোবিজ অঙ্গনে। বলছিলাম অভিনেত্রী নার্গিস বেগমের কথা। 

বিজ্ঞাপন

এই অভিনেত্রীর জীবন দীর্ঘ না হওয়ায় ক্যারিয়ারও খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, মায়ের ষড়যন্ত্রের কারণে স্বামীর হাতে খুন হন এই অভিনেত্রী।

পাকিস্তানের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন নার্গিস। তার মা ছিলেন একজন যৌনকর্মী। আবার নাচেও পারদর্শী ছিলেন। ফলে ছোটবেলা থেকেই নাচ-গানে পারদর্শী হয়ে উঠেন নার্গিস। মুজরাতেও দক্ষ ছিলেন এই অভিনেত্রী। সময়ের সঙ্গে মায়ের পদচিহৃ অনুসরণ করেন নার্গিস। এক আসরে নার্গিসের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হন এক প্রযোজক। এরপর তাকে অভিনেত্রী হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেন তিনি। ১৯৬৪ সালে মুক্তি পায় তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘ইশরাত’।

বিজ্ঞাপন

এরপর শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেন নার্গিস। অধিকাংশ সিনেমায় আইটেম কন্যা রূপে পর্দায় ঝড় তুলেছিলেন। সেই সময়ে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া আইটেম কন্যা ছিলেন নার্গিস। ১৯৭১ সালে ‘কাসু’ সিনেমার শুটিং করতে গিয়ে প্রযোজক খাজা মাজহারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। ক্যারিয়ারের গ্রাফ তুঙ্গে থাকা অবস্থায় মাজহারকে বিয়ে করেন এই অভিনেত্রী।

বিয়ের পর স্বামী মাজহারের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন নার্গিস। মাজহার-নার্গিসের প্রেম পরিণয় পেলেও তা মেনে নেননি এই অভিনেত্রীর মা। কারণ নার্গিসই তার মায়ের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ফলে তৈরি হতে থাকে জটিলতা। তাছাড়া নার্গিসের মা চাইতেন না, তার মেয়ে পুরোনো পেশা ছেড়ে দিক। এরপর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র শুরু করেন নার্গিসের মা। অসুস্থ হওয়ার অভিনয় করেন তিনি। তারপর মেয়েকে খবর পাঠান। নার্গিস মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটে যান। মা তাকে বাধ্য করেন হীরামান্ডির অন্ধকার গলিতে থাকতে। নার্গিসের কাছে বারবার ছুটে যেতেন স্বামী মাজহার। মায়ের কথা, অসুস্থতার অভিনয় উপেক্ষা করতে না পেরে সেখানে পুনরায় বসবাস শুরু করেন নার্গিস।

এরপর একদিন মাজহার ছুটে যান নার্গিসের কোঠায়। বাড়ি ফেরার জন্য নার্গিসকে বারবার চাপ দেন। কিন্তু নার্গিস ফিরতে চান না। শুরু হয় বাকযুদ্ধ। মেজাজ হারিয়ে নার্গিসকে গুলি করেন তার স্বামী মাজহার। এ ঘটনায় আরো ৩ জন নিহত হন। একজন ছিলেন নার্গিসের চাচা, বাকি দুজন মিউজিশিয়ান। এ মামলা আদালতে গড়ায়। মাজহারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

নার্গিসের মৃত্যুতে কে খুনি, স্বামী নাকি মা- এই নিয়ে যৌক্তিক বিতর্ক কম হয়নি। ঘর-পরিবার চেয়েছিলেন নার্গিস, পেয়েওছিলেন। তবু স্থায়ী হয়নি কিছুই। সব পেয়েও সব হারান ললিউডের এই নায়িকা! 

বিজ্ঞাপন

সাম্প্রতিক সময়ে বলিউড নির্মাতা সঞ্জয় লীলা বানসালি নির্মিত করেন তার প্রথম ওটিটি সিরিজ ‘হীরামাণ্ডি’। এতে উঠে এসেছিল যৌনকর্মীদের রোজনামচা। হীরামাণ্ডি পরিচালকের কল্পনাপ্রসূত কোনো জায়গা নয়। বরং পাকিস্তানের লাহোরের নিষিদ্ধপল্লী থেকে উঠে আসা যৌনকর্মী নার্গিসের জীবন থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয় এটি। তারকাখচিত সিরিজটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল দর্শকমনে।

আরটিভি/এএ 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |