‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের শিল্পী এন্ড্রু কিশোর। ২০২০ সালের ৬ জুলাই পরপারে পাড়ি জমান এই কিংবদন্তি শিল্পী। জীবদ্দশায় ১৫ হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তার গাওয়া কালজয়ী গানের সংখ্যাও কম নয়।
এন্ড্রু কিশোর পৈতৃক ভিটা কোটালিপাড়ায় একটি প্রার্থনা কুঞ্জ করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা। তার শেষ ইচ্ছে আর পূরণ হয়নি।
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে এন্ড্রু কিশোর সস্ত্রীক কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের চিথলীয়া গ্রামের পৈতৃক ভিটায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। এ সময় তিনি তার পৈতৃক ভিটায় একটি ‘প্রার্থনা কুঞ্জ’ করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার কাকাতো ভাই পূর্ণদান বাড়ৈ।
পূর্ণদান বাড়ৈ বলেন, এন্ড্রু কিশোর আমার কাকাতো ভাই। তার পিতার নাম ক্ষিতিশ বাড়ৈ। এন্ড্রু কিশোররা ছিলেন ৩ ভাই-বোন। ৩ ভাই-বোনের মধ্যে এন্ড্রু কিশোর ছিল ছোট। তার বড় ভাইয়ের নাম স্বপন বাড়ৈ। বোন শিখা বাড়ৈ। আমার কাকা ক্ষিতিশ বাড়ৈর কর্মস্থল ছিল রাজশাহী। তিনি ওখানে চিকিৎসা পেশায় জড়িত ছিলেন। ওখানেই এন্ড্রু কিশোরের জন্ম। তবে তার বাবার জন্ম কোটালীপাড়ায়।
তিনি জানান, এন্ড্রু কিশোরের পিতা ক্ষিতিশ বাড়ৈ বরিশালে লেখাপড়া করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাস করে রাজশাহীতে কর্মজীবন শুরু করেন। তবে তিনি তার পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রতিবছরই কোটালীপাড়ায় বেড়াতে আসতেন।
সে সময় ওই উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান জানিয়েছিলেন, দেশের এই মহান সংগীত শিল্পীর পৈতৃক ভিটা কোটালীপাড়া। এটা সত্যিই কোটালীপাড়াবাসীর জন্য গর্বের। আমরা এই গুণী শিল্পীর স্মৃতি রক্ষার্থে কোটালীপাড়ায় একটি সংগীত একাডেমি বা সংগীত স্কুল স্থাপনের জন্য চেষ্টা করা হবে।
এন্ড্রু কিশোরের প্রয়াণের পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও, তার গান আজও একইভাবে প্রাসঙ্গিক। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার গানের আলোচনা, পুরনো ভিডিও ক্লিপের শেয়ার, এবং নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের কণ্ঠে তার গান পরিবেশনা—এসবই প্রমাণ করে যে, এন্ড্রু কিশোরের সংগীত আজও মানুষের হৃদয়ে কতটা গভীরভাবে প্রোথিত। তার সুর, তার কণ্ঠের যাদুতে তিনি চিরকাল বাংলা সঙ্গীত প্রেমীদের মনে বেঁচে থাকবেন।
আরটিভি/এএ/এস