• ঢাকা মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১
logo

জর্জ ফ্লয়েড হত্যা: বিক্ষোভে পুলিশের নির্মমতায় অবাক যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ০৬ জুন ২০২০, ১৯:১৩
George Floyd Videos of police brutality during protests shock US
বিবিসি থেকে নেয়া

আফ্রিকান আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চলা বিক্ষোভে পুলিশের নির্মমতার বেশি কিছু ভিডিও সামনে এসেছে। বাফেলোয় দুজন কর্মকর্তা একজন বয়স্ক শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তিদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়ার পর তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। খবর বিবিসির।

আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারীকে পেটাচ্ছে ও মরিচ গুড়া ছুঁড়ছে পুলিশ। এরপর ওই কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়াপোলিস পুলিশ।

মিনিয়াপোলিসে ফ্লয়েডের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর এসব ভিডিও সামনে আসে। এই শহরে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার হাতে নিহত হয়েছিলেন ফ্লয়েড।

ফ্লয়েডের হত্যার ঘটনাও ভিডিওতে ধরা পড়ে। এরপর ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং বর্ণবাদী বৈষম্য ও আফ্রিকান আমেরিকানদের ওপর পুলিশের আচরণের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়।

গত আটদিন ধরে চলা এই বিক্ষোভের বেশিরভাগই শান্তিপূর্ণ ছিল। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহিংসতা ও দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউজের বাইরে একটি বিক্ষোভে প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ মরিচগুঁড়ার বল এবং স্মোক বোমা নিক্ষেপ করে; যাতে করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিকটবর্তী একটি চার্চে ফটোঅপে অংশ নিতে পারেন।

ওই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, অ্যাটর্নি জেনারেল ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেছে নাগরিক অধিকার গ্রুপ আমেরিকা সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ)।

এসিএলইউ কর্মকর্তা স্কট মিশেলম্যানের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, যখন দেশের শীর্ষ আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা স্বৈরশাসকের কৌশলগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন, তখন আমাদের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে।

এদিকে ফ্লয়েডকে হত্যার দিনই (২৫ মে) ফোনিক্সে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন আরেকজন আফ্রিকান আমেরিকান ডিওন জনসন। অ্যারিজোনার পুলিশ ওই হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত প্রকাশ করেছে।

পুলিশ জানায়, সন্দেহভাজনের সঙ্গে ট্রুপারের ধস্তাধস্তি হয় এবং ট্রুপার সন্দেহভাজনকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে।

বাফেলোর ভিডিওতে দেখা যায়, কারফিউয়ের মধ্যে ৭৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি পুলিশের দিকে অগ্রসর হয়। পুলিশ তখন এগিয়ে আসে এবং তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এসময় ওই ব্যক্তি নিচে পড়ে যায় এবং তার মাথায় আঘাত লাগে।

মাটিতে পড়ে গেলে তার কান দিয়ে রক্ত বের হয়। পরে তাকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরীক্ষায় দেখা যায় যে, তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন।

বাফেলো পুলিশ বিভাগ প্রাথমিক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় নিচে পড়ে গেছে। পুলিশের এমন বিবৃতির পর সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষজন ক্ষোভ দেখাতে থাকে।

পরে পুলিশের মুখপাত্র জেফ রিনাল্ডো জানায়, যেসব পুলিশ কর্মকর্তা ওই ব্যক্তিকে ধাক্কা দিয়েছে তাদের বিনা বেতনে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারীকে লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে এবং তাকে মরিচের গুঁড়া মারা হচ্ছে এমন ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর ইন্ডিয়ানাপোলিস মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, তারা এটা খতিয়ে দেখছে।

অন্যদিকে ফিলাডেলফিয়ায় একজন পুলিশ কর্মকর্তার হাত ভেঙে দেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া এক শিক্ষার্থীকে কোনও অভিযোগ ছাড়াই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা ওই শিক্ষার্থীকে লাঠি দিয়ে মাথায় পেটাচ্ছে এবং আরেকজন তার চেহারা মাটির সঙ্গে তার হাঁটু দিয়ে চেপে রেখেছে। এমন ভিডিও প্রকাশ পাওয়ার পর পুলিশ ২১ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেয়।

নিউইয়র্ক শহরে কারফিউ শুরু হওয়ার ২৭ মিনিট পর একজন ফুড ডেলিভারি ড্রাইভারকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফুড ডেলিভারি কারফিউয়ের আওতামুক্ত থাকার পরও ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া শহরের উইলিয়ামসবার্গ এলাকায় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং অন্তত একজনকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন মাটিতে শোয়া অবস্থায় তার মাথা থেকে রক্ত বের হচ্ছে এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

এ/পি

মন্তব্য করুন

rtv Drama
Radhuni
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়