ঢাকাSaturday, 21 June 2025, 7 Ashaŗh 1432

বড় যানে হাইড্রোজেন ইঞ্জিন বসানোর উদ্যোগ

ডয়চে ভেলে

মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩ , ০৯:৪৫ এএম


loading/img
হাইড্রোজেন ইঞ্জিন বসানোর উদ্যোগ

ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়ির ক্ষেত্রে ব্যাটারির ব্যবহার বাড়লেও ট্রাক, বাস বা বড় আকারের যানের জন্য সেই প্রযুক্তি উপযুক্ত নয়। জ্বালানির বিপুল চাহিদা মেটাতে পারে হাইড্রোজেন। তার জন্য ইঞ্জিন ও অবকাঠামোর উন্নতির প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

গোটা বিশ্বে জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে। তাল মিলিয়ে জ্বালানি ও সম্পদের চাহিদাও বাড়ছে। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত পণ্য পাঠানো হচ্ছে। এর পরিণতি হিসেবে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন আরো বেড়ে যাচ্ছে।

পরিবহণ ক্ষেত্রকে সম্পূর্ণভাবে নির্গমনমুক্ত করার উদ্যোগ চলছে। ট্রাকে হাইড্রোজেন ইঞ্জিন বসানো কি সমাধানসূত্র হতে পারে? মালে মোটোর সিস্টেমস কোম্পানির ড. মার্কো ভার্ট বলেন, বিশেষ করে ভারি ট্রাকে হাইড্রোজেনচালিত কম্বাসচন ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে আমরা সুবিধা দেখতে পাচ্ছি। আমাদের মতে, যে সব ট্রাককে ভারি মালপত্র নিয়ে লাখ লাখ কিলোমিটার অতিক্রম করতে হয়, সেই যানে কম্বাসচন ইঞ্জিনই উপযুক্ত।

বিজ্ঞাপন

আসলে বিষয়টি কিন্তু খুব সহজ। প্রচলিত কম্বাসচন ইঞ্জিনে নতুন কিছু যন্ত্রাংশ বসিয়ে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহারের উপযুক্ত করা যায়। ডিজেল প্রযুক্তির ভিত্তিতেই সেই ইঞ্জিন চলে। শুধু এ ক্ষেত্রে কোনো নির্গমন ঘটে না। এভাবে ভবিষ্যতে ডিজেল ইঞ্জিন বাতিল না করে তাতে রদবদল ঘটানো সম্ভব।

পিস্টনের মতো বেশ কিছু যন্ত্রাংশে রদবদল করতে হয়। মালে কোম্পানির মতো যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী যুগের দাবি মেনে পরিবর্তন ঘটিয়ে হাইড্রোজেনচালিত ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ তৈরি করছে। এমন যন্ত্রাংশের চাহিদাও বেড়ে চলেছে। ডয়েৎস কোম্পানির মার্কো স্টেকেলবাখ বলেন, এটা একটা সাত দশমিক আট মাপের ডিজেল ইঞ্জিন, যা আমরা প্রস্তুত করেছি। ভিত্তিটা ভালো থাকায় আমরা সবকিছু একই রকম রেখেছি। সে কারণেই আমরা এই ইঞ্জিন বেছে নিয়েছি। শুধু হাইড্রোজেনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ যোগ করেছি। ভালো ভিত্তিকে হাইড্রোজেন ব্যবহারের খাতিরে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। হাইড্রোজেন ইঞ্জিন চালু করতে অনেক কম জ্বালানি লাগে। সে কারণে নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তির আরো বেশি প্রয়োজন হয়।

ইঞ্জিনের শক্তির সীমারেখা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ২০২৪ সাল থেকে নিয়মিত বড় আকারে উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমে নির্মাণের জায়গা বা হাসপাতালে জেনারেটরের ইঞ্জিন প্রস্তুত করা হবে। তখন হাইড্রোজেনের চাহিদা আরো বাড়বে। পরিবহণের ক্ষেত্রেও সেই প্রবণতা দেখা যাবে।

বিজ্ঞাপন

জার্মানির জাতীয় হাইড্রোজেন পরিষদের অনুমান অনুযায়ী ২০৫০ সাল পর্যন্ত চাহিদা আট গুণ বেড়ে যাবে। মালে কোম্পানির কর্ণধার আর্ন্ট ফ্রানৎস বলেন, রাজপথে হাইড্রোজেনচালিত ইঞ্জিনের প্রচলনের জন্য জ্বালানি ভরার পাম্পের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। আবার এমন গ্যাস স্টেশন লাভজনকভাবে চালাতে হলে যথেষ্ট সংখ্যক যানও পথে নামাতে হবে। কমপক্ষে ৪০০ সাধারণ গাড়ি সেখানে হাইড্রোজেন ভরলে মুনাফা হতে পারে। তবে সেই লক্ষ্য পূরণ করা কঠিন। কিন্তু মাত্র ২০টি ট্রাকই হাইড্রোজেন স্টেশনকে লাভজনক করার জন্য যথেষ্ট। বিশেষ করে নিয়মিত ট্রাক চলাচলের ক্ষেত্রে সেই লক্ষ্য পূরণ করা অবশ্যই সম্ভব।

বিজ্ঞাপন

গ্যাস স্টেশনে হাইড্রোজেনের দাম এখনো খুব বেশি। তবে অবকাঠামোর সম্প্রসারণ ঘটলে দাম কমার কথা। ১০০ কিলোমিটার অতিক্রম করতে সাধারণ গাড়ির এক কিলো হাইড্রোজেন লাগে। ১২ বছরের মধ্যে হাইড্রোজেনের দাম প্রায় অর্ধেক হয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা পূর্বাভাস দিচ্ছেন। অর্থাৎ ১৪ ইউরোর বদলে তখন ছয় ইউরো গুনতে হবে।

ডয়েৎস নামের ইঞ্জিন প্রস্তুতকারক কোম্পানি বাণিজ্যিক যানের জন্য প্রপালশন ইঞ্জিন তৈরি করে। যেমন ট্রাক্টর, কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত অন্যান্য যান বা ট্রেনে হাইড্রোজেন ইঞ্জিনের অনেক সুবিধা রয়েছে। কোম্পানির প্রতিনিধি মার্কুস শভানডারলাপ বলেন, আমার কাছে ৩০০ পিএস-এর মতো খুব বড় কোনো ইঞ্জিন থাকলে বহুকাল ধরে ভারি কাজে সেটিকে ব্যবহার করা যায়। অর্থাৎ এক্সকাভেটরের মতো যানে যন্ত্রটি উচ্চ কার্যক্ষমতায় চালানো হবে। বিশাল পরিমাণ জ্বালানির প্রয়োজন মেটাতে ব্যাটারির মাপ বাড়িয়ে যেতে হবে। কিন্তু এক্সকাভেটরের মতো বড় যানের ক্ষেত্রেও কোনো এক সময়ে আরো বেশি ব্যাটারি রাখার জায়গা থাকবে না।

ভবিষ্যতে হাইড্রোজেন ইঞ্জিন পরিবহণ ব্যবস্থা আরো পরিবেশবান্ধব করতে সাহায্য করবে। তবে একই সঙ্গে অবকাঠামোর প্রসারও ঘটাতে হবে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |