• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১
logo

অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়ার ফজিলত

আরটিভি নিউজ

  ৩০ জুলাই ২০২৪, ০০:০২
সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

অসুস্থতাও এক প্রকার নেয়ামত। এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, কেয়ামতের দিন বিপদগ্রস্ত লোকদের যে মহা পুরস্কার দেয়া হবে তা দেখে সুস্থতার অধিকারী লোকেরা কামনা করবে, হায়! দুনিয়াতে যদি তাদের দেহ কাঁচি দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করা হত আর তার বিনিময়ে আখেরাতের এ মহা পুরস্কার লাভ হত। (তিরমিজি ২৪০২)

ইসলামের দৃষ্টিতে কেউ অসুস্থ হলে সেবা-শুশ্রূষা ইত্যাদি পাওয়া তার অধিকার। রোগী ও অসুস্থকে দেখতে যাওয়া মহানবী (সা.)-এর সুন্নতও বটে। রোগীকে দেখতে যাওয়ার সময় তার খোঁজখবর নেয়া, প্রয়োজনে তার সেবাযত্ন করা এবং তার রোগমুক্তির জন্য দোয়া করার ফজিলত ও গুরুত্ব অপরিসীম।

কেয়ামতের দিন মানুষকে যেসব বিষয়ের জন্য আল্লাহ তাআলার সামনে জবাবদিহিতা করতে হবে তার একটি রোগীর সেবা না করা এবং এতে অবহেলা। এ বিষয়ে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন বলবেন, হে বনি আদম! আমি অসুস্থ ছিলাম। তুমি আমাকে দেখতে আসোনি। সে বলবে, হে আমার রব! আমি আপনাকে কীভাবে দেখতে যাব? আপনি তো বিশ্বজাহানের রব! আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ ছিল? তুমি তাকে দেখতে যাওনি। তুমি কি জানতে না যে, তুমি যদি তাকে দেখতে যেতে, আমাকে অবশ্যই তার কাছে পেতে।’ (মুসলিম ২৫৬৯)

আরেক হাদিসে আছে, হজরত আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা ক্ষুধার্তদের অন্ন দাও, রোগীদের সেবা করো এবং বন্দিদের মুক্তি দাও। (বুখারি ৫৬৪৭)

রোগীকে দেখতে যাওয়া ব্যক্তির জন্য জান্নাতে আবাসস্থল তৈরি করা হয়। ফেরেশতারা স্বয়ং এই সুসংবাদের কথা জানান। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোগীকে সেবা করতে যায়, আকাশ থেকে একজন আহ্বানকারী তাকে লক্ষ করে বলেন, তুমি মুবারক হও এবং মুবারক হোক তোমার এই পদচারণা। তুমি জান্নাতে নিজ আবাস তৈরি করে নিলে।’ (ইবনে মাজাহ ১৪৪৩)

রোগীর খোঁজ-খবর রাখার ফজিলতের বিষয়ে হাদিসে রসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘কোনো মুসলিম ব্যক্তি তার অসুস্থ মুসলিম ভাইকে দেখতে গেলে সে (যতক্ষণ তার কাছে অবস্থান করে ততক্ষণ) যেন জান্নাতের ফল আহরণ করতে থাকে।’ (তিরমিজি ৯০৯)

আলী (রা.) বলেন, ‘আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘কোনো মুসলমান অপর (অসুস্থ) মুসলমানকে সকালে দেখতে গেলে ৭০ হাজার ফেরেশতা সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকে। যদি সে সন্ধ্যাবেলা তাকে দেখতে যায়, তাহলে ৭০ হাজার ফেরেশতা ভোর পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকে এবং জান্নাতে তার জন্য একটি ফলের বাগান তৈরি করা হয়।’ (তিরমিজি ৯১১)

হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা যখন কোনো রোগীর কাছে যাবে, তার জীবন সম্পর্কে আনন্দদায়ক কথা বলবে, তাকে সান্ত্বনা দেবে। (এ সান্ত্বনার বাণী) ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাবে না, যা ঘটার তা-ই ঘটবে, কিন্তু তার মন সান্ত্বনা লাভ করবে। যা রোগীকে দেখতে যাওয়ার আসল উদ্দেশ্য। (তিরমিজি ২০৯৪)

রসুলুল্লাহ (সা.) রোগীকে দেখে একটি দোয়া পড়তে শিখিয়েছেন, দোয়াটি পড়লে আল্লাহ তাআলা ওই রোগ থেকে রক্ষা করেন। পাঠকারীকে নিরাপদ ও সুস্থ রাখেন। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী যে ব্যক্তি কোনো রোগীকে দেখে এই দোয়া পড়বে, ইনশাআল্লাহ সে ওই রোগে কখনো আক্রান্ত হবে না।

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي عَافَانِي مِمَّا ابْتَلاَكَ بِهِ وَفَضَّلَنِي عَلَى كَثِيرٍ مِمَّنْ خَلَقَ تَفْضِيلاً উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আ-ফানি মিম্মাবতালাকা বিহি, ওয়া ফাদদলানি আলা কাছিরিম মিম্মান খলাকা তাফদিলা।

অর্থ: সব প্রশংসা আল্লাহ তাআলার, তিনি তোমাকে যে ব্যাধিতে আক্রান্ত করেছেন, তা থেকে আমাকে নিরাপদ রেখেছেন এবং তার অসংখ্য সৃষ্টির ওপর আমাকে সম্মান দান করেছেন।

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দখলদারি ও চাঁদাবাজির অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে: টিআইবি
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে শফিক রেহমান
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ কয়েদির মৃত্যু
‘প্রতীকী বিষপান’ কর্মসূচিতে অসুস্থ হয়ে ১১ শিক্ষার্থী হাসপাতালে