সৎ ও সাহসী সাংবাদিক ছিলেন ইহসানুল করিম
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে কখনো আপস করেননি সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইহসানুল করিম। ৫২ বছরের সাংবাদিকতায় তিনি সৎ ও সাহসী সাংবাদিকতা করে গেছেন। চরম দুঃসময়েও নৈতিকতার সঙ্গে আপস করেননি। তার মৃত্যুতে সাংবাদিক জগতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব ম্যাস কমিউনিকেশন (আইআইএমসি) অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইমকাবিডি) আয়োজিত এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতারা। ইহসানুল করিম ছিলেন এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৭৯ সালে ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত আইআইএমসিতে বাংলাদেশ থেকে বৃত্তি নিয়ে যাওয়া প্রথম শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
ইহসানুল করিম গত ১০ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুর সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব ছিলেন।
ইমকাবিডির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজিজুল ইসলাম ভুইয়ার সভাপতিত্বে স্মরণসভায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, তার সাংবাদিকতার পথচলায় সাহস ও অনুপ্রেরণা দিয়েছেন ইহসানুল করিম। বন্ধুসুলভ আচরণ দিয়ে তিনি ছোট–বড় সব সাংবাদিকদের আপন করে নিতেন। তার মৃত্যুতে সাংবাদিকতা জগতে অপূরণীয় ক্ষতি হলো।
ইহসানুল করিম স্মরণে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত একটি স্মারকগ্রন্থ করার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক কিছু করার মাধ্যমে ইহসানুল করিমের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হবে।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভালো সাংবাদিকতার পাশাপাশি মানুষ হিসেবেও ভালো মানুষ ছিলেন ইহসানুল করিম।
স্মরণসভায় ইহসানুল করিমের ছেলে মঈন করিম বলেন, তিনি সাংবাদিক হিসেবে যেমন বিপদে–আপদে সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তেমনি পরিবারের প্রতিও ছিলেন যত্নশীল। তার বাবা সব সময় বলতেন, মানুষের জীবন এক রকম যায় না। যেকোনো পরিস্থিতি হাসিমুখে মেনে নিতে হয়। কখনো সততার সঙ্গে সমঝোতা না করার পরামর্শ দিতেন পরিবারের সদস্যদের।
ইমকাবিডির জ্যেষ্ঠ সদস্য ফরিদ হোসেন বলেন, একজন সাংবাদিকের মধ্যে যে ধরণের গুণাবলী থাকা প্রয়োজন তা ছিল ইহসানুল করিমের মধ্যে।
স্বাগত বক্তব্যে ইমকাবিডির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান বলেন, ইহসানুল করিম বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে তিনি কখনো আপস করেননি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সততা হৃদয়ে ধারণ করে সাংবাদিকতা করলে তাঁর প্রতি যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করা হবে।
স্মরণসভায় ইহসানুল করিমকে স্মরণ করে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, কূটনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ডিকাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ (বাদল), বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক, বাসসের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুর রহমান, বাসসের প্রধান বার্তা সম্পাদক সমীর কান্তি দে, বাসসের সাবেক ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মনোজ কান্তি রায় এবং ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি মো. শফিকুল করিম। ইহসানুল করিমের পরিবারের সদস্যেদর মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন তার চাচাতো বোন কঙ্কা করিম।
স্মরণসভায় কেন্দ্রীয় অ্যালামনাইয়ের শোকবার্তা পাঠ করেন ইমকাবিডির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম। সভা সঞ্চালনা করেন এটিএন নিউজের জ্যেষ্ঠ বার্তা সম্পাদক ও ইমকাবিডির সদস্য গনী আদম। সভায় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকসহ ইমকাবিডির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন