ঢাকামঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যাকাতের বিষয়ে কুরআনে বার বার গুরুত্ব দেয়া হয়েছে

হাফেজ মাওলানা মো. নাসির উদ্দিন

সোমবার, ০৪ জুন ২০১৮ , ০৬:৩৫ পিএম


loading/img

পবিত্র কুরআনে অসংখ্য স্থানে নামাজের সাথে যাকাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।আল্লাহ তাআলা নামাজ আদায় করাকে এবং যাকাত প্রদান করাকে একজন মানুষের খাঁটি মুসলমান হওয়ার আলামত হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

বিজ্ঞাপন

আল্লাহ তাআলা বলেন, এরপর যদি তারা (কাফেররা) তাওবা করে, নামাজ আদায় করতে শুরু করে এবং যাকাত দিতে শুরু করে তাহলে তাদের পথ ছেড়ে দাও। বাস্তবিক পক্ষেই আল্লাহ বড় ক্ষমাশীল এবং বড় অনুগ্রহকারী। (সুরা তাওবা,আয়াত:৫)

অন্য জায়গায় আল্লাহ এরশাদ করেন, এরা (কাফেররা) যদি তওবা করে, নামাজ আদায় করতে শুরু করে এবং যাকাত দিতে শুরু করে তাহলে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই হয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

আমি বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের জন্য বিধান সমূহকে খুলে বয়ান করে থাকি। (সুরা তাওবা,আয়াত:১১)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, যাকে আল্লাহ তাআলা সম্পদ দান করেছেন,কিন্তু সে এর যাকাত আদায় করেনি, কিয়ামতের দিন তার সম্পদকে টেটো মাথা বিশিষ্ট  বিষধর সাপের আকৃতি দান করে তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। সাপটি তার মুখের দুইপাশ কামড়ে ধরে বলবে,আমি তোমার সম্পদ,আমি তোমার জমাকৃত মাল। (বুখারী শরীফ,১৩২১)

যাকাতের মাধ্যমে একটি কল্যাণকর ও ইনসাফ ভিত্তিক সম্পদ বন্টন ব্যবস্থার অস্তিত্ব লাভ করে এবং এটি সমাজের স্বনির্ভরতা অর্জন দারিদ্র জনগোষ্ঠীর মৌলিক প্রয়োজনা পূরণ এবং  সোসাইটির প্রত্যেক সদ্যের জন্য সম্মানজনক জীবন-যাপনের সুযোগ সৃষ্টির একটি কার্যকর ব্যবস্থা।

বিজ্ঞাপন

নবী কারিম (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা তাদের উপর যাকাত অপরিহার্য রূপে নির্ধারণ করেছেন, যা তাদের সম্পদশালীদের নিকট থেকে গ্রহণ করা হবে এবং দারিদ্রদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। (মুসলিম শরীফ,১৯)

বিজ্ঞাপন

যাকাত প্রদান অনুগ্রহ নয় বরং সৌভাগ্য মুমিনের অবস্থা হল, সে যাকাত আদায় করতে পেরে এবং দরিদ্র মানুষেরা তার যাকাত গ্রহণ করেছে এজন্য সে আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করে এবং সে মনে মনে বলে হে আল্লাহ! আমি আপনার মহান একটি হুকুম আপনার দেয়া নির্দেশিত স্থানে আদায় করতে পেরেছি। শুধু শুকরিয়া আদায় নয়; বরং মুমিন বান্দা যাকাত আদায়ের পরে আনন্দ বোধ করে। পাশাপাশি দরিদ্র মানুষগুলোর প্রতিও কৃতজ্ঞ হয় যে, তারা তাকে এই ফরজটি আদায় করার এবং তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করার সুযোগ দিয়েছে। যাকাত দেওয়াকে করো প্রতি অনুগ্রহ বিবেচনা করার চিন্তাও মুমিনের মনে আসে না। কেননা যাকাত দেওয়ার মাধ্যমে কারো প্রতি অনুগ্রহ করা হয় না।

আল্লাহ তাআলা বলেন, তাদেরকে আল্লাহর সম্পদ থেকে দাও,যা তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন। (সুরা নুর,আয়াত:৩৩)

অন্য জায়গায় ইরশাদ হচ্ছে, তাদের সম্পদে নির্ধারিত হক রয়েছে প্রার্থনাকরীদের জন্য এবং বঞ্চিতদের জন্য। (সুরা মাআরিজ,আয়াত:২৪-২৫)

মুমিন বান্দাগণের বিশ্বাস হল এই যে, তারা ভাবে সম্পদের প্রকৃত মালিক আমি নই। আমি তা উপার্জন করেছি মাত্র; তাও আবার আল্লাহর দেওয়া মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে। আর এই মাধ্যমগুলো তো কত মানুষই ব্যবহার করেছে; কিন্তু সবাই তো সম্পদশালী হতে পারছে না। তাহলে বুঝা গেল, চেষ্টা-সাধনার পর সম্পদ লাভ হওয়া এটা বিশেষ ভাবে আল্লাহরই অনুগ্রহ। আল্লাহ তাআলা তার সম্পদের  প্রতিনিধি বানিয়েছেন। সুতরাং সম্পদ তার হুকুম মতই খরচ করতে হবে।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে আল্লাহর এই মহান হুকুম যাকাতকে সঠিকভাবে আদায় করার তাউফিক দান করুক।(আমিন)

এমকে       

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |