• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১
logo

প্যারিসের রোমান্টিকতা আজও কেন এত জলজ্যান্ত  

অর্পিতা জাহান

  ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:৩১

পৃথিবীর সবচেয়ে রোমান্টিক শহর কোনটি? এমন প্রশ্ন করলে বেশিরভাগ মানুষই বলবে প্যারিস। একটি নাম, তিনটি অক্ষর, আর তার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভালোবাসার অসীম সম্ভাবনা, অগণিত অনুভূতি, আর স্বপ্নের সমাহার। প্যারিস নামটি উচ্চারিত হলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে আইফেল টাওয়ার, সেন নদীর তীর আর প্রিয়জনের হাত ধরে হেঁটে চলার সেই চিরকালীন ছবি। কিন্তু কেন প্যারিসকে বলা হয় ‘ভালোবাসার শহর’? এর পেছনে লুকিয়ে আছে এক অনন্য ইতিহাস এবং সংস্কৃতির গল্প।

যদিও প্যারিসের বর্তমান পরিচিতি ‘ভালোবাসার শহর’, তবে এই শহরকে একসময় বলা হতো ‘আলোর শহর’। ১৮ শতকে, রাজা লুই চতুর্দশ প্যারিসের রাস্তাগুলোকে আলোকিত করেন, যা তখনকার দিনে ইউরোপের প্রথম প্রধান শহর হিসেবে আলোকিত হয়ে ওঠে। সেজন্যই প্যারিসকে ‘লা ভিলে লুমিয়ের’ বা 'আলোর শহর' বলা হত। তখন থেকেই প্যারিসের রাস্তাগুলো লেখক, দার্শনিক ও বুদ্ধিজীবীদের আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়। এভাবেই প্যারিস হয়ে ওঠে শিল্প, সংস্কৃতি, ও আলোর মেলবন্ধন।

কিন্তু প্যারিসের প্রকৃত খ্যাতি এসেছে তার রোমান্টিক পরিবেশ এবং শিল্পের সাথে ঐতিহাসিক সম্পর্কের জন্য। শহরের প্রতিটি কোণে রয়েছে প্রেম ও রোমান্টিকতার ছোঁয়া। ‘সেন’ নদীর ওপরের ৩৭টি ব্রিজের মধ্যে কিছু ব্রিজে দেখা মেলে ‘লাভ প্যাডলক’। প্রেমিক-প্রেমিকারা তাদের ভালোবাসার স্মৃতি ধরে রাখতে এই ব্রিজের রেলিংয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন, আর চাবিটি ফেলে দেন নদীতে। ভালোবাসার এই বিশেষ রীতিই প্যারিসকে আরও বিখ্যাত করেছে ‘ভালোবাসার শহর’ হিসেবে।

শুধু এখানেই থেমে থাকে না প্যারিসের সৌন্দর্য। শহরের অন্যতম আকর্ষণ হলো লুভ্যর মিউজিয়াম। এখানে লিওনার্দো দা ভিঞ্চির অমর সৃষ্টি মোনালিসাসহ আরও ৩ লাখ ৮০ হাজার শিল্পকর্ম সংরক্ষিত আছে। পুরো মিউজিয়ামটি দেখতে প্রতিটি দর্শনার্থীকে প্রতিটি শিল্পকর্মের সামনে মাত্র পাঁচ সেকেন্ড করে সময় দিলে প্রায় ১০০ দিন প্রয়োজন হবে!

প্যারিসের অলিগলিতে কিছু ভিন্ন ধাঁচের অভিজ্ঞতাও অপেক্ষা করে। যেমন শহরের বিভিন্ন স্টেশন, এয়ারপোর্ট আর রাস্তায় দেখা মেলে পিয়ানো, যেখানে সবাই ইচ্ছেমত পিয়ানো বাজাতে পারে। এই প্রজেক্টের নাম 'প্লে মি, আই’ম ইয়োরস'। এখানে প্রতিটি সুর যেন প্যারিসের সাথে মিলেমিশে এক হয়ে যায়।

রাতের প্যারিসের সৌন্দর্য আরও বেশি মুগ্ধ করে। সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরটি নানা রঙের আলোয় ঝলমলে হয়ে ওঠে। সেই নদী থেকে প্রতিফলিত মিটমিটে আলো শহরের স্মৃতিস্তম্ভগুলোকে সোনালি রঙে রাঙিয়ে তোলে। চাঁদের আলোয় নদীর তীরে হেঁটে চলার স্মৃতি বা ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের অনুভূতি যে কারো মনকে আবেগে ভরিয়ে তুলতে পারে।

প্যারিসের রোমান্টিকতা আর ভালোবাসার এই মেলবন্ধন আজও পর্যটকদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়। পৃথিবীর অন্যতম রোমান্টিক গন্তব্য হিসেবে প্যারিস তার ঐতিহ্য ধরে রেখে ভালোবাসার গল্প লেখার স্বপ্ন দেখায় প্রতিদিন।

আরটিভি/এফআই

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আগুনে পুড়ে ছাই প্যারিস হিলটনসহ হলিউড তারকাদের বাসভবন
পুরনো সব স্থাপত্যের আদলে নান্দনিক সব কেক
সূর্যমুখীর বাগান নয়, যেনো এক একটি জীবন্ত শিল্পকর্ম
প্যারিস ফ্যাশন উইকে দ্যুতি ছড়ালেন ঐশ্বরিয়া-আলিয়া