পুরনো সব স্থাপত্যের আদলে নান্দনিক সব কেক
কেক বলতে সাধারণত কী বুঝি? মিষ্টি স্বাদ, সুন্দর সাজ, আর জন্মদিনের মিষ্টি মুহূর্ত! কিন্তু ফিলিপাইনের লিপা শহরের জেরিয়েল এনকারনাডো কেকের ধারণাটাই বদলে দিয়েছেন। তার কেক দেখে মনে হয় যেন শিল্প প্রদর্শনীতে রাখা কোনো মাস্টারপিস। কেক নয়, যেন রংতুলির জাদু। আসুন, এই অসাধারণ শিল্পীর কেক তৈরির মন্ত্রমুগ্ধ জগতে ঢুকে পড়ি।
জেরিয়েল এনকারনাডো কেক সাজানোকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। তার মতে, কেক সাজানো আর চিত্রকলার মধ্যে বেশ মিল আছে। যেমন, চিত্রকর্মে তেল ও রং ব্যবহার করে ছবি আঁকা হয়, তেমনি কেকের সাজের জন্য খাবার তেল ও রং ব্যবহার করেন তিনি। তিনি বলেন, এই দুই শৈলী একত্রিত করে তিনি তৈরি করেন তার নিজস্ব শিল্পকর্ম।
করোনা মহামারির সময়, যখন সারা বিশ্ব ঘরবন্দি, তখন জেরিয়েলের হাতে ছিল অনেক ফাঁকা সময়। সেই সময়টা তিনি কাজে লাগালেন। সৃজনশীলতার দ্বার খুলে গেল তার সামনে। ছবি আঁকা, ভিজ্যুয়াল আর্টস আর কেকের পাইপিং ডিজাইন সবকিছুই মিশে গেল তার কেক তৈরির শৈলীতে। আর এই পথেই তিনি তৈরি করলেন এমন কেক, যা শুধুই মিষ্টি নয়, শিল্পের ছোঁয়া রাখে।
২০২০ সালে ইতালিতে তার প্রথম কেক ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড জেতা ছিল জেরিয়েলের জন্য একটি বড় অর্জন। কিন্তু থেমে থাকেননি তিনি। ২০২২ সালের আগস্টে ফিলিপাইন কুলিনারি কাপ (PCC)-এ ওয়েডিং কেক ক্যাটাগরিতে সোনার ট্রফি হাতে তুলে নিয়েছেলেন তিনি। তার তৈরি গথিক স্থাপত্যের মতো দেখতে কেক সবাইকে মুগ্ধ করেছে।
জেরিয়েল নতুনদের জন্য একটি বিশেষ পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, যারা কেক ডিজাইন করতে চান, তাদের উচিত নিজের জন্য একটু সময় বের করা। একা থেকে সৃজনশীলতা চর্চা করা, কারণ অন্যের মতামত কখনো কখনো মনোভাব ও কল্পনাকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই নিজেকে স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে হবে।
করোনা মহামারির অন্ধকার সময়েও জেরিয়েল এনকারনাডো খুঁজে পেয়েছিলেন আলোর এক বিন্দু, যা তাকে শিল্পের পথে নিয়ে গেছে। কঠোর পরিশ্রম ও অদম্য ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে তিনি কেকের জগতে তৈরি করেছেন এক অনন্য নাম। তার কেক শুধু মিষ্টির স্বাদ দেয় না, দেয় চোখের প্রশান্তি। এমন একজন শিল্পী, যিনি কেকের মধ্যে লুকিয়ে রাখেন শিল্পের সৌন্দর্য। কেকও যে হতে পারে শিল্পের ভাষা, তা যেন জেরিয়েলের হাতেই প্রমাণিত!
আরটিভি/এফআই
মন্তব্য করুন