অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে যাওয়া, ব্যভিচার ও মানহানির অভিযোগ করে ২০২১ সালে ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তামিমা তাম্মির সাবেক স্বামী রাকিব হাসান। সেই মামলা শুনতে বিচারক বিব্রত প্রকাশ করে অন্য আদালতে বদলির আদেশ দিয়েছেন।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে তাদের আত্মপক্ষ শুনানির দিন ধার্য ছিল। এদিন আদালতে হাজির হন নাসির ও তার স্ত্রী তামিমা। বেলা ১১টা ৫১ মিনিটের দিকে শুনানি শেষে এজলাস কক্ষ থেকে বের হন নাসির-তামিমা।
তখন গণমাধ্যমের তোপে মুখে পড়েন তারা। আদালতে তাদের মুখে কালো মাস্ক পরে ক্যামেরা থেকে মুখ লুকাতে দেখা যায়। স্ত্রীর সামনে এক প্রকার ঢাল হয়ে দাঁড়ান নাসির। এরপরও যখন গণমাধ্যমের ক্যামেরা থেকে নিস্তার নেই দেখে স্ত্রীর হাত ধরে জোরে হাঁটতে থাকেন নাসির।
কিন্তু গণমাধ্যমের ক্যামেরা থেকে তবুও রেহাই না পেয়ে আবারও থমকে দাঁড়ান তারা দুজন। পরে আবার পিছনের দিকে স্ত্রীর হাত ধরে জোরে হাঁটতে থাকেন। এ সময় নাসিরকে তার স্ত্রী তামিমা বলেন, ‘এভাবে যাওয়া যায় না। হাঁটব কীভাবে।’
নাসিরের সঙ্গে থাকা কয়েকজন সাংবাদিকদের ওপর বিরক্ত হন। পরে তামিমা সিএমএম আদালতের সিঁড়ি দিয়ে ও ক্রিকেটার নাসির সিজেএম আদালতের ভবনের দিকে দুজনকে দুদিকে যেতে দেখা যায়।
এদিন অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলু আদালতে দুটি আবেদন করেন নাসির-তামিমার পক্ষে। এর মধ্যে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইসরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে একটি আবেদন করেন। কারণ হিসেবে বলেন, এ মামলার বিচার চলছে।
বিচার শেষে আদালত রায়ের মাধ্যমে নির্ধারণ করবেন নাসির তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন কিনা এবং ব্যভিচারের সম্পর্ক করেছেন কি না। একই সঙ্গে আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলার পুরো অভিযোগ না শুনিয়ে সারসংক্ষেপ পড়ে শোনানোর আবেদন করেন।
এদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেন, আসামিপক্ষের আইনজীবী আগে বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেছেন। আইন অনুযায়ী তিনি এখন আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করতে পারেন না।
দুপক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত জানিয়েছে, উভয়পক্ষেরই আবেদন দেওয়ার অধিকার আছে। এটা একটা ব্যস্ত আদালত। এক মামলার শুনানি করতে যে ধৈর্য দরকার, এত সময় এই আদালতের নেই। এতে অন্য মামলায় ইফেক্ট পড়ে। আমি আসলে বিব্রতবোধ করছি। মামলাটা অন্য কোর্টে পাঠিয়ে দেই। এতে আপনারা কি নাখোশ হবেন? ’তখন আইনজীবীরা বলেন, এতে তাদের আপত্তি নেই।
তখন আদালত বলেন, ‘মামলাটা বদলি করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পাঠিয়ে দিচ্ছি। সিএমএম মামলাটি একটা অন্য কোর্টে পাঠিয়ে দেবেন।’ এর আগে গত ১৬ এপ্রিল মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলাটিতে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের আট বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তাম্মি পেশায় একজন কেবিন ক্রু। ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা রাকিবের নজরে আসে। পরে পত্র-পত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে সম্পূর্ণ জানেন। তারপরই নাসিরের বিরুদ্ধে মামলা করেন রাকিব।
আরটিভি/এসআর-টি