• ঢাকা রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
logo
সন্দ্বীপে ভাসুরের ছেলের বটির আঘাতে চাচি মৃত্যুশয্যায়
সিইসিকে চাটখিলে এসে ভোট প্রত্যক্ষ করার আহ্বান চেয়ারম্যান প্রার্থীর
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২১ মে। এ নির্বাচনে স্থানীয় প্রশাসন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাদের অতি উৎসাহী আচরণ ও ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের কারণে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে দাবি করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) সশরীরে চাটখিল এসে ভোটগ্রহণ প্রত্যক্ষ করার আহ্বান জানিয়েছেন আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জেড এম আজাদ খান। রোববার (১৯ মে) সকালে চাটখিল পৌরসভার নিজ বাসভবনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সিইসিকে এ আহ্বান জানান তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে জেড এম আজাদ খান জানান, তিনি নির্বাচনী কর্মকাণ্ড শুরু করার পর থেকে তার নির্বাচনী কর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।  হুমকির বিষয়ে রিটার্নি কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও থানা পুলিশে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি বলে দাবি করেন তিনি। এ প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, ‘দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী (বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান) জাহাঙ্গীর কবিরের পক্ষে থানার ওসি সরাসরি অবস্থান নিয়েছেন। যা তার কর্মকাণ্ডে প্রতীয়মান হচ্ছে। ওসি তার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন। যা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের পরিবেশে বাধা সৃষ্টি করছে।’  তাই অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে চাটখিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ইমদাদুল হকের অপসারণের দাবি জানান আনারস প্রতীকের এ প্রার্থী। এ দিকে চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে ওসির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে নির্বাচনের সময় তাকে প্রত্যাহার করা হবে।’
দুই বাংলাদেশিকে অপহরণ করেছে আরসা
রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণ ও এলাকার উন্নয়নের জন্য: জসিম উদ্দিন
লংগদুতে ২ জনকে হত্যার ঘটনায় ইউপিডিএফের অবরোধ
‘ন্যায়বিচার পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার’
নিখোঁজের ২১ ঘণ্টা পর মাদরাসাছাত্রের মরদেহ উদ্ধার 
চাঁদপুরের নতুন বাজার এলাকায় ডাকাতিয়া নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজের ২১ ঘণ্টা পর রায়হান কবির (১২) নামে মাদরাসা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।  শনিবার (১৮ মে) সকাল পৌনে ৮টা থেকে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে মাদরাসা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিস চাঁদপুর নৌ ইউনিটের ডুবুরি দল। রায়হান চাঁদপুর শহরের আলিম পাড়ার মো. লোকমান হোসেনের ছেলে।  সে নতুন বাজার আহমাদিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ফায়ার সার্ভিস চাঁদপুর নৌ ইউনিটের ইনচার্জ মুসলিম মিয়াজী বলেন, ‘রায়হানের পরিবারের লোকজন জানিয়েছে শুক্রবার (১৭ মে) বিকেল ৪টার দিকে শহরের নতুন বাজার লন্ডন ঘাট এলাকায় গোসল করতে গিয়ে সে ডাকাতিয়া নদীতে নিখোঁজ হয়। পরিবার থেকে রাত ১২টায় আমাদেরকে খবর দেওয়া হয়।’  তিনি বলেন, ‘আমরা শনিবার সকাল পৌনে ৮টা থেকে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ঘটনাস্থল ও আশপাশে চেষ্টা চালানোর পর আমাদের ফায়ার ফাইটার (ডুবুরি) মাইনুল ইসলাম মাদরাসাছাত্র রায়হানকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে রায়হান কবিরের মরদেহ তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।’
সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট পরিদর্শনে প্রধান বিচারপতি
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শীলখালি মৌজায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।  শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালিতে এ ইনস্টিটিউটের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেন তিনি।  এ সময় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যবৃন্দ, আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম, বিচারপতি আশফাকুল ইসলামসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি স্বল্প সময়ের মধ্যে ভূমি বরাদ্দ প্রদান করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এ ছাড়া তিনি এই কাজে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ভূমি উন্নয়নসহ সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। তিনি সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সফল বাস্তবায়নের জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন। পরিদর্শন শেষে আপিল বিভাগের মাননীয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম মোনাজাত পরিচালনা করেন।  প্রধান বিচারপতির পরিদর্শনের সময় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান, টেকনাফ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ সাফকাত আলী, টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি ও বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন উপস্থিত ছিলেন।
আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপ, মালিকসহ আটক ৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে চারজনকে আটক করেছে আখাউড়া থানা পুলিশ। শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরের দিকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম। আটকৃতরা হলেন উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের ছোট কুড়িপাইকা গ্রামের মৃত রেয়াছত আলী ভূইয়ার ছেলে ওই হোটেলের মালিক মো. জসিম উদ্দিন ভূইয়া (৪৩), পৌরসভার মসজিদপাড়ার ইউসুফ আলীর বাড়ির ভাড়াটিয়া কালু মিয়ার মেয়ে ও ইব্রাহিমের স্ত্রী রুমা আক্তার (২৫), সদর উপজেলার পাইকপাড়া এলাকার মৃত সাইফুল ইসলামের মেয়ে অনন্যা আক্তার (২৭) এবং কিশোরগঞ্জ সদরের চিকনিরচর গ্রামের মৃত আবুল বাশারের ছেলে মো. রঞ্জিত মিয়া (৩৫)। এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৌরশহরের সড়ক বাজারের ‘ভূইয়া রেস্ট হাউজ’ থেকে তাদের আটক করা হয়।  এ বিষয়ে ওসি নূরে আলম বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগেও গত ২৬ এপ্রিল অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ওই হোটেলের মালিক, খদ্দের ও যৌনকর্মীসহ ৭ জনকে আটক করেছিল থানা পুলিশ।
কুকি-চিনের নারী শাখার প্রধান সমন্বয়ক গ্রেপ্তার
পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) নারী শাখার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক আকিম বমকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। শুক্রবার (১৭ মে) বান্দরবানের লাইমী পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান। তিনি বলেন, ‘দেশে-বিদেশে সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকি-চিনের নারী শাখার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক আকিম বম। আকিম বম কেএনএফ বান্দরবান সদর ও রোয়াংছড়ি উপজেলা অঞ্চলের নারী শাখার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক।’  তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকিম বম জানান, ২০২০ সালের ডিসেম্বরের শুরুর দিকে আকিম ও মাইকেল সন্ধ্যা বেলায় পায়ে হেঁটে কেএনএ এর ট্রেনিং সেন্টারের উদ্দেশ্যে রওনা করেন এবং পরবর্তী দিন পর ভোর পাঁচটার দিকে তারা রোয়াংছড়ির গহীন পাহাড়ি জঙ্গলের ট্রেনিং সেন্টারে পৌঁছান। সেখানে একজন নারী কমান্ডারের সঙ্গে তাদের পরিচিত হন। ট্রেনিং সেন্টারে তাদেরকে স্বাগত জানান ওই নারী কমান্ডার। আকিম বমসহ তাদের ব্যাচে ২০ জন প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন। তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করতো ৪-৫ জন এবং প্রশাসনিক কাজের জন্য সেখানে আলাদা সদস্য নিয়োজিত ছিল।’ উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক চেওসিম বমকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।
ঘরে ফিরেছেন নাবিক বিপ্লব, আনন্দে আত্মহারা স্বজনরা
ফেনীর দাগনভূঞার বাসিন্দা নাবিক ইব্রাহিম খলিল বিপ্লব। ২৩ জন নাবিকের মধ্যে তিনি একজন। ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে লেখাপড়া শেষ করে বিগত চার বছর শিপিং কোম্পানিতে চাকরি করে সপ্তমবারের সফরে সোমালিয়া জলদস্যুর কবলে পড়েন বিপ্লব। একমাস পরেই বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান। মঙ্গলবার (১৪ মে) রাতে তিনি স্বজনদের কাছে ফিরে আসেন। তাকে পেয়ে পিতা মাতা, দুই ছেলে স্ত্রীসহ সবাই  যেন ঈদের আনন্দে মেতে আছেন। তিনি ফেনী শহরের নাজির রোডের ভাড়া বাসায় আছেন পরিবার নিয়ে।  বিপ্লব জানান, তাদেরকে যখন বন্দি করা হয়, তখন রমজান মাস। মুসলমান সম্প্রদায়ের লোক হওয়ায় তাদের প্রতি কিছুটা ধর্মীয় সহানুভূতি প্রদর্শন করা হয়েছে। থাকা খাওয়া ঘুমানো সবকিছু বন্দুকের নলের সামনে। আতংকের মধ্যে দিয়ে দিনাতিপাত। কোন প্রকার শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি। তবে মানসিক যন্ত্রণা, কষ্টের সীমা ছিলো না। দিনরাত আল্লাহর ভরসা করে নামাজ রোজার মধ্যে আমাদের নীরব কান্না। মা বাবাসহ সকলের দোয়া ও ভালোবাসা এবং সরকারসহ কোম্পানির সহযোগিতার মাধ্যমে দেশে ফিরে আসা। মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে শুকরিয়া, তিনি সুস্থ্যভাবে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে এনেছেন। এ ছাড়াও কোম্পানিসহ সবার সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিপ্লব। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি দাগনভূঞার মোমারিজপুর গ্রামে গিয়ে সবার সঙ্গে দেখা করে শুকরিয়া আদায় করবেন বলেও জানান নাবিক বিপ্লব। 
‘মনে হতো আর মায়ের কাছে ফেরা হবে না’
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সোমালিয়ান জলদস্যুদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত বাংলাদেশি ২৩ নাবিক দেশে পৌঁছেছেন। এমভি আবদুল্লাহর এই ২৩ নাবিকের বিষয়ে উৎকণ্ঠায় ছিল সারা দেশের মানুষ। ২৩ নাবিকদের বহন করা লাইটার জাহাজ মঙ্গলবার (১৪ মে) যখন বন্দরে পৌঁছায় তখন ছিল এক অভাবনীয় দৃশ্য। খুশিতে চোখের নোনা জল মুছেছেন নাবিকদের মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানরা। জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাখালিয়া গ্রামের বিনন বেপারী বাড়ির মৃত আজহার মিয়ার ছোট ছেলে ও জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান। বুধবার (১৫ মে) সকালে জানালেন নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। আইয়ুব খান বলেন, জলদস্যুদের কাছ থেকে আমাদেরকে রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক নোবাহিনী চেষ্টা চালিয়েছে। তখন জলদস্যুরা আমাদেরকে গান পয়েন্টে (অস্ত্র তাক) রাখত। আন্তর্জাতিক যুদ্ধ জাহাজ সরে না গেলে আমাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দিতো। দস্যুরা যখন আমাদের দিকে অস্ত্র তাক করে রাখত, তখন মনে হত এই বুঝি জীবন শেষ। আর বুঝি কখনো মায়ের কাছে ফেরা হবে না। তিনি বলেন, সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে থেকে প্রচণ্ড ভয়ে আমাদের দিন কাটাতে হয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি ভয় হয়েছে মাকে নিয়ে। কারণ, বাবাকে হারানোর একমাস পরই আমি বিপদে পড়েছি। এটি কীভাবে মা সহ্য করছেন তা নিয়েই সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা হয়েছিল। এখন আমি মায়ের কোলে ফিরেছি। এ আনন্দ সকল কষ্ট-সকল ভয় জয় করে নিয়েছে।  আইয়ুব বলেন, আক্রমণের পর জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ করতে বলে দস্যুরা। এরপর তারা আমাদেরকে সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যায়। প্রায় আড়াই দিন লেগেছে সোমালিয়ায় যেতে। প্রথম কয়েক আমাদের সবাইকে একটি রুমে আটকে রাখে। সবাইকে একই বাথরুম ব্যবহার করতে হয়েছে। দস্যুরাও আমাদের বাথরুম ব্যবহার করেছে। প্রথম কয়েক দিন তারা আমাদের খাবার খেয়েছেন। সোমালিয়ায় পৌঁছানোর পর তারা নিজেদের খাবার সংগ্রহ করে।  তিনি আরও বলেন, ঈদের দিন নামাজ পড়তে পারলেও আনন্দ ছিল না। কারণ বন্দিদশা থেকে কবে মুক্ত হবো তা নিয়েই দিন গুণতে হয়েছে আমাদের। একজন দোভাষীর মাধ্যমে আমরা জানতে পারি- জলদস্যুরা জাহাজ মালিকের সঙ্গে কথা বলেছে। মুক্তিপণ নিয়ে জাহাজ মালিকদের সঙ্গে দস্যুদের সমঝোতা হয়েছে। মুক্তিপণ দিলেই নাবিকরা মুক্তি পাবে। ঈদুল ফিতরের ২-৩ দিন পর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মুক্তিপণের ডলারের ব্যাগ জাহাজে ফেলা হয়। এরপর টাকা নিয়ে ভাগ হয়ে যায় জলদস্যুরা। তিনভাগে জাহাজ ছাড়ে দস্যু বাহিনীরা। মঙ্গলবার (১৪ মে) চট্টগ্রাম বন্দরে এসে আত্মীয়-স্বজনদের দেখে মন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। যে ঈদ আমরা আতঙ্কে কাটিয়েছি। পরিবার-স্বজনদের পেয়ে সেই ঈদ আনন্দ আবার আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে।  আইয়ুবের বড় ভাই ওমর ফারুক রাজু বলেন, দস্যুদের আক্রমণের প্রায় এক মাস আগেই বাবা মারা যান। সেই শোক না কাটতেই আইয়ুবসহ ২৩ নাবিক সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে। এতে পুরো পরিবারের ওপর অমাবস্যার অন্ধকার নেমে আসে। তার ফিরে আসা সবার জন্য আনন্দের।  প্রসঙ্গত, ৩৩ দিনের মাথায় ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়। এরপর জাহাজটি প্রথমে আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে পণ্য খালাস শেষে আরেকটি বন্দর থেকে চুনাপাথর বোঝাই করে চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়েছিল জাহাজটি। এ হিসেবে আমিরাত থেকে ১৩ দিনের মাথায় জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছাল। কেএসআরএম গ্রুপ জানায়, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে ৫৬ হাজার টন পণ্য চুনাপাথর রয়েছে। এতে প্রায় ১৯০ মিটার লম্বা জাহাজটির ড্রাফট (জাহাজের পানির নিচের অংশের গভীরতার পরিমাপ) বেড়ে হয়েছে সাড়ে ১২ মিটার। জাহাজটির ড্রাফট বেশি থাকায় কুতুবদিয়ায় প্রথমে কিছু পরিমাণ পণ্য খালাস করে। এরপর পতেঙ্গার কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরে বন্দর জলসীমায় আনা হয়। সেখানে বাকি পণ্য খালাস করা হবে। এ জন্য দেশে পৌঁছার পরও নাবিকদের ঘরে ফিরতে একটু সময় লেগেছে। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের চেষ্টায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা।