ইট-পাথরকে বালিশ বানিয়ে কুকুরের পাশেই ঘুমায় তারা

মোহাম্মদ সায়েম

শনিবার, ১১ মে ২০২৪ , ১০:৪৩ পিএম


যে বয়সে শিশুদের বাবা-মায়ের আদর স্নেহে বেড়ে ওঠার কথা, সেই বয়সে তারা রাস্তায়। শহরের অলিগলি, ফ্লাইওভার কিংবা মেট্রোরেলের নিচের সড়কদ্বীপে তাদের আবাস। এই শহরের অধিকাংশ বাবা-মা যখন তার সন্তানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা বড় কোনো পেশাদার বানাবেন, তখন এসব শিশু দারিদ্র্যতার নির্মম বাস্তবতার শিকারে পড়ে থাকেন রাস্তার পাশে। 

বিজ্ঞাপন

এদের বড় অংশই শিশুশ্রমিক, টোকাইয়ের কাজ কেউবা আবার ভিক্ষাবৃত্তি করে ক্ষুধা নিবারণ করেন। এর মধ্যে কিছু শিশু বেছে নিয়েছে ফুল বিক্রি, প্লাস্টিক সংগ্রহ করারসহ বিভিন্ন পরিশ্রমের কাজ। মাথার নিচে বালিশের বিপরীতে ইট-পাথরের কংক্রিটের ওপরেই তাদের নিদ্রা। রাজধানীর সড়কদ্বীপগুলোতে হরহামেশাই দেখা মেলে এসব পথ শিশুর। কখনও আবার দেখা যায় কুকুরের পাশেই নির্ভয়ে শুয়ে থাকতে।  

এদিকে, মাদক পরিবহন, বিক্রি ও সেবনের কাজে ব্যবহার করা হয় পথশিশুদের এবং ধীরে ধীরে ধাবিত হয় ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিডিএস) জরিপ অনুযায়ী, ঢাকার পথশিশুদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ রাতে ঘুমানোর কোনো বিছানা নেই, কর্মক্ষেত্রে ৮৪ শতাংশ শিশু সহিংসতার শিকার, যার মধ্যে ৩১ শতাংশ শিশু আঘাতের শিকার, ৪৯ শতাংশ টয়লেট সুবিধা বঞ্চিত ও ৭৮ শতাংশ শিশু অসুস্থতায় সরকারি হাসপাতালের সেবা নিতে পারে না।   

দারিদ্র্যতা ও বাবা মায়ের একাধিক বিয়ের ফলে পরিবারে লাঞ্ছনার শিকার এবং ২৭ শতাংশ শিশু মা অথবা বাবা মারা যাওয়াসহ দারিদ্র্যতার কারণে রাস্তায় চলে আসে। এ জন্য শুধু রাষ্ট্র নয়, রয়েছে সামাজিক দায়বদ্ধতাও।

সেভ দ্য চিলড্রেনের শিশু সুরক্ষা ও অধিকারবিষয়ক পরিচালক আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, রাস্তার এসব শিশুদের পুনর্বাসন করে কর্মমুখী শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে গড়ে তোলা গেলে তারা ফিরে পাবে স্বাভাবিক জীবন। নিশ্চিত হবে মৌলিক অধিকার।

বিজ্ঞাপন

পথশিশুদের জীবনমান উন্নয়নে সরকার কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission