‘চিকিৎসক হতে চেয়েছিল জুবায়ের, খুনিরা সব শেষ করে দিলো’
রাজধানীর মিরপুরে সহপাঠীর বাসা থেকে জুবায়ের হাসান রাফিত নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৬ জুলাই) মিরপুর কমার্স কলেজের পাশের স্টাফ কোয়ার্টারের তৃতীয় তলা থেকে তার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, মিরপুর কমার্স কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস ক্যাপ্টেন ছিলেন জুবায়ের হাসান রাফিত। এক মাস আগে শ্রেণিকক্ষে এক সহপাঠীকে মারধর করছিল খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত এবং রাফিতের সহপাঠী রাজিন ইকবাল (সানি)। ক্লাস ক্যাপ্টেন হিসেবে এগিয়ে যায় জুবায়ের, ফলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় রাজিন। এরপর জুবায়ের বিষয়টি শিক্ষকদের জানালে কলেজ কর্তৃপক্ষ রাজিন ও তার বাবা ইকবাল চৌধুরীকে ডেকে সতর্ক করেন। এ ঘটনার জের ধরে শনিবার কমার্স কলেজের পাশে স্টাফ কোয়ার্টারের তৃতীয় তলায় জুবায়েরকে ডেকে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে রাজিন ও তার বাবার বিরুদ্ধে।
মিরপুর এলাকায় মামা মো. নুরুজ্জামানের বাসায় থেকে পড়ালেখা করত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের নিহত জুবায়ের। তিনি বলেন, জুবায়ের শনিবার সকাল ১০টার দিকে বাসা থেকে কোচিংয়ে গিয়েছিল। বেলা ৩টার দিকে তার ফেরার কথা ছিল। কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে গেলেও বাসায় না ফেরায় বিভিন্ন জায়গায় তিনি খোঁজাখুঁজি করেন। পরে সন্ধ্যায় কলেজের এক শিক্ষক ফোন করে তাকে জানান, জুবায়েরকে হত্যা করা হয়েছে। কমার্স কলেজের স্টাফ কোয়ার্টারের তৃতীয় তলায় তার ভাগ্নের রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, এক বন্ধুকে নিয়ে কলেজের কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে জুবায়েরের ঝগড়া হয়েছিল। জুবায়ের ক্লাসের ক্যাপ্টেন ছিল। তার ভাগ্নে বিষয়টি শিক্ষকদের জানানোর কারণে রাজিন ক্ষিপ্ত হয়। পরে জুবায়েরকে পায়ে ছুরিকাঘাত করে আহত করে রাজিন। কিন্তু ভয়ে বিষয়টি তাকে বলেনি জুবায়ের। শনিবার যখন বাসায় ডেকে নেয়, তখন রাজিনের বাবা ইকবাল বাসায় ছিলেন। রাজিনের সঙ্গে তার বাবাও এই খুনের সঙ্গে জড়িত।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের পাশে বসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মামা নুরুজ্জামান বলেন, ‘জুবায়েরের স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবে। কিন্তু খুনিরা সব শেষ করে দিয়েছে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের দারুস সালাম অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (এসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘দুই সহপাঠীর ঝগড়ার জেরে রাজিন জুবায়েরকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।’
তিনি বলেন, যেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেই বাসায় রাজিন ও তার বাবা ছিলেন। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক।’
শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবার থানায় এসেছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
মন্তব্য করুন