সুনামগঞ্জের হাওরে হাওরে ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ধান মাড়াইয়ের পর শুকানোসহ প্রক্রিয়াজাত করণের যাবতীয় কাজ করছেন কৃষাণীরা। এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় হাওর পাড়ে ঈদের আনন্দ বিরাজ করছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফসল ঘরে উঠবে বলে জানিয়েছেন কৃষরা। হয়রানি ছাড়া ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন হাওর পাড়ের চাষিরা। তবে বরাবরের মতো কৃষককে প্রাধান্য দিয়ে সরকারিভাবে কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা খাদ্য বিভাগ।
বোরো প্রধান জেলা সুনামগঞ্জে এবার ২ লাখ ২৩ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে বোরো ধান। ফলন ভালো হওয়ায় আবাদকৃত জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। যা চালের দিক দিয়ে উৎপাদন ধরা হয়েছে ৯ হাজার মেট্রিকটন। এদিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দ্রুত সময়ে ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সুনামগঞ্জের কৃষক-কৃষাণীরা। এ পর্যন্ত জেলার হাওর অঞ্চলের প্রায় ৪৭ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আর সপ্তাহ দশদিন পরিবেশ অনুকূলে থাকলে নিরাপদে ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আকবর আলী নামে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের এক কৃষক বলেন, এবার ফলন ভালো হয়েছে। তবে ধান রোপণ, কাটা, মাড়াই ও খলায় নিয়ে আসতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। যদি ধানের দাম ভালো না পাই তাহলে লাভবান হওয়া যাবে না। হাবিজুর রহমান নামে আরেক কৃষক বলেন, সরকার প্রতি বছরই ধান ক্রয় করে। ধান নিয়ে গেলে নানা হয়রানির স্বীকার হতে হয় আমাদের। দালাল, ফরিয়াদের খপ্পরে পড়ে ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. ফরিদুল হাসান বলেন, হাওর অঞ্চলে প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি ধান কাটা শেষ। কৃষকরা দ্রুত ধান কাটছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা নিরাপদে ধান ঘরে তুলতে পারবেন। কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে সরকার ধান ক্রয় করবে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নকীব সাদ সাইফুল ইসলাম বলেন, সরকার কৃষি খাতে গুরুত্ব দিচ্ছে। বরাবরের মতো এবারও কৃষক ও কৃষিকে গুরুত্ব দিয়ে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করবে সরকার। আশা করছি সপ্তাহখানেক সময়ের মধ্যে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা আমাদের জানানো হবে। নির্দেশনা পাওয়ার পর ধান ক্রয় শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।
এসআর/