সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে গ্রাম্য শিরনির আয়োজনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনার পর আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বোরো জমির কাঁচা ধান গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের ঠাকুরভোগ গ্রামের পূর্বপাশের ‘কাউয়াজুরি’ হাওরের গুপুরগোলা স্থান থেকে প্রতিপক্ষের কাঁচা বোরো ধান কেটে নেওয়া ও গরু দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার ও গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঠাকুরভোগ গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নূর মিয়া ও তার মামাতো ভাই সিলেট জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি শিহাব খান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সুফি মিয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদাল মিয়ার লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি ‘গবাদিপশু যাতে রোগবালাই থেকে রক্ষা পায়’ এজন্য গ্রাম্য শিরনির আয়োজন নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। অভিযোগ উঠেছিল, বিএনপির সমর্থকেরা আওয়ামী লীগের সমর্থকদের আয়োজনে যুক্ত না করায় উত্তেজনা থেকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বেশ কয়েক জন আহত হয়। এই ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেন দুইপক্ষ। পুলিশ উভয়পক্ষের ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে। এর জের ধরে বিএনপি নেতা নূর মিয়া ও শিহাব খানের লোকজন প্রতিপক্ষ সুফি মিয়া ও আবদাল মিয়ার পক্ষের শিবলু মিয়ার প্রায় দেড় বিঘা বোরো জমির কাঁচা ধান কেটে নিয়ে গেছে। গরু দিয়েও কিছু ধান খাওয়ানো হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত শিবলু মিয়া বলেন, আমাদের অনেকেই গ্রেপ্তারের ভয়ে ঘরবাড়ি ছাড়া। আমিও গতকাল পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলাম চিকিৎসার জন্য। নূর মিয়া ও শিহাব খানের লোকেরা আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। এখন হাওর থেকে কাঁচা বোরো ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে। প্রায় দেড় কিয়ার (৩০ শতক) জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে। গরু দিয়েও কাঁচা ধান খাওয়ানো হচ্ছে। কাঁচা ধান নষ্ট করে আমার প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি করেছে।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নূর মিয়াকে বেশ কয়েক বার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ করেননি। অভিযোগের মিথ্যা দাবি করে ছাত্রদল নেতা শিহান খান বলেন, হাওরে কাঁচা ধান কাটার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। হয়তো কারো গরু ধান খেয়েছে বা হাওরে ঘাস কাটতে যাওয়া লোকেরা ধান কেটে নিয়ে গেছে। আমাদের কেউ তাদের কাঁচা ধান কেটে আনেনি। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকরাম আলী বলেন, ঠাকুরভোগ গ্রামের মসজিদের টাকাসহ নানা বিষয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধের জেরে গেল মাসে মারামারি হয়েছে। দুইপক্ষ থানায় মামলা দায়ের করেছে। উভয়পক্ষের কিছু মানুষ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন, আবার কেউ কেউ পলাতক আছেন। প্রতিপক্ষের লোকজন হাওর থেকে বোরো জমির কাঁচা ধান কেটে নেওয়ার বিষয়ে কেউ জানায়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরটিভি/এএএ